বিজেপি শিবিরে কম্পন ইন্দিরা-২

তা হলে কি এক দিনেই বিজেপিতে কাঁপুনি ধরালেন প্রিয়ঙ্কা? 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৯ ০০:৫৮
Share:

প্রিয়ঙ্কা গাঁধী।

নাটক! পর্যটন! ফটোশুট! মাত্র ২৬ ঘণ্টায় যোগী-রাজ্যে ঝড় তুলে দিয়েছেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। তার পরেই তাঁর উদ্দেশে একের পর এক বাছা বাছা বিশেষণ ছুটে আসছে বিজেপি শিবির থেকে। সেই ঝড়ের ধাক্কায় ১০ জন দলিতকে গুলি করে হত্যার তিন দিন পরে খোদ মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ রবিবার সোনভদ্রে যাচ্ছেন।

Advertisement

তা হলে কি এক দিনেই বিজেপিতে কাঁপুনি ধরালেন প্রিয়ঙ্কা?

গত কাল প্রিয়ঙ্কা বারাণসীতে পা রাখার পর থেকেই যোগী সরকার নড়েচড়ে বসেছে। খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে সাংবাদিক সম্মেলন করতে হয়েছে। দুই উপমুখ্যমন্ত্রীও বারবার মুখোমুখি হন সাংবাদিকদের। উত্তরপ্রদেশে সদ্য নিযুক্ত বিজেপি সভাপতি স্বতন্ত্র দেব সিংহ তো গোটা ঘটনার জন্য দুষছেন কংগ্রেসকে। বলছেন, ১৯৫৫ সাল থেকে এই জমির বিবাদ শুরু। তখন কংগ্রেসই ক্ষমতায়। পাশাপাশি প্রিয়ঙ্কাকে তোপ দেগে বলছেন, উনি ‘নাটক’ করছেন। লোকদেখানো চোখের জল ফেলছেন।

Advertisement

বিজেপি শিবিরে কান পাতলে বোঝা যাচ্ছে, প্রিয়ঙ্কা আজ ফিরে গেলেও শাসক শিবিরে আশঙ্কা ছড়িয়ে দিয়েছেন। কেন? বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘কংগ্রেসে রাহুল গাঁধী নেতৃত্বে থাকলে বরং আমাদের পক্ষে ভাল। কিন্তু রাহুলের তুলনায় প্রিয়ঙ্কা অনেক বেশি ঝাঁঝালো। কাল গভীর রাত পর্যন্ত প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা বোঝানোর চেষ্টা করলেও হার মানেননি প্রিয়ঙ্কা। তার উপর তাঁর মধ্যে অনেকে ইন্দিরা গাঁধীর ছায়া দেখেন। গত কাল তাঁর লড়াইয়ের সঙ্গে ১৯৭৭ সালে ইন্দিরার বেলচী গ্রামে অভিযানের তুলনা উঠেছে। মানুষের সঙ্গে, বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে অনেক সহজে মিশে যেতে পারেন প্রিয়ঙ্কা। ফলে ভবিষ্যতে সতর্ক থাকতে হবে দলকে।’’

যে কারণে আজ বিজেপির পক্ষ থেকে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়, ইন্দিরার বেলচী-যাত্রার সঙ্গে প্রিয়ঙ্কার সোনভদ্রের তুলনা টানাটা ঠিক নয়। জরুরি অবস্থার পরে হেরে গিয়ে ইন্দিরার বেলচী অভিযান তিন বছর পরে প্রধানমন্ত্রী পদে ফিরে আসার ভিত তৈরি করেছিল। সেই সময় হারলেও দেড়শোর বেশি সাংসদ ছিল কংগ্রেসের। আর গত দুটি লোকসভায় কংগ্রেস তলানিতে। গত বারের ৪৪ থেকে বেড়ে এখন হয়েছে ৫২। আর ঘোষিত ভাবে না হলেও অঘোষিত ভাবে প্রিয়ঙ্কা অনেক দিন ধরেই রাজনীতিতে আছেন। এখনও পর্যন্ত তাঁর সাফল্য চোখে পড়েনি। ভুলে গেলে চলবে না, কেন্দ্রে মোদী সরকারে বিজেপির একারই তিনশোর বেশি আসন। ফলে প্রিয়ঙ্কার একদিনের অভিযান তেমন দাঁত ফোটাতে পারবে না। কংগ্রেসও জানে, দলের জন্য এখন যেটি সবথেকে বেশি দরকার, তা হল সংগঠনকে মজবুত করা। প্রিয়ঙ্কা বলছেন, ‘‘ঠাকুমার সঙ্গে আমার তুলনা করাটা ঠিক নয়। আর বিজেপি যে এখন কংগ্রেসকে দুষছে, সরকারে তো জওহরলাল নেহরু নেই। আছেন যোগী আদিত্যনাথ। মানুষের জীবন বাঁচানো, তাঁদের নিরাপত্তা দেওয়া তো তাঁরই কাজ।’’ দিল্লিতে কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, ‘‘মাত্র এক দিনে প্রিয়ঙ্কা দলকে বুঝিয়েছেন, কংগ্রেসকে কোন পথে এগোতে হবে। আমরাও জানি, সংগঠনকে নতুন করে দাঁড় করানোই আসল মন্ত্র। প্রিয়ঙ্কা যা করলেন, সেটি তারই প্রথম ধাপ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন