পাছে বিড়ম্বনা বাড়ে, বিদেশে সভাহীন মোদী

২৪ তারিখ ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। তিন দিনের সফরে ব্রিকস কর্মসূচির বাইরে একটিও সভা করবেন না ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের সঙ্গে। অথচ দু’বছর আগে এই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়েই রীতিমতো জাঁকজমক করে প্রবাসীদের নিয়ে সভা করেছিলেন মোদী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৮ ০৪:৩৮
Share:

জমছে না ভিড়। উল্টে বাড়ছে বিতর্ক। লোকসভা ভোটের আগে তাই বিদেশ সফরে গেলেও ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের সঙ্গে ঘটা করে জনসভা করবেন না নরেন্দ্র মোদী। ২৪ তারিখ ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। তিন দিনের সফরে ব্রিকস কর্মসূচির বাইরে একটিও সভা করবেন না ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের সঙ্গে। অথচ দু’বছর আগে এই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়েই রীতিমতো জাঁকজমক করে প্রবাসীদের নিয়ে সভা করেছিলেন মোদী। সে দেশে তাঁদের সংখ্যা কম নয়, প্রায় ১৫ লক্ষ।

Advertisement

কিন্তু রাজনৈতিক সূত্রের খবর, বিজেপি বেশ বুঝতে পারছে, মোদী সরকার প্রবাসী ভারতীয় ও ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের কাছে জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে মোদীর বিদেশ সফর নিয়ে কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না তারা। বিশেষ করে গত এপ্রিলে লন্ডনে ও জুনে মোদীর সিঙ্গাপুর সফরের অভিজ্ঞতার পরে।

গত এপ্রিলে লন্ডন সফরে গিয়ে মোদীকে প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল। পরের ধাক্কা সিঙ্গাপুরে। গত ১ জুন সেখানে নানইয়াং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোদী খোলামেলা আলোচনা করবেন মোদী— এমনটাই প্রচার করা হয়েছিল। বাস্তবে দেখা যায়, প্রশ্নগুলি সাজানো। জবাবে মোদী হিন্দিতে যা বলছেন, ইংরেজি তর্জমায় অনুবাদক বলছেন ঢের বেশি। যার অর্থ, প্রশ্নোত্তরের ইংরেজি তর্জমা আগে থেকেই ছিল আনুবাদকের কাছে। এই ‘সাজানো’ আলাপচারিতা নিয়ে মোদী ও বিজেপিকে ভাল রকম কোণঠাসা হতে হয় বিরোধীদের কাছে।

Advertisement

২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পরে মোদী যেখানেই গিয়েছেন, বিজেপির ‘ফরেন সেল’ প্রবাসীদের নিয়ে রীতিমতো যজ্ঞের আয়োজন করেছে সেখানে। কিন্তু বিদেশ মন্ত্রক সূত্রেই ঘরোয়া ভাবে জানানো হচ্ছে, মোদী সরকারের প্রথম দু’বছরে বিভিন্ন দেশে ভারতীয়দের নিয়ে সভায় যত ভিড় হত, তা ক্রমেই ফিকে হয়ে আসছে। বিরোধী মতকে উপেক্ষা, ধর্মীয় অহিষ্ণুতা, জাতপাতের সংঘর্ষ, বেশ কিছু ক্ষেত্রে চাপিয়ে দেওয়ার নীতি— এই সব তকমা লেগে গিয়েছে সরকারের গায়ে। যে কারণে বিদেশে টাল খাচ্ছে মোদীর ভাবমূর্তি।

বিরোধীদের মতে, গত চার বছরে মোদী ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে স্বপ্ন দেখিয়েছেন প্রবাসীদের। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, শীঘ্রই দেশের বিকাশের সুফল ভোগ করতে পারবেন ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা। কিন্তু ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে, এগুলি নিছকই ফাঁপা বুলি। কানাডায় প্রধানমন্ত্রীর সফরে যে বিরাট প্রবাসী সমাবেশ হয়েছিল, সেখানে আর্থিক তছরুপ হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে বিজেপির অন্দরে। এমন ক্ষোভও দানা বাঁধছে যে, ভারতীয় দূতাবাসগুলি একটি বিশেষ ভাষাভাষী সম্প্রদায়কে (গুজরাতি) বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে স্যাম পিত্রোদা এবং মিলিন্দ দেওরাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন দেশে ভারতীয়দের কাছে পৌঁছাতে। কংগ্রেসের দৃষ্টিকোণ থেকে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তাঁদের সামনে তুলে ধরতে। তেলুগু দেশম এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেসও বিদেশের তেলুগু সম্প্রদায়ের সঙ্গে বিভিন্ন ভাবে যোগাযোগ রাখা শুরু করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন