প্যাকেজ-যুদ্ধে নীতীশের অস্ত্র ২.৭ লক্ষ কোটি

এ বার প্যাকেজ বনাম প্যাকেজ। দু’টোই বিহারের জন্য। একটির উদ্গাতা যদি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হন, তবে দ্বিতীয়টির পরিকল্পনাকার মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। এক দিকে, ১ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকার হাতছানি। অন্য দিকে, ২ লক্ষ ৭০ হাজার কোটির আশাতীত লক্ষ্য।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পটনা শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৫ ০৩:১৪
Share:

এ বার প্যাকেজ বনাম প্যাকেজ। দু’টোই বিহারের জন্য। একটির উদ্গাতা যদি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হন, তবে দ্বিতীয়টির পরিকল্পনাকার মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। এক দিকে, ১ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকার হাতছানি। অন্য দিকে, ২ লক্ষ ৭০ হাজার কোটির আশাতীত লক্ষ্য। প্রাক্-নির্বাচনী বিহারে লক্ষ-কোটির এই ভোটার টানাটানির খেলায় শেষ পর্যন্ত কে জিতবেন, মোদী না নীতীশ— তা নিয়ে ধন্দে রাজ্য-রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা।

Advertisement

কয়েক দিন আগে আরায় এসে প্রধানমন্ত্রী বিহারের জন্য তাঁর সওয়া এক লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজটি ঘোষণা করে গিয়েছেন। তা নিয়ে চ্যালেঞ্জ-পাল্টা চ্যালেঞ্জ কয়েক দিন ধরেই চলছে। নির্বাচনমুখী বিহারের রাজনীতি ঘুরপাক খাচ্ছে এই প্যাকেজকে ঘিরেই। কার্যত মোদীর প্যাকেজ-এর মোকাবিলা করতে আজ মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ঘোষণা করেছেন তাঁর ‘পঞ্চবার্ষিকী প্যাকেজ’। নীতীশ জানান, ক্ষমতায় এলে আগামী পাঁচ বছরে বিহারের উন্নয়নে তিনি ২ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকা খরচ করবেন। তবে সরকারি সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের আধিকারিকরা নীতীশের এই ‘পঞ্চবার্ষিকী প্যাকেজ’ নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় পড়েছেন। কী ভাবে, কোন খাত থেকে এই টাকা আসবে তা নিয়ে অবশ্য নীতীশ কুমার কোনও ব্যাখ্যা দেননি। এ নিয়ে কোনও প্রশ্নের উত্তরও দিতে চাননি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী।

বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার অনেকটা জুড়ে রয়েছে যুবকদের জন্য নানা প্রকল্পের কথা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যে সমস্ত যুবক কাজ পাননি তাঁদের ভাতা দেওয়া হবে। ২০ থেকে ২৫ বছরের যুবকদের মাসে এক হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।’’ নীতীশের যুক্তি, এই টাকায় তাঁরা কাজ খুঁজতে সক্ষম হবেন। এ ছাড়া, জেলায় জেলায় কর্মসংস্থান কেন্দ্র খোলা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। ছাত্রদের পড়াশোনার জন্য স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থাও করবে সরকার। এখানেই শেষ নয়। বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজে বিনামূল্যে ওয়াইফাই পরিষেবা দেওয়ার পরিকল্পনাও ঘোষণা করেছেন তিনি। তার জন্য ৫০০ কোটি টাকার তহবিল তৈরি করা হবে। সেই তহবিল থেকে যুবকদের ব্যবসা করার জন্যও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

Advertisement

মহিলা ভোটারদের নিজেদের দিকে টানতেও উদ্যোগী হয়েছেন নীতীশ। সরকারি চাকরিতে মহিলাদের জন্য ৩৫ শতাংশ সংরক্ষণ দেওয়ার কথা আজ বলেন তিনি। এ ছাড়া, জেলা ও মহকুমা স্তরে উচ্চ শিক্ষা কমিটি তৈরি করা। রাজ্যে পাঁচটি নতুন মেডিক্যাল কলেজ-সহ আইটিআই, ইঞ্জিনিয়ারিং, পলিটেকনিক কলেজ খোলারও পরিকল্পনা রয়েছে নীতীশের। গোটা প্রকল্পে খরচ ধরা হয়েছে ৫৯,৩০০ কোটি টাকা। এ ছাড়াও, প্রতিটি বাড়িতে শৌচালয় এবং বিদ্যুৎ পৌঁছনোর স্বপ্ন দেখিয়েছেন নীতীশ কুমার।

এ দিকে ভোটের সময় যত এগিয়ে আসছে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই কোনও না কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা পটনা সফর করছেন। আজ যেমন এসেছেন নগরোন্নয়ন মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু। গত কালই দেশের ৯৮টি শহরকে স্মার্ট সিটি প্রকল্পের অধীন হিসেবে ঘোষণা করেছে নায়ডুর দফতর। সেই তালিকায় রয়েছে বিহারের তিনটি শহর—মুজফ্ফরপুর, ভাগলপুর ও বিহারশরিফের নাম। তবে নাম নেই পটনার।

নায়ডু আজ বলেছেন, ‘‘রাজ্য সরকার পটনার নামই পাঠায়নি। রাজ্য সরকার বিহারের তিনটি শহরেরই নাম স্মার্ট সিটির জন্য কেন্দ্র সরকারের কাছে পাঠিয়েছিল। সেই তিনটিকেই স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনে বিহারে যদি এনডিএ সরকার ক্ষমতায় আসে তবে আমরা পটনার নামও স্মার্ট সিটির তালিকায় রাখব।’’ নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন করতে পটনায় এসেছিলেন বেঙ্কাইয়া। বক্তব্য রাখতে গিয়ে, নীতীশ-লালু-কংগ্রেসের জোটকে ‘অশুভ আঁতাঁত’ আখ্যা দিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন