গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
বস্তার থেকে কাঙ্কের। তিরিশ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে দূরত্ব দেড়শো কিলোমিটারেরও বেশি। ছত্তীসগঢ়ের মাওবাদী অধ্যুষিত দুই জেলার ভৌগোলিক ব্যবধান ঘুচিয়ে রাজনৈতিক তরজায় নেমে পড়লেন যুযুধান দুই শিবিরের প্রধান দুই মুখ। কাঙ্কেরের পাখানজোর থেকে নোটবন্দি, পিএনবি কেলেঙ্কারি, রাফাল নিয়ে তোপ দাগলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। কিছুক্ষণের মধ্যেই বস্তারের জগদলপুর থেকে নরেন্দ্র মোদীর পাল্টা বান এল, কংগ্রেস ‘শহুরে মাওবাদী’দের তোষণ করছে। মোদী তুললেন দ্বিচারিতার অভিযোগও।
মাঝে আর দু’দিন। ১২ নভেম্বর প্রথম দফায় ১৮ আসনের ভোটগ্রহণ শুরু হচ্ছে ছত্তীসগঢ়ে। ভোটের ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছিল আগেই। এবার প্রধান দুই দলের শীর্ষনেতাদের পালা। শুক্রবার পাখানজোরে আগে রাজনৈতিক জনসভা করেন রাহুল গাঁধী। জনতার সঙ্গে একাত্ম হয়ে রাহুল বলেন, ‘‘নোটবন্দির সময় আপনারা সবাই লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। এত কষ্ট করেছেন। কিন্তু এই দুই বছরে এক জনও কালো টাকার মালিককে খুঁজে পেয়েছেন? উল্টে নীরব মোদী, মেহুল চোক্সী, বিজয় মাল্য, ললিত মোদীরা আপনার-আমার টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পালিয়ে গিয়েছে। আর নীরব মোদী পালানোর আগে দেখা করেছিলেন দেশের অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে।’’ রাহুল বলেন, রাফালে দুর্নীতি হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া। পেট্রোল ডিজেলের দাম বেড়েই চলেছে।’’
অন্যদিকে বস্তার মাওবাদীদের শক্ত ঘাঁটি। আবার কংগ্রেসও এই সব এলাকায় শক্তিশালী। সেখানে দাঁড়িয়ে সেই মাওবাদ এবং কংগ্রেসের উদ্দেশে দ্বিচারিতার অভিযোগ ছুড়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বলেন, ‘‘শহুরে মাওবাদীরা এসি ঘরে থাকেন, বড় বড় গাড়িতে চড়েন, নিজের ছেলেমেয়েদের বিদেশে পড়ান। আর দেশের গরিব-আদিবাসীদের উন্নয়নের কথা বলেন।’’
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
আরও পড়ুন: রাজনীতি আর বুলেট, দুই লড়াই দেখার প্রতীক্ষায় সুকমা
কংগ্রেসকেও কার্যত একই সারিতে বসিয়ে মোদীর তোপ, ‘‘কংগ্রেস নেতারা এই শহুরে মাওবাদীদের সমর্থন করে। আবার ভোটের সময় মাওবাদ ধ্বংসের কথা বলে। আদিবাসী যুবসমাজকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের এই দ্বিচারিতা, এই ভণ্ডামির মুখোশ খুলে দিন। বস্তারের মানুষের কাছে আমার আর্জি, এবারের ভোটে এঁদের উচিত শিক্ষা দিন।’’ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর মাওবাদী প্রভাবিত এলাকায় উন্নয়নের স্বপ্নকে সার্থক করার কথাও এ দিন বলেন মোদী।
আরও পড়ুন: ওড়ালেন আস্থানার সব অভিযোগ, আইনজীবী ছাড়াই ভিজিল্যান্স কমিশনে অলোক বর্মা
৯০ আসনের ছত্তীসগঢ় বিধানসভার ভোট হবে দু’দফায়। প্রথম ধাপে ১২ নভেম্বর মাওবাদী প্রভাবিত জেলাগুলির ১৮টি আসনে ভোটগ্রহণ। এর মধ্যে ১২টি আসনে তফসিলি উপজাতি এবং একটি আসন তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত। ২০১৩-র বিধানসভা ভোটে এই ১৮টির মধ্যে ১২টি আসনই জিতেছিল কংগ্রেস। দ্বিতীয় দফায় ৭২টি আসনের ভোটগ্রহণ ২০ নভেম্বর। ভোটগণনা ১১ ডিসেম্বর।