Bifurcation of J&K

৩৭০ রদে লাভ হবে কাশ্মীরের: রাষ্ট্রপতি

সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করার পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর জাতির উদ্দেশে বক্তৃতায় ‘নয়া ভারত, নয়া জম্মু-কাশ্মীর, নয়া লাদাখ’-এর স্বপ্ন তুলে ধরেছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৯ ০৩:৫১
Share:

কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে বললেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। ছবি: পিটিআই।

‘নয়া ভারত’।

Advertisement

আজ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে লালকেল্লার র‌্যামপার্টের সামনে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের সাদা ও নীল রঙের পোশাকে এমন ভাবে বসানো হবে, যাতে সাদার মধ্যে নীল রঙে ‘নয়া ভারত’ লেখা ফুটে উঠবে।

সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করার পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর জাতির উদ্দেশে বক্তৃতায় ‘নয়া ভারত, নয়া জম্মু-কাশ্মীর, নয়া লাদাখ’-এর স্বপ্ন তুলে ধরেছিলেন। স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের মহড়া থেকে স্পষ্ট, লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পরেও সেই ‘নয়া ভারত’-এর কথাই বলতে চলেছেন তিনি।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচি মোটের উপরে ছকা হলেও বিজেপি সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কাল কী করবেন তা বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। জানা গিয়েছে, বিজেপি দফতরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবেন দলের কার্যনির্বাহী সভাপতি জে পি নড্ডা। কারও কারও মতে অমিত কাশ্মীরে পতাকা তুলে চমক দিতে পারেন। যদিও তাঁর দফতর সূত্রে এ ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি।

স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে আজ রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ তাঁর বক্তৃতায় বলেছেন, ‘‘আমি নিশ্চিত, জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখে সাম্প্রতিক পরিবর্তনের ফলে ওই অঞ্চলের বিপুল লাভ হবে। এর ফলে ওখানকার মানুষ দেশের বাকি অংশের নাগরিকদের মতোই সমান সুবিধা, সমান অধিকার, সমান ক্ষমতা উপভোগ করতে পারবেন। এর মধ্যে শিক্ষার অধিকার, তথ্যের অধিকার, শিক্ষা-চাকরিতে
সংরক্ষণের মতো প্রগতিশীল, সমানাধিকারের আইনও থাকবে। তাৎক্ষণিক তিন তালাক রদের মতো মেয়েদের ন্যায় দেওয়ার ব্যবস্থাও সেখানে চালু হবে।’’

রাজনীতিকরা বলছেন, ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করার পরে মোদী সরকার কাশ্মীরে যে উন্নয়ন পৌঁছে দেওয়ার কথা বলছে, আজ রাষ্ট্রপতির বক্তৃতাতেও তার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে। কিন্তু আজই কাশ্মীর থেকে ঘুরে আসা সমাজ-কর্মী ও রাজনৈতিক কর্মীদের প্রতিনিধি দলের সদস্য অর্থনীতিবিদ জঁ দ্রেজ দাবি করেছেন, কাশ্মীরে যে সামাজিক উন্নয়ন থমকে রয়েছে এমন নয়। বরং বিহার, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ডের মতো অনেক রাজ্যের তুলনায় জম্মু-কাশ্মীর আর্থ-সামাজিক মাপকাঠিতে অনেক এগিয়ে।

দ্রেজর যুক্তি, শিশুমৃত্যুর হার, স্কুল পড়ুয়া ছাত্রীর হার, কম ওজনের শিশুর হারের মতো বহু মাপকাঠিতেই জম্মু-কাশ্মীরের ছবিটা গুজরাতের তুলনাতেও ভাল। সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ থাকার ফলেই সেখানে দারিদ্র কমানো সম্ভব হয়েছে।
জম্মু-কাশ্মীরের নিজস্ব সংবিধান ছিল বলেই সেখানে পঞ্চাশের দশকে ভূমি সংস্কার করে জমি বণ্টন করা হয়েছিল। দেশের সংবিধানে
তা করা যেত না। অর্থনীতিবিদরা প্রশ্ন তুলেছেন, মোদী সরকার জম্মু-কাশ্মীরে নতুন লগ্নির কথা বলছেন। যেখানে দেশের বাকি অংশেই নতুন লগ্নি হচ্ছে না, সেখানে জম্মু-কাশ্মীরে কে যাবে?

রাষ্ট্রপতির বক্তৃতায় আজ ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতির কথা বিশেষ কথা না থাকলেও, তিনি সদ্য শেষ হওয়া সংসদের অধিবেশনে ‘সব দলের সহযোগিতা’-য় বহু গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁর যুক্তি, আগামী পাঁচ বছরে কী হবে, এটা তারই ইঙ্গিত। রাষ্ট্রপতি বলেছেন, যাঁরা দেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, তাঁরা স্বাধীনতা অর্থে শুধু রাজনৈতিক ক্ষমতার হস্তান্তর বোঝেননি। তাঁরা একে রাষ্ট্রনির্মাণের প্রথম ধাপ ভেবেছিলেন। তাঁদের লক্ষ্য ছিল প্রতিটি ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজের জীবনযাত্রার উন্নতি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন