এ বার বিজেপির লক্ষ্য অভিন্ন দেওয়ানি বিধি

গোড়া থেকেই বিজেপির কর্মসূচিতে মূল বিষয় তিনটি। যার মধ্যে রামমন্দির তৈরি নিশ্চিত করা ও জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের কাজ শেষ হয়েছে। তৃতীয়টি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি তৈরি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:১৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

ছ’মাসও হয়নি। জম্মু-কাশ্মীরে বিশেষ মর্যাদা লোপ, অযোধ্যায় রামমন্দিরের পক্ষে রায়, নাগরিকত্ব বিল পাশ..। বিজেপি সূত্রে খবর, বন্ধ ঘরে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ‘‘যে স্বপ্ন নিয়ে এগিয়েছি, একে একে তা পূরণ হচ্ছে।’’

Advertisement

অযোধ্যা রায় না হয় শীর্ষ আদালত দিয়েছে, বাকি দুই বড় সিদ্ধান্ত হয়েছে সংসদের হাত ধরেই। আর দুটি ক্ষেত্রেই নিজের বিশ্বস্ত সেনাপতি অমিত শাহকে কৃতিত্ব নেওয়ার অনেকটা সুযোগও করে দিয়েছেন মোদী। পিঠ চাপড়াচ্ছে সঙ্ঘও। যেমন আজই আরএসএসের ভাইয়াজি জোশী বলেছেন, ‘‘নাগরিকত্ব বিল আনার সাহসী পদক্ষেপের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ধন্যবাদ।’’

বিরোধীরা আশঙ্কা করছিলই, এখন বিজেপি সাংসদেরা খোলাখুলি সংসদেও বলতে শুরু করেছেন যে ভারত একটি হিন্দুরাষ্ট্র। আর ঘরোয়া আড্ডায় বলছেন, ‘‘বিরোধীরা যতই অন্য বিষয় তুলে চেঁচানোর চেষ্টা করুন, শেষপর্যন্ত তাঁদের বিজেপির দেওয়া অস্ত্র নিয়েই খেলতে হবে।’’ আর সেটি যে শুধুই ঘুরেফিরে হিন্দু-মুসলিম বিতর্কেই কেন্দ্রীভূত হবে, সেটিও আর গোপন করছেন না বিজেপি নেতারা।

Advertisement

গোড়া থেকেই বিজেপির কর্মসূচিতে মূল বিষয় তিনটি। যার মধ্যে রামমন্দির তৈরি নিশ্চিত করা ও জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের কাজ শেষ হয়েছে। তৃতীয়টি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি তৈরি। সরকারের মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলছেন, ‘‘বিজেপির ইস্তাহারে যা লেখা আছে, সব রূপায়ণ করা হবে।’’ তবে বিজেপি শিবিরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, আরও প্রকল্প নিয়ে আলোচনাও চলছে। নাগরিকত্ব বিল পাশের পর জাতীয় নাগরিকপঞ্জি তো আছেই। ২০২৪ সালের আগে তা চালুর কথা বলেছেন অমিত শাহ। এ বছরে স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের কথা। সেই সংক্রান্ত আইন নিয়েও কথা চলছে।

তবে বিজেপির এক সূত্রের কথায়, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে সম্প্রতি যতবার অমিত শাহকে প্রশ্ন করা হয়েছে, সেটির কোনও নির্দিষ্ট দিনক্ষণ দেননি তিনি। কারণ, এটি চালু করতে হলে হিন্দুদেরও কোনও ক্ষতি হবে কি না, সেটি ভেবে দেখা হচ্ছে। গোটা ব্যবস্থা আটোসাঁটো করেই এটি আনা হবে। যেমন আনা হয়েছে নাগরিকত্ব বিল। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরেই কংগ্রেসেরও কিছু নেতা প্রকাশ্যে সমর্থন করেছেন। কেন্দ্রের মন্ত্রী সঞ্জীব বালিয়ান জানান, ‘‘সরকার এই বিল আনার ব্যাপারে আলোচনা করছে।’’ অসমে ইতিমধ্যেই দুই সন্তানের নীতির ভিত্তিতে সরকারি চাকরির পরীক্ষা শুরু হয়েছে। বিজেপির এক নেতার মতে, মোদী সরকার এমনই পদক্ষেপ করবে, যেখানে বিরোধী শিবিরেরও সমর্থন পাওয়া যায়। আর কংগ্রেসের মত, সেটি তো আসলে মোড়ক। আসল খেলা তো বিভাজনের। লক্ষ্য হিন্দুরাষ্ট্র গড়ার। ২০২৪ সালে সেটিকে ভর করেই ভোটে লড়বেন মোদী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন