বাংলাদেশ ও নেপালের সঙ্গে দ্রুত প্রত্যার্পণ চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য কেন্দ্রের কাছে সর্বসম্মত দাবি জানাল অসমের শাসক দল কংগ্রেস, বিরোধী অগপ, এআইইউডিএফ, কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও বুদ্ধিজীবিদের মিলিত মঞ্চ।
আজ গুয়াহাটিতে কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির উদ্যোগে নাগরিক পঞ্জী উন্নীতকরণ নিয়ে এক সর্বদলীয় সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে যোগ দেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অঞ্জন দত্ত, গণমুক্তি সংগ্রামের সভাপতি অখিল গগৈ, অসম গণ পরিষদের নেতা দুর্গাদাস বড়ো ও লাচিত বরদলৈ, এআইইউডিএফ বিধায়ক আবদুর রহিম খান, সিপিআইএম (এল) নেতা বিবেক দাস, আপ নেতা গুরপ্রীত সিংহ উপ্পল, অসম জাতীয়তাবাদী যুব ছাত্র পরিষদের সভাপতি মনোজ বরুয়া, সারা অসম সংখ্যালঘু ছাত্র সংগঠনের সম্পাদক আজিজুর রহমান, তাই-আহোম ছাত্র সংগঠনের সভাপতি প্রাঞ্জল রাজকোঁয়র, বুদ্ধিজীবি হীরেণ গোঁহাই, উদয়শঙ্কর ভরালী, অদীপ ফুকন, অজিত ভুঁইঞা। তবে, ওই সমাবেশে বিজেপি ও আসুর কোনও প্রতিনিধি হাজির ছিলেন না।
সমাবেশে অনেক বক্তা নাগরিকপঞ্জীর কাজ এত দিন না হওয়ার দায় কংগ্রেসের উপরে চাপালেও অঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘মনমোহন সিংহের সরকারের আমলেই ২০০৫ সালের ৫ মে, ত্রিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে এনআরসির কাজ শুরু হয়। ২০১১ সালে কংগ্রেসই ছয়গাঁও ও বরপেটায় নাগরিকপঞ্জীর কাজ শুরু করেছিল।’’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পরের মাসে বাংলাদেশ সফরে যেতে পারেন। তার আগে প্রত্যার্পণ চুক্তির জন্য সর্বসম্মত দাবি তোলা হয়। সমাবেশে হাজির সব দল ও সংগঠন মেনে নেয়, নাগরিক পঞ্জী উন্নীতকরণের পর চিহ্নিত বিদেশিদের দেশ থেকে পাকাপাকি ভাবে বের করে দিতে না পারলে আসল উদ্দেশ্য সফল হবে না। রাজ্য সরকারের তরফে বার বার জানানো হয়েছে, এ পার থেকে বাংলাদেশিদের চিহ্নিত করে সীমান্তের ও পারে পাঠালেও বাংলাদেশ সরকার তাদের গ্রহণ করে না। সে দেশের সীমান্তরক্ষী বিজিবি বিতাড়িতদের কোনও দায়িত্ব নেয় না। তাই কয়েক দিন পরই বিতাড়িতরা ফের ভারতে ঢুকে পড়ে। তাই, সমাবেশে দাবি ওঠে, বাংলাদেশ ও নেপালের সঙ্গে দ্রুত প্রত্যার্পণ চুক্তি করতে হবে। তা না হলে রাজ্যে ফের বিদেশিরা ঢুকে পড়বে।
অখিল বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নাগরিক পঞ্জী ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে প্রত্যার্পণ চুক্তি না করা হলে বিদেশি চিহ্নিত করে লাভ কী?’’
কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির নেতা অখিলের মতে, ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের পর অসমে আসা সকলকেই অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে গণ্য করা হোক। সমাবেশে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, নাগরিক পঞ্জী উন্নীতকরণ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর রাজ্যে থাকা সব অনুপ্রবেশকারীকে বয়কট করা হবে। রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়েছে, ১৯৫১ সালের নাগরিকপঞ্জীর প্রতিলিপি ও ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ভোটার তালিকা এবং বিভিন্ন সময় হওয়া আদম-সুমারির তথ্য যেন এনআরসি সেবাকেন্দ্রগুলিতে পাঠানো হয়।