রাহুল গাঁধী এবং নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
কথায় বলে বাপ-মা তোলা। পাঁচ রাজ্যের ভোটে তারই ফুলঝুরি ছোটাচ্ছে নরেন্দ্র মোদী ও রাহুল গাঁধীর দল। রাহুল নিজে বলছেন, ‘‘ভব্যতার সীমা ছাড়াব না।’’ কিন্তু তাঁর দল প্রধানমন্ত্রী মোদীর মা-বাবাকে আক্রমণ করতে ছাড়ছে না। পাল্টা হিসেবে বিজেপির অন্য নেতাদের সঙ্গে গলা ছেড়েছেন খোদ মোদীও। পাঁচ রাজ্যের ভোট হয়ে উঠেছে কাদা ছোড়াছুড়ির আখড়া। প্রশ্ন উঠছে, সেমিফাইনালেই এই! ২০১৯-এর ফাইনালে কী হবে!
কংগ্রেস বলছে, শুরু তো মোদীই করেছেন। রাহুলের উদ্দেশে বলেছেন, ‘‘স্বাধীনতার পরে দেশে মানুষের জন্য জলের পাইপ কি আপনার বাপ-ঠাকুরদা বসিয়েছেন!’’ ক্ষমতায় আসার আগে মোদীই টাকার দামের পতনের সঙ্গে সনিয়া গাঁধী, মনমোহন সিংহের বয়সের তুলনা টানতেন। ব্যুমেরাং হয়েছে সেটাই। রাজ বব্বর সম্প্রতি মোদীর মায়ের বয়সের সঙ্গে টাকার দাম পড়ার তুলনা করে বিতর্ক বাধিয়েছেন। বেজায় চটে মোদী কাল বলেছেন, কংগ্রেস দেউলিয়া হয়ে পড়েছে। তাই তাঁর নব্বই পেরনো মাকে অপমান করছে!
এরই মধ্যে রাজস্থানের এক জনসভায় প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিলাসরাও মুত্তেমওয়ার বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে কে আপনাকে চিনত? এখনও কেউ আপনার বাবার নাম জানে না। কিন্তু রাহুল গাঁধীর বাবার নাম যে রাজীব গাঁধী, সবাই জানেন। এমনকি রাজীব গাঁধীর মায়ের নামও সবাই জানেন। তাঁর বাবার নামও জানেন। তাঁর বাবার নামও। কিন্তু নরেন্দ্রর বাবার নাম কেউ জানেন না।’’ এর ভিডিয়ো টুইটারে পোস্ট করেছে বিজেপি। প্রশ্নের মুখে মুত্তেমওয়ার বলেন, ‘‘ওটা দলীয় বৈঠক ছিল। ভিডিয়োটি বিকৃত করা হয়েছে।’’
উত্তরে জব্বলপুর-বিদিশার সভায় মোদী বলেছেন, ‘‘মা বাড়িতে পুজো-আর্চা করেন। রাজনীতির র-ও জানেন না। কাল ওরা আমার মাকে টেনেছে। আজ বাবাকেও। তিনি মারা গিয়েছেন ৩০ বছর আগে। নামদার (রাহুল)-এরই নির্দেশেই এ সব হচ্ছে।’’ এর সঙ্গেই ব্যথিত সুরে মোদীর সংযোজন, ‘‘আমাদের গরিব পরিবার কয়েকশো বছর ধরে গ্রামে। রাজনীতির সংস্রবই ছিল না। তাঁদের নাম কেন জড়ানো হবে!’’
পরিবার প্রসঙ্গের বাইরে গিয়ে রাজস্থানের অলওয়রের সভায় মোদী অভিযোগ আনেন, বিচার ব্যবস্থাকেও মর্যাদা দেয় না কংগ্রেস। সুপ্রিম কোর্টের যে বিচারপতি (তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র) চলতি বছরের গোড়ায় অযোধ্যা মামলার শুনানি করাতে চেয়েছিলেন, কংগ্রেস তাঁকে ‘ইমপিচ’ করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছিল। রাজস্থানে সচিন পায়লট ও অশোক গহলৌত— দু’জনকেই ভোটে নামিয়েছেন রাহুল। যা নিয়ে মোদীর কটাক্ষ, কে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী সেটাই ঠিক করে উঠতে পারছে না কংগ্রেস। মোদীর মন্তব্য, তা-ও তো শিবরাজের প্রথম দশটা বছর নষ্ট হয়েছে উন্নয়নের কাজে ম্যাডাম (ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া) নানা ভাবে বাগড়া দেওয়ায়।