বরাকে বাংলা ব্যবহারের নির্দেশ, উত্তেজনা অসমে

বিধানসভা উপনির্বাচনের ঠিক আগে বরাকে প্রশাসনিক কাজকর্মে অসমীয়া ভাষার ব্যবহার বাধ্যতামূলক নয় বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করল অসম সরকার। বলা হয়েছে, সরকারি কাজে বাংলার ব্যবহার করা যাবে। তা নিয়ে বরাক বনাম ব্রহ্মপুত্রের ভাষাগত বিতর্ক শুরু হয়েছে। রাজ্যের বিদ্বজ্জনদের বক্তব্য, ভোটের লড়াইয়ের জন্য ভাষাকে অস্ত্র করে, দু’টি ভাষাকেই অপমান করেছে শাসক কংগ্রেস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি ও শিলচর শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৩১
Share:

বিধানসভা উপনির্বাচনের ঠিক আগে বরাকে প্রশাসনিক কাজকর্মে অসমীয়া ভাষার ব্যবহার বাধ্যতামূলক নয় বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করল অসম সরকার। বলা হয়েছে, সরকারি কাজে বাংলার ব্যবহার করা যাবে। তা নিয়ে বরাক বনাম ব্রহ্মপুত্রের ভাষাগত বিতর্ক শুরু হয়েছে। রাজ্যের বিদ্বজ্জনদের বক্তব্য, ভোটের লড়াইয়ের জন্য ভাষাকে অস্ত্র করে, দু’টি ভাষাকেই অপমান করেছে শাসক কংগ্রেস।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী গগৈ জানান, ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনও নতুন নিয়ম জারি করা হয়নি। অসম ভাষা আইন, সেটির সংশোধনী (১৯৬৭) এবং সংবিধানের ৩৪৬ ও ৩৪৭ ধারা মেনেই সরকারি ক্ষেত্রে অসমীয়, ইংরেজি এবং কাছাড়ে বাংলার ব্যবহার চলবে। গত নভেম্বরে জেলাশাসকদের কাছে সরকারি বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে, প্রশাসনিক কাজে অসমীয়া ভাষা বাধ্যতামূলক ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে কি না, তার উপরে নজর রাখতে নির্দেশ দেয় সরকার। বরাক উপত্যকার তিনটি জেলার ডিএমের কাছেও একই নির্দেশ যায়। কিন্তু, বাংলা ভাষার অধিকার নিয়ে লড়াই চালানো বরাকে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু হয়। ৮ মাস পেরলেও নির্দেশ প্রত্যাহার হয়নি।

বরাকের লক্ষ্মীপুর ও শিলচরে ১৩ সেপ্টেম্বরের উপনির্বাচনের ঠিক আগে, রাজ্য সরকার নতুন বিবৃতি জারি করেছে। তাতে জানানো হয়েছে, বরাক উপত্যকায় বাংলাতেই সরকারি কাজকর্ম হবে। সরকারের বক্তব্য, প্রশাসনিক ক্ষেত্রে অসমীয়া ভাষা ব্যবহারের আগের নির্দেশ বরাকের জন্য কার্যকর ছিল না। এ নিয়ে নগেন শইকিয়া, নীলমণি ফুকন, ইমরান শাহ, হীরেন গোঁহাইয়ের মতো বিদ্বজ্জনের বক্তব্য, ভোটবাক্সের দিকে তাকিয়ে তরুণ গগৈয়ের এই পদক্ষেপ অসমীয়া ভাষাকে অপমান করেছে।

Advertisement

তাঁদের বক্তব্য, বরাকের মানুষ দু’টি ভাষার সমান্তরাল ব্যবহারই মেনে নিয়েছিলেন। নতুন করে অসমীয়া ও বাংলা ভাষার পক্ষে বা বিপক্ষে সরকারি নির্দেশ জারি করে বিতর্ক তৈরি করা অত্যন্তই হঠকারী সিদ্ধান্ত। অসম গণ পরিষদের অভিযোগ, গগৈ অসমীয়া ভাষা ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ভাবে ষড়যন্ত্র করেছেন। তিনি রাজ্যে বিভেদের বীজ বপণ করতে চাইছেন।

হিন্দু যুব ছাত্র পরিষদের দাবি, বরাক অসমের অংশ। রাজ্যের দুই উপত্যকায় দু-রকম ভাষা চলতে পারে না। বিজেপি মুখপাত্র রাজদীপ রায়ের কথায়, “ভোটের আগে এই নির্দেশ জারি করায় ভাষা-বিদ্বেষ তৈরি হয়েছে। এর জন্য দায়ী মুখ্যমন্ত্রী।” নানা জায়গায় মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুল পুড়েছে। বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের কাছাড় জেলা কমিটির সভাপতি তৈমুর রাজা চৌধুরি বলেন, “এ নিয়ে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় অকারণে বিতর্ক হচ্ছে। ভুল করে যে নির্দেশনামা পাঠানো হয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রী তা সংশোধনের নির্দেশ দিয়েছেন। নতুন কোনও ঘোষণা করা হয়নি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন