মিস মিজোরাম ২০১৭-র এক প্রতিযোগী। ভাইরাল হওয়া ছবি।
সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন উদ্যোক্তারা। মিজোরাম পর্যটনের ওয়েবসাইটেও তুলে ধরা হচ্ছিল ‘মিস মিজোরাম-২০১৭’র সব বিবরণ ও ছবি। কিন্তু তাল কাটল বিকিনির জটে। কারণ ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে প্রতিযোগীদের বিকিনি পরা ছবি প্রকাশ হওয়ায় ‘গেল-গেল’ রব উঠেছে সেখানে। এমনকী মহিলা সংগঠনগুলিরও সমর্থন পাননি স্বল্পবাস প্রতিযোগীরা।
বিতর্কের সূত্রপাত মঙ্গলবার। সেই দিন স্থানীয় চ্যানেলে ‘মিস মিজোরাম’ প্রতিযোগিতার ‘বিকিনি রাউন্ড’ লাইভ দেখানো হয়। সপরিবারে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা দেখতে বসা অনেকে এতে আপত্তি জানান। সোশ্যাল সাইটে শুরু হয় প্রতিবাদ। এর পর ফেসবুকে ১৬ জন প্রতিযোগীর বিকিনি পরে ফটোশুট প্রকাশিত হতেই প্রতিবাদ ওঠে রাজ্য জুড়ে। এমনকী গির্জার তরফেও দাবি করা হয়: বিকিনি রাউন্ড খ্রিস্টবিরোধী, অসামাজিক।
নারী স্বাধীনতা, মেয়েদের পোশাক বাছাইয়ের অধিকারের মতো বিষয়ে নারী সংগঠনগুলি মেয়েদের পাশেই দাঁড়ায়। কিন্তু মিজোরামের সবচেয়ে শক্তিশালী মহিলা সংগঠন এমএইচআইপি-ও এ ক্ষেত্রে বিকিনি-বিরোধী ভূমিকাই নিয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, এ ভাবে সকলের সামনে অঙ্গ প্রদর্শন মোটেই ভাল কথা নয়। তাঁদের মতে, এটা মিজো সংস্কৃতিরও পরিপন্থী। সংগঠনের তরফে কড়া নির্দেশ জারি করা হয়েছে, অবিলম্বে বিকিনি রাউন্ডের ছবি ও ভিডিও সব ওয়েবসাইট থেকে সরাতে হবে। এমএইচআইপি-র সাধারণ সম্পাদক সাইপুই বলেন, ‘‘আমরা প্রতিযোগিতার বিপক্ষে নই। কিন্তু শরীর না দেখিয়ে, দেশীয় সুন্দর পোশাক পরেও তা করা যায়।’’
আরও পড়ুন: গ্র্যাচুইটির সীমা দ্বিগুণের দিকেই এগোচ্ছে কেন্দ্র
উদ্যোক্তাদের দাবি, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের সব সৌন্দর্য প্রতিযোগিতাতেই বিকিনি রাউন্ড আবশ্যিক। মিস মিজোরাম প্রতিযোগিতাকেও আন্তর্জাতিক মান দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। এখানকার মডেলরা যাতে দেশ-বিদেশে যেতে পারেন সেটাই প্রতিযোগিতার লক্ষ্য।
বিকিনি পরা ছবি প্রকাশের বিরোধিতা করেন মিজোরাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের অধ্যাপক আইরিন লালরুয়াতকিমিও। তাঁর মতে, সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার আবশ্যিক রাউন্ড হতে পারে বিকিনি পরা। কিন্ত মিজো সমাজের কথাও মাথায় রাখা দরকার। তাই সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার সম্প্রচার রাতের দিকে করা হোক। ছবি প্রকাশ করার আগে সেন্সরের ব্যবস্থা থাকুক।