যোগের বদলা খাদি!
নরেন্দ্র মোদীর যোগ-রাজনীতির পাল্টা হিসেবেই খাদিকে তুলে ধরতে উদ্যোগী হলেন নীতীশ কুমার। বিহার সরকারের তরফে মুখ্যসচিব অঞ্জনি কুমার সিংহ আজ এই মর্মে একটি নির্দেশিকাও জারি করেছেন। সপ্তাহে অন্তত দু’দিন সরকারি কর্মী-অফিসারদের অফিসে খাদি পরে আসার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। রাজ্যের খাদ্য মন্ত্রী শ্যাম রজক বলেন, ‘‘আমরা গাঁধীবাদী। খাদি পরেই আমাদের দেশের স্বাধীনতার আন্দোলন শুরু হয়েছে। আমরা তাই খাদির প্রচার করেই নাথুরাম গডসের সমর্থকদের জবাব দেব। খাদির ব্যবহারে গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। মানুষের রোজগার বাড়বে। সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত।’’
মন্ত্রী এ কথা বললেও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, বিহার নির্বাচনের আগে, গোটা রাজ্য জুড়়ে যোগের ভালই প্রভাব পড়েছে। অরাজনৈতিক মানুষদের কাছে বার্তা পৌঁছতেও সফল হয়েছে কেন্দ্র সরকার। স্বাভাবিক ভাবেই নির্বাচনের আগে তার থেকে লাভ ঘরে তুলবে বিজেপি। পরিস্থিতি সামাল দিতেই যোগের পাল্টা হিসেবে খাদি নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছে বিহার সরকার। জেডিইউ কর্মীদেরও এ বিষয়ে প্রচার করতে বলা হয়েছে।
১৯২০ সালে স্বদেশি আন্দোলনের অংশ হিসেবে খাদি বা খদ্দরের কাপড় পরার রীতি শুরু হয়। মহাত্মা গাঁধী এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। বিদেশে তৈরি কাপড় বর্জন করে দেশেই চরকায় সুতো তৈরি করায় জোর দেন তিনি। সেই আন্দোলন জনপ্রিয় হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলি খাদি বোর্ড তৈরি করে। বিহার নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিজয়রথকে রুখতে সেই খাদিকেই হাতিয়ার করে এগোতে চাইছেন নীতীশ কুমার।
বিহার সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও আসতে শুরু করেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজ্যের এক সচিব বলেন, ‘‘এ ভাবে পোশাক বিধি তৈরি করার নির্দেশ কোনও সরকার দিতে পারে না। নির্বাচনী লড়াইয়ে সরকারি কর্মীদের সামিল করার চেষ্টা কিন্তু ব্যুমেরাং হয়ে ফিরে আসতে পারে।’’
তবে সরকার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেও বিরোধীদের অভিযোগ, দু’বছর ধরে বিহার খাদি বোর্ডের কোনও চেয়ারম্যান নেই। কিছু দিন আগে যুগ্ম অধিকর্তা (শিল্প) বি এন প্রসাদকে বোর্ডের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিকের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সরকারের নির্দেশের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন।
তাঁর বক্তব্য, ‘‘রাজ্যে ৮৪টি খাদি সংস্থা রয়েছে। তাদের সকলের অবস্থাই খুব খারাপ। কাজ চালানোর মতো মূলধনের অভাব রয়েছে। তবে আমরা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি।’’