(বাঁ দিকে) অরবিন্দ কেজরীওয়াল। সন্দীপ দীক্ষিত (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
১৯৯৮ থেকে ২০১৩— টানা ১৫ বছর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। ‘দুর্নীতি’র অস্ত্রে দিল্লির তিন বারের সেই মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতকে ঘায়েল করেছিলেন অরবিন্দ কেজরীওয়াল। ১২ বছর পর সেই কেজরীকে ‘হারিয়ে’ই মায়ের হারের ‘বদলা’ নিলেন শীলার পুত্র সন্দীপ। তবে নিজের জামানত জব্দ হল তাঁর!
গত লোকসভা নির্বাচনে দিল্লিতে কাঁধে-কাঁধ মিলিয়ে লড়েছিল কেজরীওয়ালের আম আদমি পার্টি (আপ) এবং কংগ্রেস। কিন্তু সাতটি আসনের মধ্যে একটিও জিততে পারেনি সেই জোট। শূন্যহাতে ফেরার পর দু’দলের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। গত সাত-আট মাসে যমুনা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। যমুনার সেই ‘দূষিত’ জলেই ধুয়ে গিয়েছে আপ-কংগ্রেসের বন্ধুত্ব। বিধানসভা নির্বাচনে তারাই একে অপরের প্রতিপক্ষ। যে লড়াইয়ে জিতে গেল বিজেপি!
নয়াদিল্লি আসনের দিকে এ বার নজর ছিল। সম্মান বাঁচানোর লড়াইয়ে নেমেছিলেন দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কেজরীওয়াল। তাঁর বিরুদ্ধে কংগ্রেস প্রার্থী করেছিল শীলার পুত্র প্রাক্তন সাংসদ সন্দীপকে। বিজেপির হয়ে লড়েন দিল্লির আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সাহিব সিংহ বর্মার পুত্র প্রবেশ। ভোটের ফল অনুযায়ী প্রবেশের কাছেই হারতে হয়েছে আপ প্রধান কেজরীকে। কিন্তু বড় ‘ফ্যাক্টর’ হয়ে দাঁড়িয়েছেন সন্দীপ।
নয়াদিল্লির আসনে এ বার কেজরীওয়ালের প্রাপ্ত ভোট ২৫, ৯৯৯। বিজেপির প্রবেশের ৩০,০৮৮। ব্যবধান ৪,০৮৯। নয়াদিল্লির ‘ত্রিমুখী’ লড়াইয়ে অনেকটাই পিছিয়ে সন্দীপ। ভোটে নিজের জামানত রাখতে পারেননি তিনি। পেয়েছেন মাত্র ৪,৫৬৮ ভোট। যা থেকে স্পষ্ট, কেজরীওয়াল এবং প্রবেশের মধ্যে ভোটের পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন সন্দীপই। ফলাফল বলছে, আপ-কংগ্রেস জোট করে লড়লে ভোটের ফল অন্য রকম হতেও পারত। খাতায়কলমে জয় পেতেও পারতেন কেজরী। কিন্তু সন্দীপই ‘হারিয়ে’ দিলেন কেজরীকে। ২০১৩ সালের বিধানসভা ভোটে নয়াদিল্লি আসনে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী শীলাকে হারিয়েছিলেন কেজরী। সে দিক থেকে দেখতে গেলে নয়াদিল্লির লড়াই ছিল এ বার সন্দীপের কাছে ‘প্রতিশোধের লড়াই’।
কালকাজি আসনের লড়াইও ছিল অনেকটা নয়াদিল্লির মতোই। কালকাজি থেকে আপের প্রার্থী ছিলেন বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী আতিশী মার্লেনা। দিল্লির আবগারি মামলায় জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর তাঁর কাঁধেই মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব ছেড়েছিলেন কেজরী। কালকাজি থেকে আতিশী জিতলেন বটে। কিন্তু লড়াই হল টানটান। সেখানেও আপ-বিজেপির লড়াইয়ে ‘ফ্যাক্টর’ কংগ্রেস। প্রাক্তন আপ বিধায়ক তথা সর্বভারতীয় মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী অলকা লাম্বার কাছে ‘হারতে’ হল আতিশীকে। তবে বিজেপির রমেশ বিধুরিকে হারিয়ে ‘সম্মানরক্ষা’ করেছেন দিল্লির বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী।