National

পুরনো নোট নিতে নারাজ হাসপাতাল, মৃত্যু হল সদ্যোজাতের

পুরনো নোটের ‘বোঝা’টা বড্ড বেশি ‘ভারী’ হয়ে উঠেছে মুম্বইয়ের জগদীশ আর কিরণ শর্মার কাঁধে। জীবনে। পুরনো নোটের বোঝা খালি করতে পারেননি বলেই কিরণের কোল খালি করে চলে গেল তাঁর সদ্যোজাত শিশু। ওই শিশুর যমের দুয়ারে কাঁটা দিতে এগিয়ে এল না হাসপাতালও।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৬ ১৮:৩৩
Share:

জগদীশ ও কিরণ শর্মা।

পুরনো নোটের ‘বোঝা’টা বড্ড বেশি ‘ভারী’ হয়ে উঠেছে মুম্বইয়ের জগদীশ আর কিরণ শর্মার কাঁধে। জীবনে। পুরনো নোটের বোঝা খালি করতে পারেননি বলেই কিরণের কোল খালি করে চলে গেল তাঁর সদ্যোজাত শিশু। ওই শিশুর যমের দুয়ারে কাঁটা দিতে এগিয়ে এল না হাসপাতালও। ‘সেবাই যাঁদের ব্রত’, অভিযোগ, এগিয়ে আসেননি সেই ডাক্তাররাও! মাত্র ৫০০ টাকার জন্য! প্রধানমন্ত্রীর এক লহমার ঘোষণায় যে পুরনো ৫০০ টাকার নোট বাতিল হয়ে গিয়েছে বাজারে!

Advertisement

মুম্বইয়ের গোবান্দির বাসিন্দা জগদীশ আর কিরণ শর্মার জীবনে বুধবার ছিল সবচেয়ে অন্ধকার দিন। সৌজন্যে, পুরনো ৫০০ টাকার নোট। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বুধবার রাতে গোবিন্দার বাড়িতে হঠাৎই প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়ে যায় জগদীশের স্ত্রী কিরণের। তখনই পড়িমড়ি করে স্ত্রী কিরণকে নিয়ে কাছের জীবন জ্যোত হসপিটাল অ্যান্ড নার্সিংহোমে ছোটেন জগদীশ। সেখানেই একটি শিশু কন্যার জন্ম দেন কিরণ। কিন্তু জন্মের পরেই প্রবল জ্বরে কাবু হয়ে যায় শিশুটি। তখন শিশুটিকে ওষুধবিষুধ খাওয়ানোর প্রয়োজন হয়। ডাক্তাররা ওষুধবিষুধের নাম লিখে একটি স্লিপ ধরিয়ে দেন জগদীশের হাতে। হাসপাতালের ওষুধের দোকান থেকে সেগুলি তাঁরা তড়িঘড়ি কিনে আনতে বলেন জগদীশকে। তার আগে সন্তান প্রসব করানোর জন্য বিলটা মিটিয়ে যেতে বলা হয় জগদীশকে। বিল হয়েছিল ৬ হাজার টাকা। সেই টাকা মেটানোর জন্য খুচরো নোট ছাড়া জগদীশের কাছে ছিল বেশ কয়েকটা পুরনো ৫০০ আর ১০০০ টাকার নোট। জগদীশ সেগুলি দিয়েই তড়িঘড়ি হাসপাতালের বিল মিটিয়ে দিতে চান। কারণ, সেটা মেটাতে পারলেই তিনি জ্বরে কাবু শিশুটির জন্য ডাক্তারদের লিখে দেওয়া ওষুধবিষুধগুলি আনতে যেতে পারবেন। হাসপাতালের লোকজন বেশ ভাল করেই চিনতেন জগদীশ, কিরণকে। স্ত্রীকে বিভিন্ন সময় পরীক্ষা করাতে গত ৬ মাস ধরে ওই হাসপাতালেই নিয়ে যেতেন জগদীশ। কিন্তু হাসপাতালের কেউই জগদীশের কাছ থেকে সেই পুরনো ৫০০ আর ১০০০ টাকার নোটগুলি নিতে রাজি হননি। এমনকী, অসুস্থ শিশুটির জন্য বিল মেটানো বাকি রেখে জগদীশকে ওষুধ কিনতে যেতে দিতেও রাজি হননি তাঁরা। জগদীশ তখন তাঁদের বোঝাতে থাকেন, সরকার জরুরি প্রয়োজনে পুরনো নোট ব্যবহারের সময়সীমা বাড়িয়েছে। কিন্তু তাতে ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি। মায়া-দয়াও হয়নি। জগদীশের কথায়, ‘‘শিশুটিকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ারও অনুমতি দেননি আমাকে ডাক্তারবাবুরা।’’ এর পর ওষুধের অভাবেই বৃহস্পতিবার সদ্যোজাত শিশুটির মৃত্যু হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জগদীশের অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন। তবে ওই ঘটনার পর জগদীশ কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে স্থানীয় থানায় একটি এফআইআর করেছেন।

আরও পড়ুন- ব্যাঙ্কই নেই, নোট বদলাবে কোথায় মানুষ! নাভিশ্বাস উত্তর-পূর্বে

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন