আসন বণ্টন নিয়ে প্রকাশ্যেই সরব বিজেপি শরিকরা

মনে হয়েছিল ভোটের আসন ভাগাভাগি নিয়ে আকচাআকচিটা শুরু হবে লালু-নীতীশের মধ্যে। সেই আশায় বুক বেঁধেছিল গেরুয়া-শিবিরও। কিন্তু আচমকাই পাশার ছক উল্টে গেল! আসন বণ্টন নিয়ে বিজেপির ‘দাদাগিরি’র বিরুদ্ধেই উল্টে সরব হল এনডিএ-র দুই জোট শরিক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পটনা শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৫ ০২:৫৪
Share:

মনে হয়েছিল ভোটের আসন ভাগাভাগি নিয়ে আকচাআকচিটা শুরু হবে লালু-নীতীশের মধ্যে। সেই আশায় বুক বেঁধেছিল গেরুয়া-শিবিরও। কিন্তু আচমকাই পাশার ছক উল্টে গেল! আসন বণ্টন নিয়ে বিজেপির ‘দাদাগিরি’র বিরুদ্ধেই উল্টে সরব হল এনডিএ-র দুই জোট শরিক। বিহারের ভোটে বিজেপির আসন বণ্টনের পদ্ধতি নিয়ে এ দিন প্রকাশ্যেই নিজেদের ক্ষোভের কথা জানাল রামবিলাস পাসোয়ানের লোক জনশক্তি পার্টি এবং উপেন্দ্র কুশওয়াহার রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টি।

Advertisement

আপাতত দুই দলের দুই শীর্ষ নেতা আড়ালেই থেকেছেন। ময়দানে নামিয়েছেন তাঁদের ‘লেফটেন্যান্ট’-দের। এলজেপি-র রাজ্য সভাপতি পশুপতি পারশ এবং আরএলএসপি-র রাজ্য সভাপতি অরুণ কুমার আজ পটনায় যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করে দলের ক্ষোভের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। এক সপ্তাহের মধ্যে আসন বণ্টন চূড়ান্ত করে তা ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, ‘‘বিজেপি ১০২টি আসনে লড়াই করুক। বাকি ১৪১টি আসন শরিকদের জন্য ছেড়ে দিক।’’ শরিকদের এই দাবি নিয়ে অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। দলের সাধারণ সম্পাদক তথা বিহারের পর্যবেক্ষক ভূপেন্দ্র যাদব বলেন, ‘‘আমরা আলোচনা করছি। খুব শীঘ্রই আসন বণ্টন সংক্রান্ত সমস্যা মিটে যাবে।’’

দিন কয়েক আগে বিহারে এসেছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। তিনি দলের রাজ্য নেতৃত্ব এবং জোট শরিকদের সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়ে আলোচনা করেন। সেখানে বিজেপি নিজের জন্য ১৮৫টি আসন রেখে বাকি ৫৮টি আসন শরিকদের জন্য ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। তখনই ক্ষোভ মাথাচাড়া দেয়। একান্ত আলোচনায় উষ্মাও প্রকাশ করেন শরিক নেতারা। অবশেষে আজ জোট বেঁধে মাঠে নামলেন তাঁরা। যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করেই বিজেপির প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়া হল।

Advertisement

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান এবং উপেন্দ্র কুশওয়াহা বিষয়টিকে ‘দলের মত’ বলে আপাতত উত্তর এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, তাঁদের কথাই প্রকাশ্যে বলানো হয়েছে দুই দলের রাজ্য সভাপতিকে দিয়ে। সূত্রের খবর, দুই দলের সঙ্গে একমত হয়েছেন হিন্দুস্থান আওয়াম মোর্চার প্রধান তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম মাঁঝিও। তিন নেতার বৈঠকের পরেই ওই সাংবাদিক সম্মেলন করে বিজেপির উপরে চাপ তৈরি করা হচ্ছে বলে দল সূত্রের খবর।

এনডিএ শরিকদের বক্তব্য, লালু-নীতীশের মধ্যে এক সময় চরম শত্রুতা থাকলেও তাঁরা কিন্তু মসৃণ ভাবেই আসন বণ্টন সেরে ফেলেছেন। অথচ এনডিএ ঠিক মতো পদক্ষেপই করেনি। তাঁদের বক্তব্য, আসন বণ্টনের বিষয়টি নিয়ে বড় শরিক হিসেবে বিজেপিরই ঠিক মতো উদ্যোগী হওয়া উচিত। এলজেপি সাংসদ অরুণ কুমার বলেন, ‘‘বিহারে এনডিএ-র দফতর খোলা হয়েছে। অথচ এখনও কোনও বৈঠক ডাকা হয়নি।’’

পশুপতি পারশ বলেন, ‘‘এনডিএ-তে বিজেপির ভূমিকা বড় ভাইয়ের মতো। তাই বিজেপির উচিত এক সপ্তাহের মধ্যে আসন বণ্টন করে দেওয়া।’’ তাঁর অভিযোগ, বিধান পরিষদের নির্বাচনে হাজিপুরে এলজেপি প্রার্থীকে হারানোর কাজ করেছেন স্থানীয় বিজেপি নেতারা। বিজেপি নেতাদের ব্যবহার নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘সহযোগী সমস্ত দলের কথা খেয়াল রাখাও বিজেপি নেতাদের কর্তব্য। অথচ তাঁরা সেটাই ভুলে যাচ্ছেন!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন