বৈঠকে প্রতিনিধিরা। নিজস্ব চিত্র
মধ্যিখানে শুধু তিরতির করে বয়ে চলা মাথাভাঙা নদী।
তার দু’পারে একই ভাষাভাষির মানুষের বসবাস। কিন্তু দেশ দু’টো। দু’পারই বাঙালি। আগে তারা ছিল একটাই দেশ। আর আজ এ পার করতে করতে গেলে লাগে পাসপোর্ট-ভিসা। বানিজ্য করতে গেলে হাজারো অনুমতি।
এক সময় যে পথ দিয়ে অহরহ যাতায়াত চলত, চলত পণ্যবাহি লরি। আজ সেখানে বসেছে গেট। যার বাহারি নাম চেকপোস্ট। নিরাপত্তা বড় বালাই। তাই দাবি থাকলেও চেকপোস্টের সংখ্যা বাড়ে না। কিন্তু দু’পারের মানুষেরই চেকপোস্টের দাবি রয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। একটা যেখানে আগে পণ্য চলাচল চলতও।
দুই দেশের মধ্যে চেকপোস্ট বা স্থলবন্দরের তৈরি করে সড়কপথে যোগাযোগের প্রস্তাব নিয়ে বাংলাদেশের কুষ্টিয়া থেকে ১৩ সদস্যের একটি জনপ্রতিনিধি দল শুক্রবার করিমপুরে পৌঁছেছে। শনিবার তারা করিমপুর ১ বিডিওর সঙ্গে দেখা করে চেকপোস্ট তৈরির প্রয়োজনীয়তার কথা জানান।
বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার প্যানেল চেয়ারম্যান মহম্মদ নাসিরুদ্দিন বিশ্বাস বলেন, “দুই দেশের মানুষের ভাষা-সংস্কৃতি-খাদ্যাভাস হুবহু এক। বাংলাদেশের প্রাগপুর ও ভারতের শিকারপুর সীমান্ত দিয়ে একটি চেকপোস্ট হলে এলাকার অর্থনৈতিক পরিকাঠামোই পাল্টে যাবে। দু’পাড়ের বানিজ্য বাড়বে। কর্মসংস্থানও বাড়বে।’’ তিনি জানান, সেই বিষয়ে আলোচনা করতেই বাংলাদেশের শাসক দল আওয়ামি লিগের ১৩ জন সদস্য এ পারে প্রশাসনিক কর্তা-জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলতে এ পারে এসেছেন।
আরও পড়ুন: ভারতরত্নের প্রস্তাব কারিয়াপ্পাকে, ফের বিতর্কে সেনাপ্রধান
কুষ্টিয়া জেলার আওয়ামি লিগের সাংসদ আলহাজ রেজাউল হক চৌধুরীর পুত্র ও দলের সদস্য ইমরান চৌধুরীর কথায়, “ভারতের নিউ শিকারপুর ও প্রাগপুরের মধ্যে দূরত্ব মাত্র দুশো মিটার। দুই দেশের চুক্তি মত, মাথাভাঙা নদীর উপর একটি সেতু তৈরি হলেই দু’দেশের মধ্যে যাতায়াত সম্ভব। এখানে চেকপোস্ট তৈরির গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তার কথা সকলকে জানাতে এসেছি। বিশেষ করে উত্তর ভারতের দিল্লী, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড কিংবা বিহার থেকে পশ্চিমবঙ্গের শিকারপুর সীমান্ত হয়ে ঢাকার দূরত্ব অনেকটা কমে যাবে। কারণ, শিকারপুরের পাশে প্রাগপুর থেকে ঢাকার দূরত্ব ২০০ কিমি।’’
শিকারপুর থেকে কলকাতার দূরত্ব ২০০ কিমি। কুষ্টিয়ার বাসিন্দাদের বহু পথ উজিয়ে পেট্রোপোল বা হিলি সীমান্ত হয়ে আসতে হয়। আওয়ামিলীগের প্রাগপুর ইউনিয়নের সভাপতি সহিদুল হালসানা জানান, ওপারে প্রাগপুর থেকে সরাসরি ভেড়ামারা, ঈশ্বরদী, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল হয়ে ঢাকা যাওয়া যায়। শিকারপুর থেকে মাত্র সতেরো কিমি দূরে বাংলাদেশের ভেড়ামারা রেলওয়ে জংশন। ওখান থেকে খুব সহজেই বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে রেলপথে যাওয়া যায়।
করিমপুর ১-এর বিডিও সুরজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘চেকপোস্ট তৈরির প্রস্তাব জেলা শাসককে জানাব।’’