জো়ড়া চাপে সঙ্ঘের দরজায় জেটলি

এমনিতেই রাজনৈতিক বিরোধিতায় নরেন্দ্র মোদী সরকারের আর্থিক সংস্কারের কর্মসূচি আটকে যাচ্ছে। তার উপর অর্থমন্ত্রী নিজেই এখন রোজ আম আদমি পার্টির নিশানায়। দুই মিলিয়ে চাপের মুখে থাকা অরুণ জেটলি আজ নর্থ ব্লক থেকে বেরিয়ে হাজির হলেন দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে বিএমএসের সদর দফতরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:৪৯
Share:

শ্রমিক সংগঠন বিএমএসের অনুষ্ঠানে অরুণ জেটলি। ছবি: প্রেম সিংহ।

এমনিতেই রাজনৈতিক বিরোধিতায় নরেন্দ্র মোদী সরকারের আর্থিক সংস্কারের কর্মসূচি আটকে যাচ্ছে। তার উপর অর্থমন্ত্রী নিজেই এখন রোজ আম আদমি পার্টির নিশানায়।

Advertisement

দুই মিলিয়ে চাপের মুখে থাকা অরুণ জেটলি আজ নর্থ ব্লক থেকে বেরিয়ে হাজির হলেন দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে বিএমএসের সদর দফতরে। সঙ্ঘ-পরিবারের শ্রমিক সংগঠনের কাছে তিনি ঘোষণা করলেন, শ্রমিকদের সুরাহার জন্য আরও কী কী নীতি আসতে চলেছে। বিএমএস-এর তরফেও ‘শ্রমিক দরদি’ নীতি নেওয়ার জন্য জেটলিকে সংবর্ধনা জানানো হল।

দেশের অর্থমন্ত্রী শ্রমিক সংগঠনের অনুষ্ঠানে হাজির হতেই পারেন। সঙ্ঘের শ্রমিক সংগঠনের দফতরে জেটলির হাজিরার মধ্যে অন্য তাৎপর্য খুঁজে পাচ্ছেন অনেকেই। তাঁদের মতে, দিল্লির ক্রিকেট দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে চাপের মুখে থাকা জেটলি এখন সঙ্ঘের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে চান। প্রধানমন্ত্রী তাঁর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু জেটলি বরাবরই আরএসএস-এর গোঁড়ামির বদলে আধুনিক মনস্ক বলে পরিচিত। তাই তাঁর বিএমএস দফতরের অনুষ্ঠানে যাত্রার তাৎপর্য অন্য।

Advertisement

অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা বলছেন, অর্থমন্ত্রী আসলে শ্রম আইন সংস্কারের কাজে বিএমএসকে পাশে নিয়ে এগোতে চান। কারণ, কিছু দিন আগেই কংগ্রেস ও বাম শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে হাত মিলিয়ে ধর্মঘটে নামতে চলেছিল সঙ্ঘের শ্রমিক সংগঠন। শেষবেলায় সঙ্ঘের শীর্ষ পদাধিকারীরা তাদের আটকান। এখন সংসদে বাধার মুখে শ্রম আইনের সংস্কারের কাজ আটকে রয়েছে। তাই রাজ্যগুলির মাধ্যমে অথবা অর্ডিন্যান্স জারি করে শ্রম সংস্কার করতে চান মোদী-জেটলি। শীঘ্রই মন্ত্রিসভায় শ্রমিকদের বেতন বিধি ও ছোট কারখানা সংক্রান্ত বিল নিয়ে আলোচনা হবে। বেতন সংক্রান্ত চারটি বিল একত্র করে আইনের সরলীকরণও করা হচ্ছে। যে সব কারখানায় ৪০ জনের কম শ্রমিক নিযুক্ত, ছোট কারখানা বিল-এ তাদের ১৪টি শ্রম আইন থেকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এই প্রক্রিয়া চলার সময়েই বিএমএস-কে পাশে পাওয়ার চেষ্টা।

কারণ যা-ই হোক, বিএমএসের মন জয়ের চেষ্টায় অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, অসংগঠিত ক্ষেত্রের ৪০ কোটি শ্রমিককে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় আনতে চলেছে সরকার। জানুয়ারির শেষ থেকেই শ্রমিকদের ‘আনঅর্গানাইজড ওয়ার্কার আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার’ সংবলিত স্মার্ট কার্ড দেওয়ার কাজ শুরু হবে। প্রথম ধাপে এগুলি পাবেন নির্মাণ শিল্প, অটোরিকশা ও রিকশা চালকরা। অর্থমন্ত্রী বুঝিয়েছেন, ইতিমধ্যেই বোনাস সংশোধনী বিল পাশ করিয়েছে সরকার। তার ফলে মাসে ৩,৫০০ টাকার বদলে ৭,০০০ টাকা পর্যন্ত বেতনে বোনাস পাওয়ার অধিকারী হবেন তাঁরা। বোনাসের ঊর্ধ্বসীমাও ১০,০০০ থেকে বাড়িয়ে ২১,০০০ টাকা করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন