প্রতীকী ছবি।
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের সব প্রত্যাশা ও হিসেবনিকেশ ছাপিয়ে চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে জাতীয় বৃদ্ধি (জিডিপি)-র হার পৌঁছে গিয়েছে ৮.২ শতাংশে। যা গত অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে ছিল মাত্র ৫.৬ শতাংশ।
উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে গ্রস ভ্যালু অ্যাডেড (জিভিএ)-এর হারও। পৌঁছেছে ৮ শতাংশে। গত অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকের চেয়ে যা অন্তত আড়াই শতাংশ বেশি। ২০১৬ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকের পর আর দেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার এতটা বাড়েনি।
কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান অফিসের তরফে এক বিবৃতিতে শুক্রবার এ কথা জানানো হয়েছে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি হয়েছে উৎপাদন ও নির্মাণ শিল্প, বিদ্যুৎ, গ্যাস, জল সরবরাহ ও প্রতিরক্ষা-সহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে। ওই সবক’টি ক্ষেত্রেই বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশের বেশি। বৃদ্ধির হার অনেকটাই তেজি কৃষি, মৎস্যচাষ ও বনসৃজনে। খনি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, হোটেল, পরিবহণ, যোগাযোগের মতো ক্ষেত্রগুলিতেও বৃদ্ধির হার উল্লেখযোগ্য বলে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন- এনডিএ জমানার চেয়ে এগিয়ে ইউপিএ আমল, প্রচারের জোরে সত্য ঝাপসা করার চেষ্টা
আরও পড়ুন- পেটে ভাত থাকলে তবেই বৃদ্ধি ১০%, বললেন নীতি আয়োগের সিইও
গত অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার ছিল ৭.৭ শতাংশ। তার আগের ত্রৈমাসিকে সেই বৃদ্ধির হার ছিল ৭ শতাংশ। তার আগের ত্রৈমাসিকেও বেড়েছিল দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার। এই পরিসংখ্যান থেকে এটা স্পষ্ট, গত কয়েকটি ত্রৈমাসিকে দেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার উত্তরোত্তর বেড়েছে। তবে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা এ বার হিসেব কষে জানিয়েছিলেন, চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে জিডিপি বৃদ্ধির হার ৭.৫ থেকে ৭.৬ শতাংশের মধ্যেই থাকবে। তাঁদের বক্তব্য ছিল, দেশের ২০১৬ সাল থেকে জিডিপি বৃদ্ধির হার যতটা বাড়া উচিত ছিল, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নোটবন্দি অভিযানের জন্য তা ততটা বাড়তে পারেনি।
কিন্তু কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান অফিসের তরফে দেওয়া এ দিনের বিবৃতি জিডিপি বৃদ্ধির হার নিয়ে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের যাবতীয় প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে গেল।
বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, এটা সম্ভব হয়েছে উৎপাদন, নির্মাণ শিল্প, বিদ্যুৎ, গ্যাসে জিডিপি বৃদ্ধির হার চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে ৭ শতাংশ ছাপিয়ে যাওয়ায়।
দেশের জিডিপি বৃদ্ধির এই হার আরও নজর কেড়েছে এই কারণে যে, বিশ্বের দ্বিতীয় শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ চিনে জুন ত্রৈমাসিকে জিডিপি বৃদ্ধির হার হয়েছে ৬.৭ শতাংশ। আগের ত্রৈমাসিকের চেয়ে তা কমেছে। চিনে মার্চ ত্রৈমাসিকে জিডিপি বৃদ্ধির হার ছিল ৬.৮ শতাংশ।
বিশ্ব ব্যাঙ্কের দেওয়া পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, গত বছরেই অর্থনৈতিক শক্তিতে ফ্রান্সকে টপকে গিয়ে বিশ্বের শক্তিশালী অর্থনীতির প্রথম ৬টি দেশের তালিকায় ঢুকে পড়েছে ভারত। সামনে ব্রিটেন থাকলেও অর্থনৈতিক শক্তিতে ব্রিটেনের চেয়ে খুব একটা পিছিয়ে নেই ভারত।