শুধু প্রকল্পের ফিতে কেটেই ক্ষান্ত হলেন না অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী কালিখো পুল। রীতিমতো আধঘণ্টা ধরে ছাত্রছাত্রীদের দেশপ্রেম বিষয়ে ক্লাসও নিলেন তিনি। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের প্রশ্ন করে নিজেই হতবাক মুখ্যমন্ত্রী। সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দিতেও হোঁচট খেল সপ্তম-অষ্টম শ্রেণির প়়ড়ুয়ারা। অনেকে ঠিকমতো লিখতেও পারেনি। ক্ষিপ্ত পুল রাজ্যে শিক্ষাব্যবস্থার আমূল সংস্কারে নজর দিতে বলেন।
জনতার দরবার বসানো, দরকার হলেই দরিদ্র ও অসুস্থদের সাহায্য করা পুলের অন্যরূপ আজ দেখল ইটানগরের সরকারি মিডল স্কুল। কেন্দ্রের মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের বিদ্যাঞ্জলী প্রকল্পের উদ্বোধনে এসেছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ওয়াংলিন লোয়াংডং, শিক্ষা সচিব, পরিদর্শকরা। কিন্তু উদ্বোধনের পরে স্কুলের বাইরে না গিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। নিজের শৈশব ছিল দারিদ্রে ভরা। ঠিক মতো স্কুল শিক্ষা পাননি। খাবারের অভাবে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছিলেন কিশোর পুল। তাই ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ গঠনের ক্ষেত্রে তিনি আপোসহীন। পুল দুটি শ্রেণীকক্ষে ছাত্রছাত্রীদের দেশপ্রেম বিষয়ে পড়ান। বলেন, ‘‘শুধু পুঁথিগত বিদ্যায় সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। শিক্ষার ধাঁচ প্রতিদিন বদলাচ্ছে। নিজেকে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে উন্নত করতে হবে। দেশকে ভালবাসতে হবে। তার উন্নয়নের জন্য কাজ করতে হবে। চরিত্রে থাকতে হবে শৃঙ্খলা। নেশা থেকে দূরে থাকতে হবে।’’ ছাত্রছাত্রীরা কী হতে চায় তা জানতে চান পুল। জানান, সরকারি চাকরি জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হতে পারে না। ক্রীড়া, শিল্প, হস্তশিল্প, সংস্কৃতিকেও পেশা করা যায়।
ছাত্রছাত্রীদের অনেককে রাজ্যের বিষয়ে সাধারণ প্রশ্ন করেও উত্তর পাননি পুল। দেখেন, সপ্তম-অষ্টম শ্রেণির ছেলেমেয়েরা ঠিকমতো লিখতে-পড়তে পারছে না। স্কুলের শৌচালয়ে জলের লাইন ছিল না। স্কুলবাড়ির অবস্থাও ভাঙাচোরা। এ সব দেখে ক্ষুব্ধ পুল বলেন, ‘‘রাজধানী শহরের স্কুলে ভবন ও ছাত্রছাত্রীদের এই অবস্থা হলে বাকি রাজ্যের কী অবস্থা বোঝাই যাচ্ছে। গোটা ব্যবস্থাকে অবিলম্বে ঢেলে সাজাতে হবে।’’ স্কুলে পাঁচিত দেওয়া, শৌচালয়ে জলের ব্যবস্থা করার উপরে জোর দেন তিনি। শিক্ষা সচিব ও শিক্ষা দফতরের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন পুল। বলেন, ‘‘স্কুলশিক্ষা উন্নত করার জন্য বিভিন্ন পদ তৈরি ও বিভিন্ন পদক্ষেপ করার ব্যাপারে অবিলম্বে প্রস্তাব তৈরি করা হোক।’’