মোদীর সভায় কালো পোশাক নিষিদ্ধ করল প্রশাসন

বিজেপি সরকারের ‘কৌশল বিকাশ যোজনা’ থেকে উপকৃত হওয়ার কথা শোনানোর জন্যই প্রধানমন্ত্রীর সভায় আনা হয়েছিল ওই ছাত্রদের। এই ভাবে ৮০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে দুঙ্গারপুর থেকে জয়পুরে আসা আরও একটি দলকেও ওই সভায় ঢুকতে হল কালো জামা-টি শার্ট খুলে রেখে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

জয়পুর শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৮ ০২:৩৪
Share:

জয়পুরে প্রধানমন্ত্রী। ছবি: পিটিআই।

ষাট জন ছাত্রের গোটা দলটাকেই আটকে দেওয়া হল প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থলের প্রবেশপথে। কেন? ওই ষাট জনের এক জন নাকি কালো স্যান্ডো গেঞ্জি পরেছিলেন! কালো কাপড় দেখিয়ে বিক্ষোভের যাবতীয় সম্ভাবনা রুখতে নরেন্দ্র মোদীর সভায় ইদানীং কালো পোশাক পরে আসাটাই নিষিদ্ধ করতে শুরু করেছে প্রশাসন।

Advertisement

অথচ বিজেপি সরকারের ‘কৌশল বিকাশ যোজনা’ থেকে উপকৃত হওয়ার কথা শোনানোর জন্যই প্রধানমন্ত্রীর সভায় আনা হয়েছিল ওই ছাত্রদের। এই ভাবে ৮০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে দুঙ্গারপুর থেকে জয়পুরে আসা আরও একটি দলকেও ওই সভায় ঢুকতে হল কালো জামা-টি শার্ট খুলে রেখে।

রাজস্থানে প্রায় ২১০০ কোটি টাকার নতুন পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন, কেন্দ্র ও রাজ্যের জনমুখী প্রকল্পগুলির উপভোক্তাদের সঙ্গে জনসংযোগের পাশাপাশি জয়পুরের ‘অমরূদোঁ কা বাগ’-এর ওই সভা থেকে কংগ্রেসকে আজ ‘বেল গাড়ি’ বলে খোঁচা দিয়েছেন মোদী। উচ্চারণে মিলের জন্য দ্ব্যর্থবোধক শুনিয়েছে সেই আক্রমণ। হিন্দি ‘বৈল গাড়ি’ কথাটার সাধারণ মানে গরুর গাড়ি। মোদী অবশ্য এ ক্ষেত্রে ইংরেজি শব্দ BAIL বা জামিন বুঝিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘কংগ্রেসকে লোকে আজকাল ‘বেলগাড়ি’ বলে ডাকা শুরু করেছে। কারণ কংগ্রেসের বেশ কিছু বড়সড় নেতা ও প্রাক্তন মন্ত্রী এখন জামিনে রয়েছেন।’’

Advertisement

সার্জিকাল স্ট্রাইক সম্পর্কে কংগ্রেসের প্রশ্ন তোলা নিয়েও আজ ঘুরিয়ে আক্রমণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘সেনার ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পাপ করেছেন রাজনৈতিক বিরোধীরা।’’

মোদীর আক্রমণের পাল্টা কংগ্রেস মুখপাত্র আর পি এন সিংহ বলেছেন, ‘‘বিজেপির একাধিক মন্ত্রী, এমনকী দলীয় সভাপতির ছেলের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগের কথা আমরা তুলেছি। সিবিআই তদন্ত তো দূর, আয়কর তদন্ত পর্যন্ত হয়নি। কোনও রিপোর্টও জমা পড়েনি।’’ মোদী মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়ে গুজরাত স্টেট পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনে ২০ লক্ষ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তিনি বলেছেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে। অভিযুক্তেরা কেউ জামিনও পাবে না।

চলতি বছরের শেষেই বিধানসভা ভোট রাজস্থানে। ঘরে-বাইরে সমস্যায় জর্জরিত বসুন্ধরা রাজের সরকার। এ রাজ্যে সাম্প্রতিক উপনির্বাচনে কংগ্রেসের কাছে পর্যুদস্ত হতে হয়েছে বিজেপিকে। এই পরিস্থিতিতে মোদীর এক দিনের রাজস্থান সফর ছিল কার্যত ভোটমুখীই। উদয়পুর, অজমের, জোধপুর, ঢোলপুর, অলওয়ার-সহ বেশ কিছু শহরে উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধনের পাশাপাশি মোদীর সভা থেকে কেন্দ্রের সাতটি এবং রাজ্য সরকারের পাঁচটি জনমুখী প্রকল্পকেও তুলে ধরেছে বিজেপি। এই সমস্ত প্রকল্পের উপভোক্তাদের অভিজ্ঞতা শোনানোর জন্যই ৩৩টি জেলা থেকে প্রায় সাত কোটি টাকা খরচ করে তাঁদের সভাস্থলে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেছিল রাজস্থান সরকার। কিন্তু শৌচাগারের অভাব থেকে শুরু করে জামার রং নিয়ে পুলিশের কড়াকড়ি— নানা বিষয় নিয়েই ভুগতে হল তাঁদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন