BJP

ভোটের মরসুমে খাবারের আগুন দামে চাপে কেন্দ্র

হিমাচল ও গুজরাত, দুই রাজ্যেই মূল্যবৃদ্ধিকে বিরোধীরা হাতিয়ার করতে চাইছেন। খাবারদাবারের দাম চড়া বলে সাধারণ মানুষের অসন্তোষ কাজে লাগানো সহজ হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২২ ০৭:০৯
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।

রাত পোহালেই হিমাচল প্রদেশের ভোট। সপ্তাহ দু’য়েক পরেই নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের রাজ্য গুজরাতে ভোটগ্রহণ। দুই রাজ্যে ভোটের মুখে দাঁড়িয়ে মূল্যবৃদ্ধির আঁচ, বিশেষত খাদ্যপণ্যের চড়া দাম মোদী সরকার তথা বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে। খুব শীঘ্র খাদ্যপণ্যের দাম কমার কোনও লক্ষণও দেখতে পাচ্ছেন না মোদী সরকারের শীর্ষকর্তারা।

Advertisement

হিমাচল ও গুজরাত, দুই রাজ্যেই মূল্যবৃদ্ধিকে বিরোধীরা হাতিয়ার করতে চাইছেন। খাবারদাবারের দাম চড়া বলে সাধারণ মানুষের অসন্তোষ কাজে লাগানো সহজ হয়ে গিয়েছে। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছে, হিমাচলে মূল্যবৃদ্ধি অন্যতম বিষয় হয়ে উঠেছে। গুজরাতে যাতে তা না হয়, তার জন্য খাদ্যপণ্যের দামে রাশ টানার চেষ্টা হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় খাদ্য, উপভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, এমনিতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে খাদ্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। তার উপরে খরিফ মরসুমে বৃষ্টি কম হওয়ায় পূর্ব ভারত ও উত্তর ভারতের একাংশে ফসল উৎপাদন কমবে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, বিহার ও উত্তরপ্রদেশে খরিফ মরসুমে ধানের চাষ কম হয়েছে। উত্তর-পশ্চিম ভারতে আবার অকাল বৃষ্টির ফলে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশে বর্ষার পরেও বৃষ্টি হয়েছে। ফলে আগামী কয়েক মাস আনাজ, ডাল, ভোজ্য তেল, দুধের দাম বাড়বে। তাতে রাশ টানা কঠিন হবে। অক্টোবর মাসে পেঁয়াজ ও টোম্যাটোর দামও চড়া হারে বেড়েছে।

Advertisement

শনিবার হিমাচলের ভোটগ্রহণের ঠিক আগে শুক্রবার অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন নিজেই মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি, অশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধিকে দায়ী করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, এখনও মূল্যবৃদ্ধি সামাল দেওয়ার মতো জায়গায় রয়েছে। অর্থ মন্ত্রক ও রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানতে সচেষ্ট বলেও দাবি করেছেন তিনি।

বিরোধীরা বলছেন, বাস্তব হল, সেপ্টেম্বর মাসে খুচরো পণ্যে মূল্যবৃদ্ধির হার ৭.৪১ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছিল। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের দায়িত্ব হল, মূল্যবৃদ্ধির হারকে খুব বেশি হলে ৬ শতাংশের মধ্যে বেঁধে রাখা। এই হার তার থেকে বেশি। তার থেকেও চিন্তার কারণ হল, খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সেপ্টেম্বরে ৮.৬% ছুঁয়েছিল। যা ২২ মাসে সর্বোচ্চ। এর কারণ হল আনাজ ও খাদ্যশস্যের চড়া দাম।

খাদ্য ও উপভোক্তা বিষয়ক সূত্রের বক্তব্য, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরেই গমের জোগানে টান পড়েছিল। ইউক্রেন থেকে গম রফতানিতে বাধা দিয়েছিল রাশিয়া। পরে রাজি হলেও ওই এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। ভারতে মজুত গমের পরিমাণ কমছে বলে গম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হয়েছিল। কিন্তু বাজারে গমের দাম বাড়ছে। অক্টোবরের শেষের হিসেব বলছে, বাজারে গমের দাম এক মাসে দেড় টাকা বেড়েছে। আগামী দিনে আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। কারণ অকাল বৃষ্টির ফলে খরিফ মরসুমে গম চাষে ব্যাঘাত ঘটেছে। সরকারের চিন্তা বাড়িয়ে নভেম্বরেও অকাল বৃষ্টি হচ্ছে বলে খাদ্য মন্ত্রকে রিপোর্ট এসে পৌঁছেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন