বিজেপি-শাসিত অসমে গিয়ে বন্যা-দুর্গতদের দেখে এসেছেন সবে। একই উদ্দেশ্যে বিজেপি শাসিত মোদী রাজ্যে যেতেই হামলার মুখে রাহুল গাঁধী!
‘মোদী-মোদী’ স্লোগান, কালো পতাকা পর্যন্ত ঠিক ছিল। কিন্তু এর পরে রাহুলের গাড়িতে উড়ে এসে পড়ল পাথর! অল্পের জন্য রেহাই পেলেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি। তবে পাথরের ঘায়ে কাচ ভেঙে আহত হযেছেন তাঁর নিরাপত্তা কর্মী।
এমনিতেই গুজরাত এখন সরগরম। রাজ্যসভার আসন নিয়ে রীতিমতো যুদ্ধ চলছে কংগ্রেস-বিজেপিতে। তার মধ্যেই রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন রাহুল। বিকেলে বনসকঁঠার লালচক থেকে হেলিপ্যাডে ফেরার পথে একটি বড় পাথরের চাঁই উড়ে এসে পড়ে তাঁর গাড়িতে। রাহুল তখনই গাড়ি থামান। যাঁরা মোদীর নামে স্লোগান দিচ্ছিলেন, গাড়ি থেকে নেমে তাঁদের দিকে এগিয়ে যান। রাহুলকে আসতে দেখেই তাঁরা পালিয়ে যান। রাহুল বলেন, ‘‘এরা ভীতু লোক। দম নেই বলেই পালিয়ে গেল। কালো পতাকা, মোদীর স্লোগান আর গাড়িতে পাথর মারলেও আমরা পিছু হটব না। যাঁরা সত্যকে চেনেন, তাঁদের ভয় পাওয়ার কারণ নেই।’’
আরও পড়ুন:গরিব-স্বার্থেই হবে সংস্কার, দাবি অরুণ জেটলির
পুলিশ জানিয়েছে, পাথর যে মেরেছে, তাকে আটক করা হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী বলেছেন, ‘‘দোষীদের কড়া শাস্তি হবে।’’ ঘটনার পরেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাহুলের খোঁজ নেন। সন্দেহ নেই রাহুলের গাড়িতে এই হামলা জাতীয় রাজনীতিতে আরও আক্রমণাত্মক হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে কংগ্রেসকে। তাদের অভিযোগ, বিজেপির গুন্ডারাই এই কাজ করেছে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ঘটনার নিন্দা করে বলেছেন, ‘‘গণতন্ত্রে রাজনৈতিক হিংসার কোনও স্থান নেই।’’ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সভাপতি অধীর চৌধুরীও বলেন, ‘‘রাহুল গাঁধীর উপর আক্রমণ করে কংগ্রেসকে দুর্বল করা যাবে না। বিজেপি নিজের রাজনৈতিক দৈন্য প্রকাশ করল।’’
যার ফলে ব্যাকফুটে এখন বিজেপি। তারা বুঝতে পারছে, গোটা ঘটনায় বিজেপির কোনও লাভ নেই। উল্টে রাহুলই ‘হিরো’ হয়ে গিয়েছেন। এমনও নয় যে বিজেপি নেতৃত্বের নির্দেশে এ কাজ হয়েছে। হতে পারে, স্থানীয় মানুষের রোষের প্রতিফলনে হয়েছে। বিজেপির কেউ কেউ এমনও বলছেন, কংগ্রেসই এ কাজ করিয়েছে। সাজানো হামলার যে অভিযোগ আগে উঠত অরবিন্দ কেজরীবালের বিরুদ্ধে। দিল্লিতে বিজেপি তাই বোঝানোর চেষ্টা করছে, বন্যার সময়ে রাজ্যসভা ভোটে সনিয়া গাঁধীর রাজনৈতিক সচিব আহমেদ পটেলকে জেতাতে গুজরাত থেকে বেঙ্গালুরুতে বিধায়কদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এতে মানুষের ক্ষোভ বেড়েছে।