এক বিচারপতির অব্যাহতি

আবার পিছোল অযোধ্যা শুনানি

২৯ তারিখ থেকেই যে অযোধ্যা মামলার শুনানি পুরোদমে শুরু হবে, এমনও নয়। সেদিন শুধু কবে থেকে শুনানি শুরু হবে এবং শুনানির সময়সূচি ঠিক হবে। ফলে লোকসভা ভোটের আগে রামমন্দির নিয়ে ফয়সালা হওয়ার সম্ভাবনা কম বলেই আইনজীবীদের ধারণা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৪৭
Share:

ফাইল চিত্র।

রামমন্দির-বাবরি মসজিদ মামলার শুনানি ফের পিছিয়ে গেল। মামলার নতুন তারিখ ২৯ জানুয়ারি।

Advertisement

তবে ২৯ তারিখ থেকেই যে অযোধ্যা মামলার শুনানি পুরোদমে শুরু হবে, এমনও নয়। সেদিন শুধু কবে থেকে শুনানি শুরু হবে এবং শুনানির সময়সূচি ঠিক হবে। ফলে লোকসভা ভোটের আগে রামমন্দির নিয়ে ফয়সালা হওয়ার সম্ভাবনা কম বলেই আইনজীবীদের ধারণা।

অযোধ্যা মামলার শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ তাঁর নিজের নেতৃত্বেই পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠন করেছিলেন। আজ সেই বেঞ্চেই শুনানির নির্ঘণ্ট ঠিক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আলোচনা শুরুর আগেই সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের তরফে অন্যতম আইনজীবী রাজীব ধবন বলেন, বেঞ্চের অন্যতম বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত এই অযোধ্যা সংক্রান্ত মামলাতেই ১৯৯৪ সালে উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিংহের আইনজীবী ছিলেন। তা বলে তিনি বিচারপতি ললিতকে বেঞ্চ থেকে সরানোর আর্জি করছেন না বলেও অবশ্য জানান ধবন। কিন্তু বিচারপতি ললিতই সিদ্ধান্ত নেন, তিনি ওই বেঞ্চে থাকবেন না। ফলে নতুন করে সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।

Advertisement

এর আগে সুপ্রিম কোর্টই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তিন বিচারপতির বেঞ্চে অযোধ্যা মামলার শুনানি হবে। কারণ সুপ্রিম কোর্ট রাম জন্মভূমি মামলাকে শুধুমাত্র জমির বিবাদ হিসেবেই দেখবে। তার পরেও সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠন হলে তার জন্য আদালতের রায় প্রয়োজন কি না, তা নিয়েও আইনজীবী ধবন এবং রামলালা বিরাজমানের আইনজীবী হরিশ সালভে প্রশ্ন তোলেন। কিন্তু প্রধান বিচারপতি বলেন, সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠনে কোনও ভুল নেই। এই মামলাটি শোনার জন্য পাঁচ বিচারপতির প্রয়োজন। কারণ ৫০টি ট্রাঙ্কে তালাবন্দি বিপুল পরিমাণ নথি খতিয়ে দেখতে হবে। বেশ কিছু নথি সংস্কৃত, আরবি, উর্দু, হিন্দি, ফারসি ও গুরমুখীতে রয়েছে। যা অনুবাদ করতে হবে। ইলাহাবাদ হাইকোর্ট রায়ের আগে ৮৮ জনের সাক্ষ্য রেকর্ড হয়েছিল। ২,৮৮৬ পৃষ্ঠার ২৫৭টি নথি রয়েছে। শুধু হাইকোর্টের রায়ই ৪,৩০৪ পৃষ্ঠার। তার সঙ্গে আরও ৮ হাজার পৃষ্ঠার নথি রয়েছে।

তবে রামমন্দির নিয়ে শুনানি বারবার পিছিয়ে যাওয়ায় আজ সুপ্রিম কোর্টের বাইরেই গেরুয়া সংগঠনগুলি বিক্ষোভ দেখায়। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কার্যনির্বাহী সভাপতি অলোক কুমার বলেন, ‘‘আমাদের সন্দেহ ছিল যে বিরোধী পক্ষ অকারণ বাহানা দেখিয়ে মামলার শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে। তা-ই সত্য প্রমাণিত হল।’’ অযোধ্যায় রামজন্মভূমি ন্যাসের প্রবীণ সদস্য রামবিলাস বেদান্তির মন্তব্য, ‘‘ধবনের অভিযোগে বিচারপতি ললিতকে সরে যেতে হলে, কংগ্রেসের নেতা, অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কেশবচন্দ্র গগৈর ছেলে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈরও এই মামলা থেকে সরে যাওয়া উচিত।’’ বেদান্তি বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ হলেও বিজেপি এই মন্তব্য সমর্থন করছে না বলে জানিয়েছে। তবে ক্ষোভ চেপে রাখেননি মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ।

তিনি বলেন, ‘‘দেশের দুর্ভাগ্য যে ভগবান রামের মামলা কোর্টে গিয়েছে। যদি মানুষের আস্থা আক্রোশে বদলে যায়, তা হলে মন্দির তৈরি হয়ে যাবে।’’ আরএসএস নেতা গোবিন্দাচার্য আবার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে অনুরোধ করেছেন, এই মামলার শুনানি সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা হোক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন