National News

মদের টাকায় মধু খাচ্ছেন বিহারবাসী!

সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, শুধু অর্থনৈতিক নয়, সামাজিক অবস্থানেরও বদল ঘটেছে বিহারে। সমাজে গুরুত্ব বেড়েছে মহিলাদের। ৫৮ শতাংশ মহিলার মত, মদে নিষেধাজ্ঞার পর গৃহস্থালির সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে তাঁদের মতামতের গুরুত্ব বেড়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

পটনা শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৮ ১৭:৪২
Share:

প্রতীকী চিত্র।

মদের টাকায় কি মধু খাচ্ছেন বিহারবাসী? একটি সমীক্ষায় অন্তত তেমনই ইঙ্গিত। ২০১৬-র এপ্রিলে মদ বিক্রি বন্ধ হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত মধু এবং পনিরের বিক্রি বেড়ে গিয়েছে কয়েকশো গুণ। আর শাড়ি এবং জামাকাপড়ের বিক্রির বৃদ্ধির হার রীতিমতো চোখ কপালে ওঠার মতো।

Advertisement

২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল বিহারে মদ বিক্রি ও খাওয়া নিষিদ্ধ করে নীতীশ কুমার সরকার। এই সিদ্ধান্তের ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় কতটা পরিবর্তন এসেছে, বিহার সরকারের সহায়তায় তা নিয়ে একটি সমীক্ষা করে এশিয়ান ডেভলপমেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এডিআরআই)। মদ বিক্রির আগের ছ’মাস এবং পরের ছ’মাসের তুলনামূলক তথ্য পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করা হয়েছে সমীক্ষায়। ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, এই সময় শাড়ি বিক্রির হার বেড়েছে ১৭৫১ শতাংশ। পোশাক সামগ্রীর বিক্রি বৃদ্ধির হার ৯১০ শতাংশ। খাদ্যদ্রব্যের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বিক্রি বেড়েছে মধু এবং পনিরের, যথাক্রমে ৩৮০ এবং ২০০ শতাংশ।

সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, শুধু অর্থনৈতিক নয়, সামাজিক অবস্থানেরও বদল ঘটেছে বিহারে। সমাজে গুরুত্ব বেড়েছে মহিলাদের। ৫৮ শতাংশ মহিলার মত, মদে নিষেধাজ্ঞার পর গৃহস্থালির সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে তাঁদের মতামতের গুরুত্ব বেড়েছে। আবার ২২ শতাংশ মহিলা মনে করেন, শুধু পারিবারিক নয়, তাঁদের মতামতের গুরুত্ব বেড়েছে সামাজিক সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেও।

Advertisement

আরও পড়ুন: মাল্যের বিরুদ্ধে তছরুপের আরও একটি চার্জশিট দিচ্ছে ইডি

আবার দুষ্কৃতী কার্যকলাপও কমেছে বলে সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে। অপহরণ কমেছে ৬৬.৬ শতাংশ। ২৮.৩ শতাংশ কমেছে খুনের হার।

অন্য একটি সমীক্ষা করেছে ডেভলপমেন্ট ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট। এটিও বিহার সরকারের সহায়তায়। এই সমীক্ষায় নওয়াদা, পূর্ণিয়া, সমস্তিপুর, পশ্চিম চম্পারণ এবং কাইমুর জেলার মোট ২৩৬৮ বাড়ির সদস্যদের নমুনা হিসেবে নেওয়া হয়েছে। তাতে উঠে এসেছে মদ বন্ধের আগে যেখানে একটি পরিবার খাবারের জন্য ১০০৫ টাকা খরচ করত, বন্ধের পর সেই টাকার পরিমাণ ১৩৩১। বৃদ্ধির হার হিসেবে যা ৩২ শতাংশ।

আরও পড়ুন: কতটা পরিষ্কার রেলের কামরা? নজরদারি এবার হোয়াটসঅ্যাপে

তবে মুদ্রার উল্টো পিঠও রয়েছে। মদ বিক্রি বন্ধের পর থেকে সংগঠিত ক্ষেত্রেই কাজ হারিয়েছেন অন্তত ৬০০ জন। অংসগঠিত ক্ষেত্রে ধরলে সংখ্যাটা কয়েক হাজার। তাছাড়া সরকারের রাজস্বও ক্ষতি হয়েছে। আর এখানেই সমালোচনায় সরব হয়েছেন বিরোধীরা। মদ বিক্রির বন্ধের সময়ই এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিল বিজেপি। সমীক্ষার ফলাফল নিয়ে তাঁদের বক্তব্য, দু’টিই সরকারি সমীক্ষা। তাই সমীক্ষার নমুনা ও পদ্ধতি দু’টিই প্রভাবিত ও পক্ষপাতদুষ্ট।

মদ বিক্রির আগে পর্যন্ত বিহারের অলি-গলিতে ছিল শুঁড়িখানা। ব্যাঙের ছাতার মতো কার্যত সর্বত্র গজিয়ে উঠেছিল দেশি-বিদেশি মদের দোকান। তার সঙ্গে বার-রেস্তোরাঁ তো ছিলই। কিন্তু মদ বিক্রি বন্ধের ঘোষণার পর থেকে সেগুলি বন্ধ। দেশি-বিদেশি অনেক সংস্থাই এখন সেই সব জায়গায় গাছ লাগাচ্ছে। বিহারে বাড়ছে সবুজও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন