আদিত্যনাথে আতঙ্ক মোছার চেষ্টায় বিজেপি

আনুষ্ঠানিক ফরমান এখনও জারি হয়নি। তবু যোগী আদিত্যনাথের শপথ নেওয়ার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই ইলাহাবাদ পুরসভা তালা ঝোলালো দু’টি কসাইখানায়। এই সব বিষয় তো রয়েইছে, তার সঙ্গে যোগীর অতীত নিয়েও বিভিন্ন মহলে রয়েছে ক্ষোভ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৭ ০৪:০২
Share:

আনুষ্ঠানিক ফরমান এখনও জারি হয়নি। তবু যোগী আদিত্যনাথের শপথ নেওয়ার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই ইলাহাবাদ পুরসভা তালা ঝোলালো দু’টি কসাইখানায়। এই সব বিষয় তো রয়েইছে, তার সঙ্গে যোগীর অতীত নিয়েও বিভিন্ন মহলে রয়েছে ক্ষোভ। উত্তরপ্রদেশে নতুন মুখ্যমন্ত্রীর অভিষেকের সঙ্গেই শুধু সংখ্যালঘু সমাজে নয়, অসন্তোষ বাড়ছে আধুনিক হিন্দু মননেও। সেই ক্ষোভ সামাল দিতেই এ বার আসরে নামলেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।

Advertisement

যোগীকে নিয়ে অসন্তোষ দূর করতে একটি সুদীর্ঘ নিবন্ধই লিখে ফেলেছেন নরেন্দ্র মোদী সরকারের তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু। লখনউয়ে তাঁর তত্ত্বাবধানেই যোগীকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করা হয়েছিল। যোগী আদিত্যনাথের অভিষেকে আরএসএসের কোনও হাত ছিল না বলে এক দিকে বেঙ্কাইয়া যেমন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আধিপত্য বজায় রাখার চেষ্টা করেছেন। তেমনই তিনি বলেছেন, ‘‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ-এর মন্ত্রকে সামনে রেখে যোগীর হাত ধরে উত্তরপ্রদেশের উন্নয়ন মুখ বন্ধ করে দেবে বিরোধীদের। এক সময় রাষ্ট্রপতি পদের জন্য এ পি জে আব্দুল কালামের নাম সবার আগে প্রস্তাব করেছিলেন যোগীই। তিনি সাধু, নিজের পরিবার নেই, দুর্নীতিও নেই।’’ জাত-পাতে ভরা উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথকে নিয়ে সমাজের কোনও কোনও অংশে যে অসন্তোষ রয়েছে, তা মেটাতে বেঙ্কাইয়া বলেন, ঠাকুর হলেও যোগীর কোনও জাত-ধর্ম হয় না। তিনি সকলের নেতা।

আরও পড়ুন: মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকের আগে পর্বত প্রমাণ কৃষি-ঋণ মাফে হিমশিম যোগী

Advertisement

পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের পরে চার রাজ্যেই এ বার সরকার গড়েছে বিজেপি। কিন্তু কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে এ ভাবে কোনও মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়নি। বিজেপির অন্য ছোট-মাঝারি নেতারাও যোগীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে আসরে নেমে পড়েছেন। প্রশ্ন হল, কেন?

বিজেপিরই এক সূত্রের মতে, যোগীর বাছাই হয়েছে ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের দিকে লক্ষ্য রেখে। বিজেপি মনে করছে, মোদীকে ঠেকাতে সেই সময়ে সব বিরোধী দল এককাট্টা হবেই। উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে সংখ্যালঘু ভোটও বিরোধী জোটের ঝুলিতেই যাবে। আর তা মোকাবিলা করতে প্রয়োজন হিন্দুদের একজোট করা। মুখে উন্নয়নের মন্ত্র থাকলেও।

যোগীর বাছাইয়ে আধুনিক মনস্ক হিন্দুরা যে খুশি নয়, তা টের পাচ্ছেন বিজেপির শীর্ষ নেতারা। কেননা, অতীতে যোগীর বিভিন্ন বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। সেই বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব যোগী আদিত্যনাথ এখন মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসে ওই ধরনের কোনও বক্তব্য সামনে নিয়ে এলে তা নিয়ে আরও বিতর্ক হতে পারে। যাতে আধুনিক মনস্ক হিন্দুদের মনেও ক্ষোভ বাড়তে পারে বলে মনে করছে বিজেপি। তাদের পাশে রাখতেই তাই যোগীর ভাবমূর্তি এখন ঘষামাজা করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন