অমিত শাহ। ছবি: সংগৃহীত
কথা ছিল কেরলে বিজেপি কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে দিল্লিতে সিপিএম দফতর পর্যন্ত পদযাত্রা করবেন অমিত শাহ। কিন্তু সকাল থেকে অমিত শাহের ছেলের দুর্নীতির অভিযোগে রাজনীতি সরগরম। তাই সিপিএম দফতরের তিন কিলোমিটার দূরে যাত্রা শুরু করিয়েই বিদায় নিলেন বিজেপি সভাপতি।
গত কাল থেকেই বিজেপি করে প্রচার করেছে, দিল্লির কনট প্লেস থেকে সিপিএমের সদর দফতর পর্যন্ত পদযাত্রার নেতৃত্ব দেবেন স্বয়ং অমিত শাহ। সাধারণত বিজেপি দফতরের সামনে অন্য বিরোধী দলের এমন আগাম বিক্ষোভের কর্মসূচি থাকলে অশোক রোডের ত্রিসীমানায় ঘেঁষতে দেওয়া হয় না। কিন্তু সিপিএম দফতরের সামনে রাস্তা বন্ধ করে মঞ্চ তৈরির অনুমতিও দিয়েছিল মোদী সরকারের অধীনস্থ দিল্লি পুলিশ। কিন্তু সিপিএমের উদ্দেশে হুঙ্কার ছেড়ে বিদায় নিলেন বিজেপি সভাপতি।
অমিত সেখানে বলেন, মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের কেন্দ্রেই সব থেকে বেশি হত্যাকাণ্ড হচ্ছে। গুলিতেও প্রাণহানি এক রকম। কিন্তু কেরলে টুকরো টুকরো করে কেটে খুন করা হচ্ছে। বার্তা দেওয়া হচ্ছে, বিজেপি ও সঙ্ঘের সঙ্গে জড়ালে এমনই পরিণতি হবে। বাংলা, কেরল, ত্রিপুরা— যেখানেই কমিউনিস্টরা সরকার গড়েছে, সেখানে হিংসার রাজনীতি তৈরি করেছে। ‘মানবাধিকার চ্যাম্পিয়ন’রা অন্য হত্যায় মোমবাতি জ্বালান, কিন্তু বিজেপির কর্মী খুন হলে তাঁরা নীরব থাকেন। অমিতের হুঁশিয়ারি, ‘‘জনতার এমন আক্রোশ তৈরি করা হবে, তার চাপেই সিপিএম দফতরের বাইরে যেতে পারবে না!’’
এর আগেও কেরলে যাত্রাকে তুঙ্গে নিয়ে গিয়ে তৃতীয় দিনে অমিত আর সেখানে যাননি। দিল্লি ফিরে প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। তা নিয়ে হতাশ কেরলের নেতাদের। আজও সিপিএম দফতরে না যাওয়ায় দলের অনেকে হতাশ। কারণ, বিজেপির দিল্লির নেতাদেরই সিপিএম দফতরের সামনে বিক্ষোভ মঞ্চ গরম রাখতে হয়। যদিও দলের কিছু নেতার বক্তব্য, নিরাপত্তার কারণেই সিপিএম দফতরের সামনে আসেননি সভাপতি। আবার কেউ যুক্তি দিচ্ছেন, অন্য বৈঠক ছিল তাঁর।
কিন্তু অমিত না যাওয়ার পর তাঁর পরিবারের দুর্নীতি নিয়ে কেরল থেকেই আজ বেশি তোপ দাগেন সীতারাম ইয়েচুরিরা। সীতারাম বলেন, ‘‘অমিত শাহের পদযাত্রা আসলে আয়োজনই করা হয়েছিল তাঁর পরিবারের লুঠ থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে। সরকারি প্রভাব খাটিয়ে উচ্চপদে দুর্নীতির তদন্ত হওয়া উচিত।’’ ইয়েচুরির প্রশ্ন— প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতি-রোধের র্যাডারে কেন এটি ধরা পড়ল না? এর আগে বিড়লা-সহরা ডায়েরি, ব্যপম, পানামা, ললিত মোদীর দুর্নীতি প্রশ্নেও মোদী কেন চুপ? সিপিএমও আগমিকাল বিজেপি দফতরে বিক্ষোভ দেখানোর পাল্টা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।