কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার অনুষ্ঠানে এসে যে এমন প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে, তা বোধ হয় ভাবেননি অরুণ জেটলি। কিন্তু সেটাই হলো।
আজ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার এক সভায় জেটলিকে বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। বক্তৃতার পরেই প্রাক্তন গোয়েন্দা কর্তা রাজেন্দ্র কুমার জেটলিকে সরাসরি প্রশ্ন করেন, ‘‘কেন নিরাপত্তা বাহিনীর অফিসার, বিশেষত গোয়েন্দা অফিসারদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য নিশানা করা হবে? কেন তাঁদের জন্য কোনও আইনি সুরক্ষার ব্যবস্থা থাকবে না?’’ ২০০৪ সালে গুজরাতে ইশরত জহাঁ ভুয়ো সংঘর্ষ মামলায় এই রাজেন্দ্র কুমারের বিরুদ্ধেই অভিযোগ এনেছিল সিবিআই। ইউপিএ-জমানায় এই নিয়ে সিবিআইয়ের সঙ্গে গোয়েন্দা বাহিনীর রীতিমতো দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল। এই মামলাতেই নাম জড়ায় নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের। রাজেন্দ্র কুমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনিই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনীর তরফে গুজরাত পুলিশকে তথ্য দিয়েছিলেন যে, ‘লস্কর-জঙ্গি’ ইশরত জহাঁ এবং তার সঙ্গীরা তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মোদীকে খুনের পরিকল্পনা নিয়ে আমদাবাদে ঢুকেছে। গোয়েন্দা বাহিনীর পাল্টা যুক্তি ছিল, রাজেন্দ্র কুমার তথ্য দিয়েছেন, রাজ্য পুলিশকে ‘এনকাউন্টার’ করতে বলেননি। সিবিআইয়ের অভিযোগ ছিল, ভুয়ো সংঘর্ষেও রাজেন্দ্র কুমারের প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল।
আজ বর্তমান ও প্রাক্তন গোয়েন্দা কর্তাদের সামনে রাজেন্দ্র কুমারের মুখে এই প্রশ্ন শুনে হকচকিয়ে যান জেটলি। তারপর বলেন, ‘‘আমি বুঝতে পারছি, আপনি কোন ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করছেন। রাজনীতিকরা ক্ষমতায় থাকুন বা বিরোধীর আসনে, কিছু প্রতিষ্ঠান ও তার কাজকর্ম রক্ষা করা উচিত। যে অফিসার সরকারের নির্দেশে কাজ করছেন, তাঁকে রাজনৈতিক লড়াইয়ের হাতিয়ার না করাই ভাল।’’ সিবিআই রাজেন্দ্র কুমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলেও শেষ পর্যন্ত মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে তাঁকে কাঠগড়ায় তোলায় অনুমতি দেয়নি। কারও নাম না করে জেটলি বলেন, ‘‘আমার মনে হয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা শিক্ষা নিয়েছেন।’’