মন্ত্রী না করাতেই বিদ্রোহী শৌরি, বুঝেও চিন্তায় দল

অরুণ শৌরির বোমায় প্রমাদ গুনছেন নরেন্দ্র মোদীর রথী-মহারথীরা। এমন নয় যে এই মুহূর্তে অরুণ শৌরি খুব বড় মাপের নেতা। তবু তাঁর এক মন্তব্যে বিজেপি নেতৃত্ব বেশ বিচলিত। কারণ, মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে দু’তিন বার দেখা করেছেন শৌরি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শেষ বৈঠকটি হয়েছে গত সপ্তাহে। বিজেপির শীর্ষ সূত্রের মতে, শৌরি সরকারের কোনও পদ চান। তাঁকে পুদুচেরির উপরাজ্যপাল করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৫ ০৪:২৮
Share:

অরুণ শৌরির বোমায় প্রমাদ গুনছেন নরেন্দ্র মোদীর রথী-মহারথীরা। এমন নয় যে এই মুহূর্তে অরুণ শৌরি খুব বড় মাপের নেতা। তবু তাঁর এক মন্তব্যে বিজেপি নেতৃত্ব বেশ বিচলিত। কারণ, মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে দু’তিন বার দেখা করেছেন শৌরি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শেষ বৈঠকটি হয়েছে গত সপ্তাহে। বিজেপির শীর্ষ সূত্রের মতে, শৌরি সরকারের কোনও পদ চান। তাঁকে পুদুচেরির উপরাজ্যপাল করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি কোনও রাজ্যপাল বা উপরাজ্যপালের পদ নয়, সরাসরি কেন্দ্রের অর্থ কিংবা প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হতে চান। বিজেপির শীর্ষ নেতাদের মতে, সেই পদ তাঁকে দেওয়া অসম্ভব। আর তা জানার পর থেকেই এখন বিদ্রোহী হতে শুরু করেছেন শৌরি। বিজেপির এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘ক্ষমতালোভী ব্যক্তিদের বিদ্রোহে আদৌ আমল দিতে রাজি নই আমরা।’’

Advertisement

প্রশ্ন হল, তা হলে বিজেপি নেতৃত্ব প্রমাদ গুনছেন কেন? দলের মতে, শৌরি না হয়, নিজের সাধ পূরণ না হওয়ায় ফোঁস করছেন। কিন্তু যে কথাগুলি তিনি বলছেন, তা আমজনতার আলোচনাতেও উঠে আসছে। বিজেপি নেতাদের অনেকের মধ্যে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ ও অরুণ জেটলির ত্রিশক্তির বিরুদ্ধে ক্ষোভ তো আছেই। এমনকী, অরুণ জেটলিকে সরানোর জন্য শুধু অরুণ শৌরি একা নন, রাম জেঠমলানী, সুব্রহ্মণ্যম স্বামী ও গুরুমূর্তিরাও রয়েছেন এই লড়াইয়ে। কিন্তু এখনই দল বেঁধে বিজেপি নেতারা মোদীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করবেন, এমনটা মনে করছেন না তাঁর সেনাপতিরা। কিন্তু তাঁদের আশঙ্কা, সরকারের ঠিক এক বছরের মাথায় মানুষের মধ্যে এই ভাবনাগুলি যে ভাবে দানা বাঁধতে শুরু করেছে, আগামী নির্বাচনগুলিতে তার প্রভাব পড়তে পারে।

ক’দিন আগে মোদী নিজেই খেদের সঙ্গে স্বীকার করেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার যে সব প্রকল্প ঘোষণা করেছে, সেগুলি মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে না। দলের নেতাদের কাছে বারবার তিনি আবেদন জানিয়েছেন এ ব্যাপারে তৎপর হতে। কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পরপর কয়েকটি রাজ্যের ভোটে সাফল্য এলেও সম্প্রতি হারের মুখ দেখতে হচ্ছে বিজেপিকে। দিল্লির ভোটে ভরাডুবির পরে প্রশ্ন উঠছে মোদী-জাদু কি আর কাজ করছে না? তার চেয়েও মোদীর সেনাপতিদের কাছে যেটা বড় চিন্তার বিষয়, হারের ধারা জারি থাকলে মোদীর বাকি চার বছরের মেয়াদেও রাজ্যসভায় গরিষ্ঠতা আসবে না। আর সংসদের উচ্চকক্ষে গরিষ্ঠতা না পেলে মোদী সরকারের পক্ষে কোনও বিলই মসৃণ ভাবে পাশ করানোর রাস্তা খুলবে না। রাজ্যসভায় সরকারের গরিষ্ঠতা না থাকায় প্রথম বছরেই বিরোধীরা এককাট্টা হয়ে যথেষ্ট বেগ দিয়েছে সরকারকে। এখন অটলবিহারী বাজপেয়ী আমলের মন্ত্রী শৌরি সরকারের সমালোচনা চালিয়ে গেলে তা বিরোধীদের আরও তেড়েফুঁড়ে ময়দানে নামতে ইন্ধন জোগাবে। এটাই ভাবাচ্ছে মোদীর সেনাপতিদের। তাঁদের আশঙ্কা, শৌরির সাধ পূরণ না হলে তাঁর বাক্যবাণের তীব্রতা ক্রমেই বাড়বে।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন