নাম বাদ বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর, বাড়ছে উদ্বেগ

শুধু মাত্র বাদ পড়া চল্লিশ লক্ষই নন, ভোটার তালিকার মতোই অজস্র ভুলে ভরা নাগরিক পঞ্জিতে নিজের নাম-ঠিকানা শুদ্ধ করতেও ১০ অগস্ট থেকে এনআরসি কেন্দ্রে ভিড় জমাবেন আরও কয়েক লক্ষ মানুষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি ও শিলচর শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৪৭
Share:

ফাইল চিত্র।

শুধু মাত্র বাদ পড়া চল্লিশ লক্ষই নন, ভোটার তালিকার মতোই অজস্র ভুলে ভরা নাগরিক পঞ্জিতে নিজের নাম-ঠিকানা শুদ্ধ করতেও ১০ অগস্ট থেকে এনআরসি কেন্দ্রে ভিড় জমাবেন আরও কয়েক লক্ষ মানুষ। শুধু বানান নয়, আবেদনকারীর লিঙ্গ, ঠিকানা, এমনকি এআরএন নম্বরেও গোলমালের ঘটনা ঘটেছে। ভোটার তালিকা প্রতি বছর শোধরানো যায়। কিন্তু ৬৭ বছর পরে নবীকরণ হওয়া এনআরসির চূড়ান্ত তালিকাতে ভুল থাকলে কী হবে!

Advertisement

কেন এত ভুল? বিভিন্ন দল-সংগঠন অফিসার-কর্মীদের একাংশের খামখেয়ালিপনাকে দায়ী করছে। অনেকের দাবি, পুরনো নথি যে সংস্থাকে ‘ডিজিটাইজ়’ করতে দেওয়া হয়েছিল তখনও অনেক পাতা হারিয়েছে। বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের সাধারণ সম্পাদক সব্যসাচী রায় জানান, অন্তত তিন মাস সময় না পেলে শুদ্ধ এনআরসি সম্ভব নয়। অসমে বাস করা অনেক ‘অ্যাংলো ইন্ডিয়ান’ পরিবারের নামও নাগরিক পঞ্জিতে ওঠেনি। হাজং জনগোষ্ঠীভুক্ত এক লক্ষ ২০ হাজার মানুষের মধ্যে অনেকেরই নাম খসড়ায় বাদ পড়েছে। নাম বাদ পড়া কার্বি ও ডিমাসার সংখ্যাও প্রচুর। গত বছর রাজ্যের পরিচ্ছন্নতম গ্রাম হিসেবে সরকারের পুরস্কারপ্রাপ্ত গ্রাম রাংসাপাড়ার অনেক গারোর নামও তালিকায় নেই। ষোড়শ শতক থেকে অসমে বসবাসকারী বিষ্ণুপ্রিয় মণিপুরি ও মেইতেই মণিপুরিদেরও অনেকের নাম তালিকায় নেই। মণিপুর ছাত্র সংগঠন এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহকে স্মারকলিপি দিয়েছে।

তরুণ গগৈ নাম বাদ পড়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের কাছে শ্বেতপত্র দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি এনআরসিকে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করলে রক্ত ঝরবে।’’ বিজেপির শরিক দল অগপ বিজেপির ‘দ্বিমুখী’ নীতির সমালোচনা করে বলে, এক দিকে, বিজেপি এনআরসি তৈরি করছে। অন্য দিকে, নাগরিকত্ব আইন সংশোধনী করে, বিদেশিদের সহজলভ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ওয়ার্ক পারমিট দিয়ে অসম চুক্তি ও এনআরসির উদ্দেশ্য ধ্বংস করতে চাইছে।

Advertisement

এর মধ্যে ধুবড়িতে এক আত্মহত্যার ঘটনার সঙ্গে এনআরসির প্রসঙ্গ জড়ানোয় অস্বস্তিতে প্রশাসন। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, ছেলে ও নাতি-নাতনির নাম না ওঠায় ভেঙে পড়েই আত্মঘাতী হন বিষখুয়া গ্রামের সত্তরোর্ধ্ব দেবেন বর্মন। জেলাশাসক অনন্তলাল জ্ঞানী ও এসপি লংনিত টেরন অবশ্য জানান, আত্মহত্যার সঙ্গে এনআরসি তালিকার যোগ নেই।

দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন