কর্পোরেট চাঁদায় মাথায় বিজেপি

২০১২-’১৩-য় বিজেপি পেয়েছিল প্রায় ৭৩ কোটি টাকা। পরের বছরই তা পৌঁছে যায় প্রায় ১৫৭ কোটি টাকায়। ভোটের বছরে, ২০১৪-’১৫-তে সেটাই গিয়ে পৌঁছয় ৪০৮.৩৪ কোটি টাকায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৭ ০৩:৪৭
Share:

ফাইল চিত্র।

বাকিদের পিছনে ফেলে বিজেপির সিন্দুকেই এখন কর্পোরেট জগতের চাঁদা সব থেকে বেশি। কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার আগের দু’বছর এবং পরের দু’বছরে বিজেপির তহবিলে কর্পোরেট জগতের চাঁদা জমা পড়েছে মোট ৭০৫ কোটি ৮১ লক্ষ টাকা। কংগ্রেসের তুলনায় তা ৩ গুণেরও বেশি।

Advertisement

নির্বাচন কমিশনের কাছে রাজনৈতিক দলগুলির পেশ করা আয়ের খতিয়ান বিশ্লেষণ করে অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (এডিআর)-এর রিপোর্ট বলছে, ২০১৪-র লোকসভা ভোটের বছরে কর্পোরেট মহল থেকে ৪০৮ কোটি ৩৪ লক্ষ টাকা চাঁদা পেয়েছিল বিজেপি। বস্তুত তার আগের বছরেই বিজেপির তহবিলে চাঁদার পরিমাণ এক লাফে দ্বিগুণ হয়ে যায়। ২০১২-’১৩-য় বিজেপি পেয়েছিল প্রায় ৭৩ কোটি টাকা। পরের বছরই তা পৌঁছে যায় প্রায় ১৫৭ কোটি টাকায়। ভোটের বছরে, ২০১৪-’১৫-তে সেটাই গিয়ে পৌঁছয় ৪০৮.৩৪ কোটি টাকায়। সেই তুলনায় লোকসভা ভোটের বছরে কংগ্রেস ১২৮.১১ কোটি টাকা চাঁদা পেয়েছিল কর্পোরেট জগত থেকে।

এডিআর-এর অন্যতম সদস্য, আইআইএম-বেঙ্গালুরুর অধ্যাপক ত্রিলোচন শাস্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘প্রশ্ন হল, টাকা থেকেই ক্ষমতা, না কি ক্ষমতা থেকেই টাকা! এ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, কারা ক্ষমতায় আসতে চলেছে, কর্পোরেট জগতও তার আঁচ পায়। তবে শিল্প সংস্থাগুলির তৈরি নির্বাচনী ট্রাস্ট থেকে সব রাজনৈতিক দলই চাঁদা পেয়েছে। কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকলে তারাই বেশি চাঁদা পেত বলে আমরা দেখেছি। এখন বিজেপি সেই
জায়গা নিয়েছে।’’

Advertisement

শুধুমাত্র ২০ হাজার টাকার উপরে চাঁদার ক্ষেত্রেই কে চাঁদা দিচ্ছে, তার নামধাম জানাতে হয় রাজনৈতিক দলগুলিকে। এডিআর-এর যুক্তি, সেই হিসেবে মোট চাঁদার মাত্র শতকরা ৩০ ভাগের হিসেবই পাওয়া যায়। এডিআর-এর প্রধান অনিল বর্মা বলেন, শিল্পের কোন কোন ক্ষেত্র থেকে রাজনৈতিক দলগুলি বেশি চাঁদা পাচ্ছে, তা খতিয়ে দেখে বলা যায়, নির্বাচনী ট্রাস্ট বাদ দিলে সব থেকে বেশি চাঁদা এসে কারখানা ও রিয়েল এস্টেট বা আবাস ক্ষেত্র থেকে। খনি বা নির্মাণের মতো যে সব শিল্পে সরকারি বরাত যায়, সেখান থেকেও রাজনৈতিক দলগুলি প্রচুর
চাঁদা পেয়েছে।

বিজেপি, কংগ্রেস, এনসিপি, সিপিএম, সিপিআই— এই পাঁচটি রাজনৈতিক দলের খতিয়ান বিশ্লেষণ করেছিল এডিআর। বহুজন সমাজ পার্টি জানিয়েছে, তাদের কোনও চাঁদার পরিমাণই ২০ হাজার টাকার বেশি নয়। সিপিএম, সিপিআই কর্পোরেট চাঁদা নেয় না বলে দাবি করলেও রিপোর্ট বলছে, কেরল, হায়দরাবাদের কিছু শিল্প সংস্থা তাদের চাঁদা দিয়েছে। যদিও তা কংগ্রেস, বিজেপির চাঁদার তুলনায় নগন্য।

এডিআর-কর্তাদের বক্তব্য, কর্পোরেট জগতের চাঁদার হিসেব সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ এই শেষ। কারণ এ বারের বাজেটে অরুণ জেটলি যে নির্বাচনী বন্ড ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন, তাতে কে কাকে কত চাঁদা দিচ্ছে, তার কিছুই জানা সম্ভব হবে না। মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে এডিআর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন