দু’টি নিবন্ধ এবং সিধু, বিজেপির লক্ষ্য কংগ্রেস

আজ দুপুরে দলের সদর দফতরে আচমকাই এক সাংবাদিক বৈঠক ডেকে কংগ্রেসকে নিশানা করে বিজেপি। দলের মুখপাত্র সম্বিত পাত্র ঢাল করলেন দু’টি ঘটনাকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৩৪
Share:

ফাইল চিত্র।

অযোধ্যার রায় বেরোনোর আগে থেকেই বিজেপি ও সঙ্ঘ বলছে, শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখুন। রায় বেরনোর পরে কংগ্রেসের শিবিরের কোণা থেকে একটু স্ফুলিঙ্গ দেখেই ঝাঁপিয়ে পড়ল বিজেপি।

Advertisement

আজ দুপুরে দলের সদর দফতরে আচমকাই এক সাংবাদিক বৈঠক ডেকে কংগ্রেসকে নিশানা করে বিজেপি। দলের মুখপাত্র সম্বিত পাত্র ঢাল করলেন দু’টি ঘটনাকে। এক, করতারপুর করিডরে গিয়ে নভজোৎ সিংহ সিধুর মুখে ইমরান খানের প্রশস্তি। আর কংগ্রেসের মুখপত্র ‘ন্যাশনাল হেরাল্ড’-এ ভারতের শীর্ষ আদালতকে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে তুলনা টেনে ও হিন্দুদের ভাবনা নিয়ে প্রকাশিত দু’টি নিবন্ধ। যেখানে নাম না করেও পরোক্ষে নরেন্দ্র মোদীকে স্বৈরাচারী বলা হয়েছে। বোঝানোর চেষ্টা হয়েছে, এত দিন ধরে বিজেপি, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ যা চাইছিল, ঠিক সেই রায়ই হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে।

গত কালই রায় আসার পর শান্তি বজায়ের আবেদন জানিয়ে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটি প্রস্তাব পাশ করেছিল। কিন্তু ওয়ার্কিং কমিটিতে আলোচনা না হলেও কিংবা প্রস্তাবে না থাকলেও দলের একাংশের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে কংগ্রেস এআইসিসি মঞ্চ থেকে বলেছিল, দল রামমন্দির নির্মাণের পক্ষে। এই দ্বিমুখী কৌশলে কংগ্রেস যেমন একদিকে দলের প্রস্তাবে কোনও পক্ষ না নিয়ে সংখ্যালঘুদের চটাতে চায়নি, তেমনই নেতাদের দিয়ে মন্দিরের পক্ষে বক্তব্য রেখে হিন্দুদেরও সঙ্গে রাখার চেষ্টা করেছে।

Advertisement

কিন্তু তার পরেই দলের মুখপত্রের নিবন্ধে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্যের জন্য সনিয়া গাঁধীকে ক্ষমা চাইতে বলল বিজেপি। সম্বিত বলেন, ‘‘মা-বেটা (সনিয়া-রাহুল) এমনিতেই ‘ন্যাশনাল হেরাল্ড’ মামলায় জামিনে মুক্ত। গোটা দেশ রায়কে কারও জয় বা পরাজয় হিসেবে দেখছে না। কিন্তু কংগ্রেসের মুখপত্র লিখছে, রায় পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টকে মনে করিয়ে দেয়। জেনারেল মুশারফ যেমন আদালতকে দিয়ে নিজের পক্ষে রায় লিখিয়ে নেন, এমনই স্বৈরতন্ত্র চলছে। লেখা হয়, এখনও রায়ের প্রভাব চোখে পড়েনি। কোনও ভক্ত হিন্দু অযোধ্যায় পুজো করবেন না। কংগ্রেস লজ্জাজনক ভাবে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট, রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে আঘাত করছে।’’

এর সঙ্গেই পাকিস্তানের আমন্ত্রণে করতারপুরে যাওয়া সিধু যে ভাবে ইমরানের প্রশস্তি করেছেন, পাক প্রধানমন্ত্রীও খুঁজেছেন কংগ্রেসের এই নেতাকে ‘হামারা সিধু কাঁহা হ্যায়’ বলে— তাকে কাজে লাগিয়ে সনিয়া-রাহুলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাল বিজেপি। তারা বলল, সনিয়া-রাহুল যেমন সিধুকে ‘কাছের লোক’ বলেন, সিধুও নিজেকে গাঁধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করেন। এর পরেই নড়েচড়ে বসেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। সিধু অবশ্য এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে। কিন্তু দলের একাংশ বলছেন, সিধুর কাজ যদি অন্যায় হয়, তা হলে ২০১৫-য় বিনা নিমন্ত্রণে মোদীর পাকিস্তানে গিয়ে নওয়াজ শরিফের আতিথ্য গ্রহণকে কী বলা উচিত? এর পাশাপাশি দলের মুখপত্র থেকে ওই বিতর্কিত নিবন্ধগুলি মুছে ফেলা হয়। ‘ন্যাশনাল হেরাল্ডে’র পক্ষ থেকে ক্ষমাও চাওয়া হয়। জানানো হয়, নিবন্ধে প্রকাশিত মত হেরাল্ডের নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন