Sabarimala

তিন নয়, অন্তত দশ জন মহিলা পুজো দিয়েছেন শবরীমালায়: কেরল পুলিশ

কেরল পুলিশ সামনে এনেছে বছরের প্রথম দিনের একটি ঘটনা। মালয়েশিয়ার নিবাসী তামিল তীর্থযাত্রীদের পঁচিশ জনেরএকটি দল সে দিন প্রবেশ করেছিল শবরীমালার গর্ভগৃহে। তাঁদের সঙ্গেই ছিলেন তিন মহিলা, যাঁদের বয়স দশ থেকে পঞ্চাশের মধ্যে।

Advertisement

১০

তিরুঅনন্তপুরম শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ১৫:০৯
Share:

রবিবার মন্দির চত্বরে কড়া পুলিশি প্রহরা। ছবি: পিটিআই।

শুধু বিন্দু, কনকদুর্গা এবং শশীকলা নন, আরও অন্তত সাত জন ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী মহিলা এই বছরেই প্রবেশ করেছেন শবরীমালায় আয়াপ্পাস্বামীর মন্দিরে। দিয়েছেন পুজোও। ভিডিয়ো ফুটেজ-সহ এই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আনল কেরল পুলিশ। সে ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর সব মিলিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করলেন অন্তত দশ জন মহিলা। কেরল পুলিশের এই রিপোর্টের সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী টমাস আইজ্যাক। প্রয়োজনে আদালতের সামনেও এই ভিডিয়ো ফুটেজ এবং অন্যান্য নথি পেশ করা হবে বলে জানানো হয়েছে কেরল সরকারের তরফে।

Advertisement

২ জানুয়ারি ‘হিন্দুত্ববাদী’ এবং আয়াপ্পাস্বামীর মন্দিরের পুরোহিতদের চোখরাঙানি এবং নিষেধ অগ্রাহ্য করে শবরীমালায় পুজো দিয়ে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন বিন্দু এবং কনকদুর্গা। তাঁদের দু’জনেরই বয়স ছিল পঞ্চাশের নিচে। মনে করা হচ্ছিল ২৮ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ের পর তাঁরা প্রথম আয়াপ্পাস্বামীর দর্শন করেছেন। কেরল পুলিশের সাম্প্রতিক রিপোর্ট অবশ্য বদলে দিল সেই ধারণা।

কেরল পুলিশ সামনে এনেছে বছরের প্রথম দিনের একটি ঘটনা। মালয়েশিয়ার নিবাসী তামিল তীর্থযাত্রীদের পঁচিশ জনেরএকটি দল সে দিন প্রবেশ করেছিল শবরীমালার গর্ভগৃহে। তাঁদের সঙ্গেই ছিলেন তিন মহিলা, যাঁদের বয়স দশ থেকে পঞ্চাশের মধ্যে। এই তিন মহিলার নাম, পরিচয়পত্র এবং মন্দিরে প্রবেশের ভিডিয়ো, সব কিছুই তাঁদের কাছে আছে বলে জানানো হয়েছে কেরল পুলিশের তরফে। প্রয়োজনে তা আদালতে পেশ করা হবে বলে জানিয়েছে কেরল সরকার। তাঁদের জন্য ছিল না কোনও পুলিশি প্রহরা, কোনও বাধা ছাড়াই, কাউকে কিছু বুঝতে না দিয়েমুখে চাদর জড়িয়ে তাঁরা পুজো দিতে ঢুকে পড়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

বিজেপি-আরএসএসের বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। ছবি:পিটিআই।

কেরল পুলিশের এই দাবি ঠিক হলে বিন্দু এবং কনকদুর্গার আগেই মন্দিরে প্রবেশ করেছেন এই তিন মহিলা। অর্থাৎ ইতিহাসের সিঁড়িতে প্রথম পা রেখেছেন তাঁরাই। পরের দিন, অর্থাৎ ২ জানুয়ারি মন্দিরে ঢোকেন বিন্দু এবং কনকদুর্গা। তার পরের দিন মন্দিরে ঢোকেন শশীকলা নামের এক শ্রীলঙ্কার ভক্ত।

আরও পড়ুন: ‘জীবন সংশয় হতে পারে জেনেও শবরীমালায় ঢোকার ঝুঁকিটা নিয়েছিলাম’

যদিও তালিকাটা বিন্দু, কনকদুর্গা, শশীকলা বা মালয়েশিয়া নিবাসী তিন তামিল ভক্তেই শেষ হচ্ছে না। আরও অন্তত চার জন মহিলা এই বছরেই আয়াপ্পাস্বামীর বিগ্রহ দর্শন করেছেন বলে জানিয়েছে কেরল পুলিশ। সে ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত সব মিলিয়ে অন্তত দশ জন ঋতুমতী মহিলার মন্দিরে প্রবেশের প্রমাণ মিলল।

২৮ সেপ্টেম্বর সব বয়সী মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশে অধিকারের কথা ঘোষণা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। যদিও সেই রায় অগ্রাহ্য করে মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন পুরোহিত এবং হিন্দুত্ববাদীদের একাংশ। নতুন বছরে অবশ্য ভেঙে পড়ে সেই বাঁধ। সংখ্যাটা অবশ্য শুধু দশ নয়, বাড়তে পারে আরও, এমনটাই জানিয়েছেন কেরলের মন্ত্রী কাদাকামপল্লী সুরেন্দ্রম।

আরও পড়ুন: শবরীমালা জয়ের পর কেরলের মহিলাদের চোখ এখন অগস্ত্য মুনির পাহাড়ে

দশ মহিলা মন্দিরে প্রবেশ করতে সফল হলেও হিন্দুত্ববাদীদের একাংশের বিক্ষোভে এখনও জ্বলছে কেরল। কোঝিকোড়, কান্নুড়, পেরাম্ব্রা, মলপ্পুরম, আদুরে বিক্ষোভের আঁচ সব থেকে বেশি। বেছে বেছে হামলা চালানো হচ্ছে সিপিএম কর্মী সমর্থকদের ওপর। শনিবার রাতে বোমা ছোঁড়া হয়েছে সিপিএম বিধায়ক এ এম সামশেরের বাড়িতে। কান্নুরে সিপিএম জেলা সম্পাদক পি শশীর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও সেই হামলায় কেউ গুরুতর আহত হননি বলেই জানিয়েছে কেরল পুলিশ।

কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে মণিপুর - দেশের সব রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন