Assam

Assam: শর্টস পরে পরীক্ষাকেন্দ্রে, অসমের তরুণীকে পর্দা দিয়ে পা ঢেকে বসতে বাধ্য করলেন পরীক্ষক

অসমের গিরিজানন্দ চৌধুরী ইনস্টিটিউট অব ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্সেস (জিআইপিএস)-এর ঘটনা। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই বিতর্ক শুরু হয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১০:০২
Share:

জুবিলি। (ডান দিকে) এই পরীক্ষাকেন্দ্রেই প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে শর্টস পরে গিয়েছিলেন বছর উনিশের এক তরুণী। কেন শর্টস পরে পরীক্ষা দিতে এসেছেন তার কৈফিয়ৎ চাইলেন পরীক্ষক। শুধু তাই নয়, পরীক্ষায় বসতে হলে পা ঢেকে বসার নিদানও দেন তিনি। শেষমেষ তাঁকে পর্দা দিয়ে পা ঢেকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হয়। অসমের গিরিজানন্দ চৌধুরী ইনস্টিটিউট অব ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্সেস (জিআইপিএস)-এর ঘটনা। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই বিতর্ক শুরু হয়েছে।

বুধবার অসমের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষা ছিল। তেজপুরের বিশ্বনাথ চরিয়ালির বাসিন্দা জুবিলির পরীক্ষা পড়েছিল জিআইপিএস-এ। নির্দিষ্ট সময় বাবাকে নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে হাজির হয়েছিলেন জুবিলি। যথাসময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করেন তিনি। জুবিলি জানান, এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু ইনস্টিটিউশনের যে ঘরে পরীক্ষার আসন পড়েছিল সমস্যা শুরু হয়ে সেখানেই।

Advertisement

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে জুবিলি বলেন, “পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার অনুমতি দিয়েছিলেন নিরাপত্তারক্ষীরা। কিন্তু পরীক্ষা যে ঘরে পড়েছিল সেই ঘরে ঢুকতে যেতেই পরীক্ষকের বাধার মুখে পড়তে হয়। তিনি সাফ জানিয়ে দেন শর্টস পরে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া যাবে না।”

জুবিলির অভিযোগ, অ্যাডমিট কার্ডের কোথাও ড্রেসকোড নিয়ে কিছু বলা নেই। কিন্তু তার পরেও ওই পরীক্ষক কী ভাবে এমনটা করতে পারলেন? জুবিলি বলেন, “কয়েক দিন আগেই নিট পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন তেজপুরেই। একই পোশাক পরে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। কেউ প্রতিবাদ করেননি।” তাঁর কথায়, “কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মে কোথাও বলা নেই যে শর্টস পরে পরীক্ষায় বসা যাবে না। এমনকি অ্যাডমিট কার্ডেও সে কথা উল্লেখ নেই। কা হলে কী ভাবে জানব শর্টস পরলে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হবে না!”

Advertisement

বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদও করেন জুবিলি। অভিযোগ, কেউ তাঁর কথা শোনেননি। এর পরই পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে আসেন তিনি। বিষয়টি জানাজানি হতেই শেষমেশ পরীক্ষার কন্ট্রোলার জুবিলিকে শর্তসাপেক্ষে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেন। অভিযোগ, তাঁকে বলা হয় পরীক্ষায় বসতে হলে পা ঢাকা প্যান্ট পরে বসতে হবে। জুবিলি বলেন, “বাবা তখনই পোশাকের দোকানে ছুটে যান। ৮ কিলোমিটার দূরে থাকা এক পরিচিতের দোকানে যান। তিনি ফিরে আসতেই তাঁকে বলা হয় সমস্যা মিটে গিয়েছে। শেষমেশ আমাকে পর্দা দেওয়া হয় পা ঢেকে বসার জন্য।” জুবিলির প্রশ্ন, কোভিডবিধি মেনে মাস্ক পরা হচ্ছে কি না সেটা দেখা হল না। শরীরের উত্তাপ মাপা হল না, অথচ কে কী পোশাক পরে আসছে তা নিয়ে মাথাব্যথা তাঁদের।

তাঁর কথায়, “প্রত্যেকেরই একটা কমফর্ট জোন থাকে। ছেলেরা গেঞ্জি (ভেস্ট) পরলে আপত্তি করা হয় না। কিছু পুরুষ আবার খালি গায়েই রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়ান। তখনও কেউ রা কাড়েন না। অথচ মেয়েরা শর্টস পরলেই যত সমস্যা!” এটা তাঁর জীবনের সবচেয়ে অপমানজনক অভিজ্ঞতা বলে জানিয়েছেন জুবিলি। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে অভিযোগ জানিয়ে চিঠি লিখবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন