মাওবাদী চিন্তাধারায় বিশ্বাস করা অপরাধ নয় বলে রায় দিল কেরল হাইকোর্ট। কেবল মাওবাদী সন্দেহে কাউকে আটক করা যায় না বলেও জানিয়ে দিয়েছে বিচারপতি এ মহম্মদ মুস্তাকের বেঞ্চ।
মাওবাদী সন্দেহে শ্যাম বালকৃষ্ণন নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছিল কেরল পুলিশের বিশেষ স্কোয়াড। রেহাই পেতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। হাইকোর্ট আজ জানিয়েছে, মাওবাদী চিন্তাধারা ভারতের সাংবিধানিক কাঠামোর সঙ্গে খাপ খায় না। কিন্তু কেউ সেই চিন্তাধারায় বিশ্বাস করলেই তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা যায় না। কোনও ব্যক্তি হিংসার আশ্রয় নিলে তবেই নিরাপত্তাবাহিনী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে।
বিচারপতি মুস্তাক জানিয়েছেন, শ্যাম বালকৃষ্ণনের বিরুদ্ধে কোনও বেআইনি কাজে যুক্ত থাকার প্রমাণ দিতে পারেনি পুলিশ। তদন্তকারীদের কাজকর্ম দেখে স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে, শ্যামের মাওবাদী যোগ রয়েছে সন্দেহ করেই তাকে আটক করা হয়েছিল।
শ্যামকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১ লক্ষ টাকা দিতে কেরল সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে মামলার খরচ হিসেবে ১০ হাজার টাকাও দিতে হবে রাজ্যকে। তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার নির্দেশ দিতে অবশ্য অস্বীকার করেছেন বিচারপতি মুস্তাক।
তবে কেরল সরকারের কড়া সমালোচনা করেছে বেঞ্চ। বিচারপতি মুস্তাকের মতে, রাষ্ট্রের যে কোনও প্রতিষ্ঠানই মানুষ চালায়। প্রতিষ্ঠানের কাজে ভুল হতেই পারে। কিন্তু সেই ভুল স্বীকার করে দায়িত্ব নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে কেরল সরকার শ্যামের বিরুদ্ধে পুলিশি পদক্ষেপের পক্ষে সওয়াল করে গিয়েছে। ব্যক্তির স্বাধীনতার মূল্য দিতে হবে। ভাবনাচিন্তা করে কাজ করতে হবে পুলিশকে। বিচারপতি মুস্তাকের কথায়, ‘‘দায়িত্বশীল সরকার এই ভুলের জন্য ক্ষমা পর্যন্ত চায়নি। বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক।’’