ব্রহ্মপুত্র ও বরাক উপত্যকার চা-বাগানগুলিতে সমহারে মজুরির দাবি বিধানসভায় তুললেন বাগান-এলাকার বিধায়করা। তাঁদের বক্তব্য, ব্রহ্মপুত্র উপত্যাকায় চা-শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১১৫ টাকা। পাশাপাশি, বরাকে চা-শ্রমিকদের মজুরি মাত্র ৯৫ টাকা। যা খুবই কম। মজুরি সর্বত্রই সমান হওয়া উচিত বলে তাঁরা এ ব্যাপারে সরকারকে উদ্যোগী হতে অনুরোধ করেন। রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারি মজুরি বৈষম্য ও মজুরি কম হওয়ার দায় চা-শ্রমিক সংগঠনগুলির উপরেই চাপিয়ে দেন। তিনি বলেন, সরকার নির্ধারিত মজুরি না মেনে সংগঠনগুলি চা মালিকদের সঙ্গে বসে কম মজুরিতে রফা করেছে।
আজ বিধানসভায় চা-বাগান সংক্রান্ত এক আলোচনায় পাটোয়ারি জানান, ৫১০ কোটি টাকার লোকসানের বোঝা ঘাড়ে নিয়ে ধুঁকছে অসম টি কর্পোরেশন লিমিটেড (এটিসিএল)। তিনি জানান, এটিসিএলের অধীনস্থ চা-বাগানগুলি যাতে ঘুরে দাঁড়াতে পারে তার জন্য সরকার কিছু পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছে। মন্ত্রী জানান, ২০১৮-১৯-র মধ্যে এটিসিএলের ২৫০০ হেক্টর জমিতে নতুন চা গাছ লাগানো হবে। তৈরি হবে অনেক নার্সারি। এটিসিএলের বাগানগুলির ৮০% গাছের বয়সই ৮০ বছরের বেশি। তাদের উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় শেষ। নতুন তিনটি চা-প্রক্রিয়াকরণ কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্তমান কারখানাগুলির পরিকাঠামোও ঢেলে সাজা হবে। পাটোয়ারি বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপের জেরে এটিসিএলে গ্রিন টি-র উৎপাদন বেড়ে ২২ লক্ষ কিলোগ্রাম হয়েছে। নার্সারিতে তৈরি হয়েছে প্রায় দেড় কোটি চারা। বন্ধ থাকা নেঘ্রিটিং ও লুংসুং কারখানাও ফের চালু হয়েছে।
হাজার হাজার বাগানকর্মীর রোজগার বাঁচাতে সাতের দশকে রুগ্ণ চা বাগানগুলির দায়িত্ব নিয়েছিল এটিসিএল। ১৯৭২ সালে তৈরি এটিসিএলের অধীনে রয়েছে ১৫টি চা-বাগান আছে। বরাক-ব্রহ্মপুত্র মিলিয়ে কর্মীর সংখ্যা ১৬,৬৯৫ জন। তার মধ্যে স্থায়ী কর্মী ১৫,৫২৩ জন। মন্ত্রীর দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, বছরে এটিসিএলের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫২ কোটি টাকা।