মহাত্মা গাঁধী, নেপোলিয়ন বোনাপার্ট, উইনস্টন চার্চিল আর আব্রাহাম লিংকন। এঁদের সঙ্গে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের মিলটা কোথায়?
সকলেরই না কি দশম স্থানে রাহু বিরাজ করছে! তাই শত্রু প্রবল পরাক্রমী!
বিহারের দু’দফার ভোট সম্পূর্ণ। এখন নবরাত্রি ও দুর্গাপুজো। তাই, খানিকটা স্বস্তি। তার মধ্যেই দিল্লিতে খোশমেজাজে মুখোমুখি হলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। দিল্লিতে ভরাডুবির পর এ বারে বিহার নির্বাচন তাঁর তো বটেই, নরেন্দ্র মোদীর জন্যও নাকের লড়াই। প্রথম দু’দফা থেকে যে খবর এসেছে, তাতে ৫৫-৬৫টি আসন বিজেপি জোট পাবে বলে দলের বিশ্লেষণ। পাঁচ দফা মিলিয়ে ম্যাজিক সংখ্যা ১২২ পেরোতে হবে। প্রতিপক্ষ লালু-নীতীশের জোট টক্কর দিচ্ছে সেয়ানে-সেয়ানে। কিন্তু ভরসা বাকি তিন দফার মধ্যে পরের দু’টিতে অন্তত ভালো ফল করবে বিজেপি। আর সেটাই হবে বিজেপির বৈতরণী পারের তুরুপের তাস!
গুজরাতে ভোট পরিচালনার সময় সাট্টা বাজারের গতিবিধির ওপরে নিয়মিত নজর রাখতেন অমিত শাহ। এ বারেও রাখছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সাট্টা বাজার এখনও বিজেপি জোটকে দেড়শোটি আসন দিচ্ছে। তার মধ্যে বিজেপি একা পাবে ১১১টি। আর বিরোধী জোট আটকে যাবে আশির কোঠায়।’’
তবে শুধু সাট্টা বাজার নয়, দিল্লিতে পরাজয় থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বারে তাঁর নির্বাচন পরিচালনার যাবতীয় কৌশল তিনি সুচারু ভাবে প্রয়োগ করতে চাইছেন। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বিহারে ঘাঁটি গেড়ে বসেছিলেন। আবার যাবেন পাঁচ দিনের জন্য। যে কোনও মূল্যে এ বারে ভোট জেতাটাই তাঁর পাখির চোখ। এখনও বিশ্বাস করেন, নীতীশের থেকে লালুর শক্তিই বেশি। পাঁচ দফার শেষে নীতীশ যতই আসন নিয়ে আসুন না কেন, লালুর আসন হবে তাঁর থেকে দ্বিগুণ। লালুপ্রসাদের যাদব আর মুসলমান ভোট আর নীতীশের কুর্মি ভোট- এই নিয়েই বাজিমাত করতে চাইছে মহাজোট। অমিত শাহের কথায়, ‘‘এই সব সম্প্রদায় মিলিয়ে মাত্র ৩৫ শতাংশ ভোটে খেলতে চাইছে বিরোধী পক্ষ। যার অর্থ, বিজেপি জোটের কাছে রয়েছে বাকি ৬৫ শতাংশ।’’
ক’দিন আগেই বিহারে চাউর হয়ে গিয়েছিল, প্রথম দুই দফার ভোটে বিজেপি বুঝতে পারছে হাওয়া খারাপ। তাই নরেন্দ্র মোদীর সভা বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে। পোস্টার থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে মোদী-অমিত শাহের ছবি। কিন্তু অমিত শাহ আজ বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর কুড়িটি সভা করার কথা ছিল। করবেন ২২টি। পরের তিন দফায় আরও ১৩টি সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী। দশমীর পর ২৫ তারিখ থেকেই শুরু হচ্ছে সেই সভা। আর যে পোস্টার সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে, সেটি করছে নির্বাচন কমিশন। আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য। এর সঙ্গে বিজেপির হেরে যাওয়ার আশঙ্কার কোনও সম্পর্ক নেই।’’
তবে অমিত শাহ বুঝতে পারছেন, বিরোধী জোটে ফাটল ধরানো মুশকিল। প্রথম দুই দফায় অনেক আসনে বেলা তিনটের মধ্যেই ভোটগ্রহণ শেষ হয়ে গিয়েছে। তাই সেখানে ভোটের হারও কম। বাকি দু’ দফার ভোটই বিজেপি-র আশা-ভরসা। পঞ্চম ও শেষ দফায় অতটা আশা নেই। সেখানে বিরোধী জোটের দাপটই বেশি। তাই বললেন, ‘‘লড়াই কঠিন। কিন্তু জয় বিজেপি জোটেরই হবে। আর মুখ্যমন্ত্রী হবেন বিহারেরই কোনও বিজেপি নেতা।’’