শিল্পীর হাতে। মাঝরাস্তায় তৈরি হয়েছে কৃত্রিম পুকুর। রয়েছে কুমিরও। শুক্রবার বেঙ্গালুরুতে। ছবি: পিটিআই।
শহরের রাস্তা ভর্তি খানাখন্দে। চলতি বর্ষার জলে রাস্তার অবস্থা আরও বেহাল। সে সব দেখেই বেঙ্গালুরুর এক শিল্পী রাজ্য সরকারের দৃষ্টি আর্কষণ করতে তৈরি করলেন আস্ত একটা কুমির। আর তার পরেই নড়েচড়ে বসল প্রশাসন।
রাত পোহাতেই শুরু হল রাস্তা মেরামতির কাজ।
শিল্পী বাদল নানজুন্দাস্বামীর এই প্রতিবাদে গত কাল থেকে এই কুমির নিয়ে সরগরম বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া। সংবাদমাধ্যমকে শিল্পী জানিয়েছেন, শহরের রাস্তাগুলির অবস্থা দেখে খারাপ লেগেছিল তাঁর। রাস্তার কোথাও বড় বড় গর্ত। আবার কোথাও কোথাও জলের পাইপ লাইনের অসমাপ্ত কাজ। তাই তিনি রাস্তার গর্তে ছোট কৃত্রিম পুকুর বানিয়ে তাতে আস্ত একটি কুমির তৈরি করে শহরের বাসিন্দাদের অবাক করে দিলেন।
এক মাস ধরে বেঙ্গালুরুর রাস্তা ভিজছে বৃষ্টিতে। জায়গায় জায়গায় জমছে জল। এই বৃষ্টি এবং জলের পাইপ লাইনের কাজই রাস্তায় তৈরি হওয়া গর্তের মূল কারণ। শহরের একটি অন্যতম ব্যস্ত রাস্তার বেহাল দশার কথা জেনেও সরকার কাজের কাজ কিছু করছিল না বলে অভিযোগ শিল্পীর। বৃহস্পতিবার তিনি জানান, এই প্রতিবাদের পরে সরকারের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ করা।
বছর ছত্রিশের শিল্পী বাদলের এই কুমির তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় ছ’হাজার টাকা। কুমিরটি লম্বায় প্রায় ন’ফুট। শিল্পীর এই কাণ্ড-কারখানা দেখে স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় আস্ত একটা কুমির দেখে আঁতকে উঠেছিলাম। বোঝাই যাচ্ছে না ওটা নকল।’’
তবে বেঙ্গালুরুর শিল্পীর এই ধরনের অভিনব প্রতিবাদ এটাই প্রথম নয়। গত বছর তিনি লক্ষ করেন, গোটা শহর জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় বেশ কয়েকটি ম্যান হোলের মুখ খোলা রয়েছে। তার পরেই সেই মৃত্যু-ফাঁদ বন্ধ করতে নিজের শিল্পকর্মকে কাজে লাগিয়েছিলেন তিনি।
শিল্পীর প্রতিবাদ করার পরে গত বারের মতো এ বারও এক দিনের মধ্যে কাজের কাজটা হল। শুক্রবার সকাল থেকে তা-ই শহরের ব্যস্ত রাস্তাগুলিতে গর্ত মেরামতির কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। শিল্পী বলেছেন, ‘‘আমাদের প্রত্যেকের নিজের নিজের একটা প্রতিবাদের ধরন থাকে। আমি আমার শিল্পকেই প্রতিবাদের হাতিয়ার করেছি।’’