বিজেপি নেতৃত্ব কঠোর অবস্থান নিলেও লালকৃষ্ণ আডবাণীর মতো বিক্ষুব্ধ প্রবীণরা এখনই রণে ভঙ্গ দিতে নারাজ। কিন্তু তাঁদের নিরস্ত্র করতে দলীয় নেতৃত্ব উদ্যোগী হতে শুরু করেছেন। টানাপড়েনের মধ্যেই আজ বিক্ষুব্ধ নেতা মুরলীমনোহর জোশীর সঙ্গে দেখা করেন অরুণ জেটলি।
দীপাবলির এক দিন আগে বিহারের হারের জন্য নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহকে দায়ী করেছিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশী, যশবন্ত সিন্হা, শান্তা কুমাররা। বিদ্রোহ সামাল দিতে তিন প্রাক্তন সভাপতি রাজনাথ সিংহ, বেঙ্কাইয়া নায়ডু ও নিতিন গডকড়ীকে আসরে নামায় বিজেপি। কিন্তু বিদ্রোহী নেতাদের একজন আজ ঘনিষ্ঠ মহলে জানান, এখনই তাঁরা রণে ভঙ্গ দিতে চান না। বরং উপযুক্ত সময়ের অপেক্ষা করে ফের সরব হবেন। সংসদের অধিবেশন কিংবা জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে ক্ষোভের প্রকাশ ঘটতে পারে।
বিক্ষুব্ধদের আর এক দফা বিদ্রোহের আঁচ বিজেপি নেতৃত্বের কাছে পৌঁছে গিয়েছে। সে কারণেই জেটলি আজ জোশীর বাড়িতে যান। যদিও দলের তরফে ব্যাখ্যা, মেয়ের বিয়ের নিমন্ত্রণ করতেই জোশীর বাড়িতে যান জেটলি। তবে বিষয়টিকে এত সহজ বলে ভাবছেন না কেউই। বিশেষ করে এই পরিস্থিতিতে জোশীর কাছে জেটলির পৌঁছে যাওয়াকে মোদী শিবিরের রণনীতির অংশ হিসেবেই দেখা হচ্ছে। সঙ্ঘের শীর্ষস্থানীয় নেতা ভাইয়াজি জোশীকে কাজে লাগিয়েও আডবাণীদের নিরস্ত করার ভাবনা শুরু হয়েছে। বিজেপির এক নেতার ব্যাখ্যা, ‘‘২০০৯-এ আডবাণীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তুলে ধরে লোকসভা নির্বাচনে গিয়েছিল দল। তখন কী বলা হয়েছিল, আডবাণীর জন্যই বিজেপি হেরেছে?’’ তাঁর যুক্তি, ‘‘অটল-আডবাণী জমানায় বিজেপিতে হারের সংখ্যাই বেশি। তখন কী সভাপতিরা ইস্তফা দিয়েছিলেন?’’ বিক্ষুব্ধদের বিরুদ্ধে কড়া মন্তব্য করে পাল্টা চাপ দেওয়ার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। নিতিন গডকড়ী প্রকাশ্যেই বলেছেন, বিক্ষুব্ধদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। সাংসদ ভরত সিংহ বিজেপি সাংসদদের নিয়ে আডবাণীর বাড়িতে ধর্না দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। দিল্লি ও বিহারে দলের হারকে সামনে রেখে অমিত শাহ যাতে ফের সভাপতি হতে না পারেন, সে জন্য আডবাণীরা সক্রিয়। অমিত শিবিরের আশঙ্কা, কর্মসমিতির বৈঠক হলে এই গোষ্ঠী সক্রিয় হবে। অমিতের দ্বিতীয় দফার মেয়াদ পেতে অসুবিধা হতে পারে।
তাই অমিত শিবিরের নেতারা ভাবছেন, সভাপতি নির্বাচন শেষ হওয়া না পর্যন্ত কর্মসমিতির বৈঠকের প্রয়োজন নেই। বিজেপি সূত্রের মতে, সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শেষ হলেই শুরু হবে সভাপতির নির্বাচন। তার আগে পঞ্চাশ শতাংশ রাজ্যের সাংগঠনিক নির্বাচনের কাজ শেষ হয়ে যাবে। জানুয়ারির প্রথম পর্বে সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলবে। তার পরেই কর্মসমিতি ও জাতীয় পরিষদের বৈঠক ডাকা হবে।
শত্রুঘ্ন সিন্হার মতো বিক্ষুব্ধরা আজও টুইট করে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বিজেপি নেতৃত্ব জানেন, এই ক্ষোভে মদত দিচ্ছেন আডবাণী-জোশীরা।