গোবলয়ে বিজেপি-বিরোধী হাওয়ার পরেই কংগ্রেসের হাতে হাত, ইতি মায়ার খেলায়?

রাহুল গাঁধীর হ্যাটট্রিকের পর আজ ঢোক গিলতে বাধ্য হলেন বিএসপি নেত্রী মায়াবতী।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৩
Share:

রাহুল গাঁধীর হ্যাটট্রিকের পর ঢোক গিলতে বাধ্য হলেন বিএসপি নেত্রী মায়াবতী। —ফাইল চিত্র।

সোমবার রাতেও তিনি জেদ ধরে বসেছিলেন। আসেননি বিরোধী দলগুলির বৈঠকে। সূত্রের খবর, সে রাতে হাওয়া বুঝতে বিশ্বস্ত সৈনিক সতীশ মিশ্রকেও তিনি পাঠিয়েছিলেন অমিত শাহের কাছে।

Advertisement

কিন্তু কাল রাহুল গাঁধীর হ্যাটট্রিকের পর আজ ঢোক গিলতে বাধ্য হলেন বিএসপি নেত্রী মায়াবতী। সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দিলেন, শুধু মধ্যপ্রদেশ নয়, রাজস্থানেও কংগ্রেসকে সমর্থন করছেন তিনি। রাজনৈতিক শিবিরের ধারণা, এই ভাবেই গত কয়েক মাস ধরে চলা ‘মায়ার খেলা’ আপাতত শেষ হতে চলেছে। গত্যন্তর না দেখে গোবলয়ে বিজেপি-বিরোধী হাওয়ায় সওয়ার হতে চলেছেন তিনিও। এখন উত্তরপ্রদেশেও এসপি এবং কংগ্রেসের সঙ্গে মহাজোট গড়া ছাড়া কার্যত মায়ার আর কোনও উপায় নেই বলেই মনে করা হচ্ছে।

মধ্যপ্রদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে সামান্য দূরে থাকা কংগ্রেসকে মায়াবতীর দুই বিধায়ক সমর্থন করায় পরিস্থিতি জলবৎ হয়ে গেল রাহুল গাঁধীর কাছেও। আজ সকালে সাংবাদিক সম্মেলন করে বিএসপি নেত্রী বলে দেন, ‘‘আমাদের দল বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য লড়াই করেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তাতে সফল হয়নি। সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন না পাওয়া সত্ত্বেও বিজেপি মধ্যপ্রদেশে সরকার গড়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা বিজেপিকে ক্ষমতার বাইরে রাখার জন্য কংগ্রেসকে সরকার গড়তে সমর্থন করছি।’’ তবে ‘ইতি গজ’-র মতো করে এ-ও জানিয়েছেন যে— সমর্থন করলেও তিনি আদর্শগত ভাবে কংগ্রেসকে সমর্থন করেন না।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘এ বার হয়তো ন্যায় বিচার হবে’, বিজেপির হারে আশায় আফরাজুলের স্ত্রী

রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, এত দিন উত্তরপ্রদেশে আসন সমঝোতার ব্যাপারে তাস ফেলেননি মায়াবতী। কেবলই বলে গিয়েছেন, সম্মানজনক আসন না পেলে জোট গড়বেন না। এবং ‘সম্মানজনক’ আসনের ব্যাপারে তাঁর সূত্র ছিল, কংগ্রেসকে বাইরে রেখে এসপি এবং বিএসপির মধ্যে আসন আধাআধি ভাগ করে নেওয়া। সূত্রের খবর, মায়ার অবস্থান সম্পর্কে অবগত ছিলেন রাহুলও। সেই সঙ্গে মায়ার উপর যে বিজেপির প্রবল চাপ ছিল, এও স্পষ্ট ছিল। পুরনো মামলা ফিরিয়ে এনে মায়াকে সিবিআইয়ের জুজু দেখানো হয়েছিল। পাশাপাশি টোপ দেওয়া হয়েছিল যে, বিজেপিকে সমর্থন করলে উপযুক্ত ‘পারিতোষিক’ দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন: পাঁচ রাজ্যে ভোটের ধাক্কা সামলাতে শেষমেশ ভরসা খয়রাতি!

এই অবস্থায় অখিলেশের প্রতি রাহুলের পরামর্শ ছিল, পাঁচ রাজ্যের ফলের জন্য অপেক্ষা করার। কংগ্রেসের হাওয়া তৈরি হলে মায়াবতী যে সুর নরম করতে বাধ্য হবেন, এই আন্দাজ ছিল তাঁদের। বাস্তবে সেটাই হয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। পাঁচ রাজ্যে বিজেপি হারার পর এখন মায়াবতী রাহুল-অখিলেশের মধ্যেই ভবিষ্যৎ দেখতে বাধ্য হচ্ছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন