বিশ্ব যোগ দিবসের প্রচারেও হারাল না সঙ্গীতের সুর।
শিলচরে একই সঙ্গে পালিত হল বিশ্ব সঙ্গীত দিবসও।
গত শনিবার দু’দিন ব্যাপী যোগ শিবিরের উদ্বোধন করেছিলেন রাজ্যপাল পদ্মনাভ বালকৃষ্ণ আচার্য। তার ঠিক এক দিন আগে ‘দলছুট’-এর আয়োজনে শুরু হয় তিন দিনের বিশ্ব সঙ্গীত দিবস উদযাপন। শনি-রবিবার সে জন্য বঙ্গভবনে ছিল উপচে পড়া ভিড়। আয়োজকরা জানিয়েছেন, এই নিয়ে তাঁদের অনুষ্ঠান সাত বছরে পা দিল। প্রতি বারই মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়ায় তাঁরা আপ্লুত। বিশ্ব যোগ দিবসেও তাই সঙ্গীত-পিপাসুদের ভিড় জমেছে তাঁদের অনুষ্ঠানেও। সংগঠনের অন্যতম সদস্য বিশ্বরাজ ভট্টাচার্য ও পাপলু দাস জানান, এ বার তাঁরা একটি কর্মশালারও আয়োজন করেছিলেন। প্রশিক্ষক ছিলেন শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার। তিনিও কয়েকটি গান শোনান। সঙ্গে ছিলেন বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী ও কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য। তিন জনের ওই অনুষ্ঠানের নাম দেওয়া হয়েছিল— গানের ট্রায়াঙ্গল। পরে তাতে সামিল হন শিল্পী কমলেশ ভট্টাচার্য। কথায়-গানে বেশ জমজমাট আসর বসে। গানের ফাঁকে ফাঁকে শিল্পীরা তাঁদের পুরনো দিনের গল্প শোনান। এক মনে তা হয়ে শুনছিলেন দর্শক-শ্রোতারা।
গত শুক্রবার তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে গোলদীঘি মলের বাতায়নে অনুষ্ঠিত হয় ‘গান ফেস টু ফেস’। বাংলা গানের প্রতি নতুন প্রজন্ম উদাসীন— সেই অভিযোগ যে সত্যি নয় তা প্রমাণ করে দেন আয়োজকরা। বিতানস, মায়াবী, কালকূট, আদৃষ্টা, উইনিং দ্য কোর্ট, ম্যাডলি বাঙালি—শিলচরে গড়ে ওঠা বাংলা-ব্যান্ডের শিল্পীরা আসর মাতিয়ে দেন। ছিল একক সঙ্গীতও। কাছাড়ের জেলাশাসক এস বিশ্বনাথন সংগঠনের ওয়েবসাইট চালু করেন। তিনি নিজেও তাঁর মাতৃভাষায় দু’টি তামিল গান পরিবেশন করেন। দলছুটের একটি অ্যালবামও উন্মোচিত হয়। উন্মোচন করেন বাংলাদেশের শ্রীহট্টের নৃত্যশৈলীর প্রধান আমিরুল ইসলাম বাবু, শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার ও বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
তৃতীয় দিন রবিবার ছিল শুধু দলছুটের অনুষ্ঠান। প্রথম দু’দিনের ভাল লাগাই বিশ্ব যোগ দিবসেও দর্শকদের টেনে নিয়ে এসেছিল বঙ্গভবনে। কোনও আসন ফাঁকা পড়ে নেই। শিল্পীরাও আড়াই ঘণ্টায় নিজেদের উজাড় করে দেন। হল ছেড়ে বেরিয়ে যেতে-যেতে অনেকেই বলছিলেন— তিন দিনের এমন আয়োজনের পর দলছুটের সদস্যরা এমন একটি অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি হলেন কী ভাবে! সায়ন বিশ্বাস, বিশ্বরাজ ভট্টাচার্য, তমাল চক্রবর্তী, দিব্যেন্দু সোম, রূপরাজ দেব, সুদীপ্ত চক্রবর্তী, দেবাশিস চক্রবর্তী, পাপলু দাস, রাজীব পালচৌধুরী, কানাইলাল দাস, জুয়েল চৌধুরী ও বিশ্বজিত দেবরা সে দিন গানে-বাজনায় সকলকে মাতিয়ে দেন। বদরপুরে থিয়েটার ওয়ার্কশপও রবিবার নানা অনুষ্ঠানে বিশ্ব সঙ্গীত দিবস পালন করে।