মোহন ভাগবত সংরক্ষণ নীতির পর্যালোচনার কথা বলায় বিহার নির্বাচনে খেসারত দিতে হয়েছিল বিজেপিকে। এ বারে উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের আগে অম্বেডকর নিয়ে সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ আর এক জনের মন্তব্য বিপদ ডেকে আনল বিজেপির।
সরকারি অনুদানে চলা ‘ইন্দিরা গাঁধী ন্যাশনাল সেন্টার ফর আর্টস’-এ গত এপ্রিলেই চেয়ারম্যান হয়েছেন রামবাহাদুর রাই। বিজেপির ছাত্র সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। সঙ্ঘেরও ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমে তাঁর সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়, যেখানে তিনি দাবি করেছেন সংবিধান বাবাসাহেব অম্বেডকর লেখেননি। এক আমলা বি এ রাউ যা লিখে দিয়েছিলেন, অম্বেডকর সেটিরই ভাষা ঠিক করে দিয়েছিলেন। এই মন্তব্যের পরে বিতর্ক দানা বাধায় খোদ রাই এমন কোনও সাক্ষাৎকার দেওয়ার কথা বেমালুম অস্বীকার করেছেন। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের ভোট নিয়ে যখন পারদ চড়তে শুরু করেছে, তখন সঙ্ঘ-বিজেপিকে ছেঁকে ধরতে এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছে না বিরোধীরা। বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশে দলিত ভোটব্যাঙ্কের দিকে যখন সব দলেরই নজর রয়েছে।
কংগ্রেস আজ দলের তফসিলি জাতি বিভাগের চেয়ারম্যান কে রাজুকে আসরে নামিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি করেছে, অবিলম্বে রামবাহাদুর রাইকে এই পদ থেকে সরাতে হবে। বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকেও এ জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। রাজু বলেন, ‘‘গোড়া থেকে সঙ্ঘ দলিত-বিরোধী। বিহার ভোটের সময় আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত সংরক্ষণ পর্যালোচনার কথা বলেছিলেন। মোদী সরকারের মন্ত্রী দলিত নিয়ে অপশব্দ ব্যবহার করেছেন। আর এক মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি রোহিত ভেমুলা কাণ্ডে অসহনশীলতা দেখিয়েছেন। কংগ্রেস দেশজুড়ে এই নিয়ে আন্দোলন করবে।’’ পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে বিজেপিও নিজেদের তফসিলি জাতি মোর্চার প্রধান দুষ্মন্ত কুমার গৌতমকে দিয়ে এই মন্তব্যের ভৎর্সনা করিয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মহেশ শর্মাও এই মন্তব্যের নিন্দা করেছেন। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: মন্ত্রীর ফোন হোল্ডে রাখার খেসারত, ‘পদত্যাগ’ ও ‘কর্মহীন’ মহিলা আইপিএস
সদ্য গতকালও অমিত শাহ উত্তরপ্রদেশে গিয়ে দলিত-তাস খেলেছেন। মায়াবতীর দলিত ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসানোর লক্ষ্য নিয়ে দলিতের বাড়িতে দিনকয়েক আগে খেয়েও এসেছেন। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্ব বুঝতে পারছেন, এ ধরনের লাগামছাড়া মন্তব্যই বিপাকে ফেলতে পারে তাঁদের। বিহারের নির্বাচনের সময় মোহন ভাগবতের মন্তব্যের বিরোধিতা করে লালুপ্রসাদ যাদব গোটা রাজ্যে বিজেপি দলিত-বিরোধী বলে প্রচার করেছিলেন। এ বারেও মায়াবতী আসরে নামবেন। সমাজবাদী পার্টি, কংগ্রেসও এককাট্টা হয়ে বিজেপি বধে নেমে দলের অঙ্ক ঘেঁটে দিতে পারে।