বোধোদয় হতে লাগল পাক্কা দু’দিন! চোখের সামনে গলায় ফাঁস লাগিয়ে গজেন্দ্র সিংহকে ঝুলতে দেখেও মঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা দিয়েছেন তিনি। এমনকী ফাঁস লাগানোর ঘটনাকে বিজেপির চক্রান্ত বলেও বর্ণনা করতে ছাড়েননি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল।
কিন্তু তাতে তাঁর জনপ্রিয়তার গ্রাফ যে দ্রুত নিম্নমুখী হচ্ছে, তা বুঝতে পারছেন কেজরীবাল। তাই আজ সকাল-সকাল সংবাদমাধ্যমকে ডেকে সে দিনের ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়ে নেন আম আদমি পার্টির প্রধান। বলেন, ‘‘সে দিন গজেন্দ্র গলায় ফাঁস লাগানোর পরেও আমার বক্তৃতা দেওয়াটা অনুচিত হয়েছে। সে সময়ে সভা বন্ধ করে দেওয়াই উচিত ছিল। আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’’
কেজরীবালের ওই সান্ত্বনাবাক্যে সদ্য সন্তানহারা মায়ের ক্ষতে বিন্দুমাত্র প্রলেপ পড়েনি। কেজরীবালের ক্ষমা চেয়েছেন শুনে গজেন্দ্রর মা বলেন,‘‘এতে আমার সন্তান ফিরে আসবে না।’’ গজেন্দ্রর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ খুঁজতে সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন তাঁর পরিবার। অভিযোগ উঠেছে, সে দিন গজেন্দ্রকে ওই সভায় থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া। আজ গজেন্দ্রের ভাই বিজেন্দ্র সিংহের দাবি, সিসৌদিয়ার ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হোক।
তবে বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রকে খোঁচা দেওয়ার রাজনীতিও করতে ছাড়েননি কেজরীবাল। তাঁর মতে, গজেন্দ্রর আত্মহত্যার ঘটনায় দেশের কৃষকদের পরিস্থিতিটি ঠিক কী, এই মূল বিষয়টিই চাপা পড়ে যাচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘ওই ঘটনার জন্য আমি দায়ী হলে আমাকে দোষারোপ করুন। দোষীদের শাস্তি দিন। কিন্তু মূল প্রশ্নটি হল— দেশের কৃষকদের কেন আত্মহত্যা করতে হচ্ছে? এই বিষয়টি থেকে যেন আমরা সরে না আসি।’’
ঘটনার দিন গজেন্দ্রকে কে বা কারা গাছে উঠে ফাঁসি লাগানোর পক্ষে উস্কানি দিয়েছিল, তা-ও বিশদে তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, একাধিক বৈদ্যুতিন মাধ্যমের ভিডিও ফুটেজ খতিয়ে দেখে তিন জনকে চিহ্নিত করা গিয়েছে— যারা সম্ভবত গজেন্দ্রকে উস্কে ছিল। তাঁদের খুঁজছে পুলিশ।