ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।
ছ’মাস ধরে ডিজিটাল অ্যারেস্ট করে রেখেছিল ‘সিবিআই’! তিনি যে নির্দোষ, তা প্রমাণ করতে একাধিক বার বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে বলা হয়েছিল। সেই ফাঁদে পা দিয়ে প্রায় ৩২ কোটি টাকা খোয়ালেন বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা এক প্রৌঢ়া। গত বছরের শেষের দিকে বেঙ্গালুরুতে ঘটনাটি ঘটেছে। চলতি বছরের মাঝামাঝি বিষয়টি বুঝতে পারেন ওই মহিলা। গত ১৪ নভেম্বর সাইবার অপরাধ দমন শাখায় এফআইআর দায়ের করা হয়।
জানা গিয়েছে, ৫৭ বছর বয়সি ওই প্রৌঢ়ার কাছে ২০২৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর একটি ফোন আসে। অপর প্রান্ত থেকে নিজেকে ডিএইচএল আধিকারিক হিসাবে পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি জানান, মুম্বইয়ের অন্ধেরি থেকে ওই প্রৌঢ়ার নামে একটি পার্সল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তাতে চারটি পাসপোর্ট, তিনটি ক্রেডিট কার্ড এবং নিষিদ্ধ মাদক রয়েছে। এর পর এক ‘সিবিআই কর্তা’ ওই প্রৌঢ়াকে ফোন করেন। তিনিই জানান, ওই মহিলাকে ডিজিটাল গ্রেফতার করা হচ্ছে। এ বিষয়ে কাউকে জানালে বা পুলিশের কাছে গেলে হিতে বিপরীত হবে। ভয়ে সে কথা বিশ্বাস করে নেন ওই প্রৌঢ়া।
এর পর শুরু হয় টাকা আদায়ের পালা। মহিলাকে বলা হয়, বাঁচার একমাত্র উপায় হল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে সম্পত্তির সমস্ত বিবরণ জমা দেওয়া। এক মাসের মধ্যে ওই প্রৌঢ়া তাঁর ব্যাঙ্ক আমানত ও সম্পত্তির তথ্য প্রতারকদের কাছে জমা দেন। এর পর প্রতারকেরা দাবি করে, ‘ক্লিনচিট’ পেতে হলে আপাতত সম্পত্তির ৯০ শতাংশ জমা রাখতে হবে তাঁকে। সঙ্গে জামিন বাবদ জমা দিতে হবে অতিরিক্ত ২ কোটি টাকা। নির্দোষ প্রমাণিত হলে জমা দেওয়া টাকা ফেব্রুয়ারির মধ্যে ফেরত দেওয়া হবে। এই ভাবে প্রায় ছ’মাস ধরে দফায় দফায় ১৮৭টি লেনদেনের মাধ্যমে মোট ৩১ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকা প্রতারকদের পাঠান ওই প্রৌঢ়া। কিন্তু চলতি বছরের মাঝামাঝি আচমকা সব যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় প্রতারকেরা। এর পরেই ওই মহিলা বিষয়টি বুঝতে পারেন। দ্বারস্থ হন সাইবার অপরাধ দমন শাখার। ইতিমধ্যে ওই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। খোয়া যাওয়া টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।