Amit Shah

মেরুকরণের অস্ত্র হতে পারে সিএএ, আশঙ্কা বিরোধীদের 

সিএএ-তে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে পালিয়ে আসা মুসলিম বাদে অন্য ছয়টি ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:৩৬
Share:

অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।

লোকসভা নির্বাচনের আগে নতুন করে সিএএ বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ঘিরে বিতর্ক সামনে নিয়ে এসে বিজেপি মেরুকরণের কৌশল নিতে পারে বলে আশঙ্কা কংগ্রেস তথা বিরোধী শিবিরের।

Advertisement

রবিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনি পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে বলেছেন, সিএএ কার্যকর হবে। আগামী বছরের ৩০ মার্চের আগে সিএএ-র বিধিনিয়মের খসড়া চূড়ান্ত হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। তার পরেই দিল্লিতে বিরোধী শিবিরে এ নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। ২০১৯-এ সংসদে সিএএ পাশ হলেও গত চার বছরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এখনও তার বিধিনিয়ম তৈরি করেনি। বিরোধী শিবিরের একটা বড় অংশ মনে করছে, লোকসভা ভোটের ঠিক আগে নতুন করে ঝাঁপি খুলে সিএএ-বিতর্ক বাজারে নিয়ে আসবে বলেই এত দিন মোদী সরকার সিএএ নিয়ে টালবাহানা করছিল।

সিএএ-তে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে পালিয়ে আসা মুসলিম বাদে অন্য ছয়টি ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। এতে মুসলিমদের প্রতি বৈষম্য হচ্ছে ও তাঁদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। ২০১৯-এর ডিসেম্বরে সংসদে সিএএ পাশ হয়েছিল। সিএএ-র প্রতিবাদে দেশ জুড়ে বিক্ষোভ ও অশান্তিতে ৮৩ জনের মৃত্যু হয়। দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, অসমের মতো বেশ কিছু রাজ্যে হিংসা হয়েছিল। বিরোধী শিবির মনে করছে, লোকসভা ভোটের আগে সিএএ কার্যকর করার চেষ্টা হলে ফের একই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তা থেকে বিজেপিই ফায়দা তুলবে।

Advertisement

সংসদে কোনও আইনের বিল পাশের ছয় মাসের মধ্যে বিধিনিয়ম তৈরি না হলে লোকসভা ও রাজ্যসভার অধিনিয়ম কমিটির কাছে সময় বাড়ানোর অনুমতি চাইতে হয়। এখনও পর্যন্ত অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আট বার এই অনুমতি নিয়েছে। রবিবার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনি বলেছেন, লোকসভার অধিনিয়ম কমিটি আগামী বছরের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। রাজ্যসভার অধিনিয়ম কমিটি ৩০ মার্চ পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে সেপ্টেম্বর মাসেই বলা হয়েছিল, লোকসভা ভোটের আগে সিএএ-র বিধিনিয়ম চূড়ান্ত করে ফেলার চেষ্টা চলছে। শীর্ষ স্তরে নিয়মিত বৈঠক, কাজকর্ম চলছে। কবে সিএএ-র বিধিনিয়ম চূড়ান্ত হবে, তা রাজনৈতিক স্তরে সিদ্ধান্ত হবে। ইতিমধ্যে সিএএ-তে নাগরিকত্বের আবেদনের জন্য পৃথক একটি পোর্টাল তৈরির কাজ চলছে। সেখানে যোগ্যতা, মাপকাঠিও বিশদে ব্যাখ্যা করা থাকবে।

সিএএ-র সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একগুচ্ছ মামলা হয়েছে। আগামী সপ্তাহেই সুপ্রিম কোর্টে সিএএ-র ৬এ ধারার সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে শুনানি রয়েছে। অসম চুক্তির আওতায় থাকা মানুষদের নাগরিকত্ব নিয়ে এই ধারা যোগ হয়েছিল। বিধিনিয়ম চূড়ান্ত করার আগে কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টের ঘটনাপ্রবাহও দেখে নিতে চাইছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন