মোদীর নির্দেশ, হরিদাসপুর চেক পোস্ট সাজছে

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের মফস্বল শহর বনগাঁ এই মুহূর্তে সাউথ ব্লকের নেক নজরে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের হিসাব বলছে, গত কয়েক মাসে যত বিদেশি ভারতে এসেছেন, সেই ‘এন্ট্রি পয়েন্ট’-এর তালিকায় বনগাঁর হরিদাসপুর সীমান্ত চেক পোস্টটি তৃতীয়।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৫ ০৩:১১
Share:

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের মফস্বল শহর বনগাঁ এই মুহূর্তে সাউথ ব্লকের নেক নজরে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের হিসাব বলছে, গত কয়েক মাসে যত বিদেশি ভারতে এসেছেন, সেই ‘এন্ট্রি পয়েন্ট’-এর তালিকায় বনগাঁর হরিদাসপুর সীমান্ত চেক পোস্টটি তৃতীয়। অর্থাৎ গত তিন মাসে দিল্লি এবং মুম্বই বিমানবন্দরের পরেই স্থান পশ্চিমবঙ্গের এই এন্ট্রি পয়েন্টটি (পেট্রাপোল-বেনাপোল)। মাসে এক লাখেরও বেশি লোক আসছেন এই পয়েন্টটি দিয়ে। কিন্তু প্রবল চাপ থাকা সত্ত্বেও এখানকার পরিকাঠামোর অভাব নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, খামতি দূর করার জন্য অবিলম্বে কাজ শুরু করতে। নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফরের পরই এ ব্যাপারে নড়াচাড়া শুরু হয়ছে।

Advertisement

বিদেশ মন্ত্রক ঘরোয়া ভাবে স্বীকার করছে, কলকাতা থেকে মাত্র ৮০ কিলোমিটার দূরে এই স্থলবন্দরটি হওয়া সত্ত্বেও প্রাথমিক পরিকাঠামো সেখানে এখনও তৈরি হয়নি। যাত্রীদের কোনও ওয়েটিং রুম নেই, ঠিকমতো জল খাওয়ার ব্যবস্থা বা শৌচালয়টুকুও নেই। ভারতীয় ইমিগ্রেশন কর্মীর সংখ্যাও লোকসংখ্যার তুলনায় সামান্যে। বিদেশ মন্ত্রকের হিসাব বলছে, গত মে মাসে ৫ লাখেরও বেশি মানুষ এসেছেন এখান দিয়ে। এখানকার ‘ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন’টিকে উন্নত মানের করা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল, ওয়েটিং রুম-এর অবস্থা যে খুবই খারাপ, তা-ও স্বীকার করছে সরকার। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের পর এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কটিকে ঘিরে আমলা স্তরে উভয় তরফেই ইতিবাচক অগ্রগতি শুরু হয়েছে। ঢাকায় দাঁড়িয়ে দু’দেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর ডাক দিয়ে এসেছেন নরেন্দ্র মোদী। তার পরই বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে দেখা হচ্ছে।

তুলনামূলক হিসাবে দেখা যাচ্ছে মার্চ থেকে মে— এই তিন মাসে দিল্লি বিমানবন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছেন মোট বিদেশি পর্যটকের ৩০ শতাংশ। মুম্বই বিমানবন্দর দিয়ে এই প্রবেশের হার ১৭ শতাংশ। এর পরেই রয়েছে হরিদাসপুর স্থলবন্দর। এখান দিয়ে ভারতে ঢুকেছেন ১০ শতাংশ বিদেশি, অবশ্যই তাঁদের প্রায় সকলে বাংলাদেশি। এর পরে রয়েছে বেঙ্গালুরু বা কোচির বিমানবন্দর। আরও একটি তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য হল— গত এক মাসে ভারতে মোট আসা বিদেশিদের মধ্যে সব চেয়ে বেশি মানুষ এসেছেন বাংলাদেশ থেকে। এ ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে আসা অতিথিদের সংখ্যায় ব্রিটেন-আমেরিকাকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ। দেখা যাচ্ছে, মে মাসে ১৯.৩২ শতাংশ মানুষ এসেছেন বাংলাদেশ থেকে। তুলনামূলক ভাবে আমেরিকা থেকে এসেছেন ১৬.৯৯ শতাংশ, ব্রিটেন থেকে আগত অতিথির হার ৭.৭৯ শতাংশ। আর এই বাংলাদেশিদের অধিকাংশই ঢুকছেন হরিদাসপুর দিয়ে।

Advertisement

বিদেশ মন্ত্রকের মতে, বাংলাদেশের যশোর শহর নাগালের মধ্যে বলেই হরিদাসপুরের এই জনপ্রিয়তা। আবার কলকাতা থেকেও এই পয়েন্টটি খুব কাছে। বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘আগে আমরা স্বল্প মেয়াদের জন্য সিঙ্গল এন্ট্রি ভিসা দিতাম। ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে দীর্ঘমেয়াদি মল্টিপল এন্ট্রি ভিসা দেওয়ার ফলে এমনিতেই বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে। এঁদের অনেকেই আসেন চিকিৎসার জন্য। হরিদাসপুর থেকে ট্রেনে শিয়ালদহ পৌঁছে প্রয়োজন মতো ভারতের বিভিন্ন জায়গায় চলে
যান তাঁরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন