বিজেপির প্রায় ১০০ জন বিধায়ক চান রাজনাথকেই

উত্তরপ্রদেশে বিরাট জয় হয়েছে ঠিকই। কিন্তু রাজ্যে অনভিজ্ঞ নবীন কোনও নেতাকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মানতে নারাজ বিজেপির বহু বিধায়ক। বিজেপির প্রায় ১০০ জন বিধায়ক তাই উত্তরপ্রদেশে রাজনাথ সিংহকেই মুখ্যমন্ত্রী করার আবেদন রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে।

Advertisement

জয়ন্ত ঘোষাল

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৭ ০৩:২৬
Share:

উত্তরপ্রদেশে বিরাট জয় হয়েছে ঠিকই। কিন্তু রাজ্যে অনভিজ্ঞ নবীন কোনও নেতাকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মানতে নারাজ বিজেপির বহু বিধায়ক।

Advertisement

বিজেপির প্রায় ১০০ জন বিধায়ক তাই উত্তরপ্রদেশে রাজনাথ সিংহকেই মুখ্যমন্ত্রী করার আবেদন রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে। এই বিধায়করা আরএসএসের শীর্ষ নেতৃত্বকেও জানাচ্ছেন, উত্তরপ্রদেশের মতো এত বড় রাজ্যে ছেলেমানুষি পরীক্ষানিরীক্ষার অবকাশ নেই। দু’বছর পরই লোকসভা নির্বাচন। তাতে সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টির আসন সমঝোতা যে হবেই না— তা কে বলতে পারে! মায়াবতীকে রাজ্যসভায় ফিরে আসতে হলে বিএসপির একার শক্তিতে হবে না। জল্পনা, অখিলেশ যাদব না কি মায়াবতীকে রাজ্যসভায় জেতাতে সপা-র সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন।

উত্তরপ্রদেশে বিরোধী রাজনীতির হাওয়া যে ভাবে ঘুরছে, তাতে লখনউ তখ্‌তে পোড়খাওয়া প্রবীণ রাজনীতিক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকেই বসানো উচিত বলে মনে করছেন এই বিধায়করা। সম্প্রতি রাজ্য বিজেপির সভাপতি ওবিসি নেতা কেশবপ্রসাদ মৌর্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পরেই মুখ্যমন্ত্রী পদে তাঁর বসার সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে যায়। তার পরেই শতাধিক বিধায়ক একজোট হয়ে রাজনাথের জন্য তদ্বির করতে শুরু করেন। মৌর্যর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক অনভিজ্ঞতা, দাদাগিরি-র অভিযোগও তুলেছেন অনেকে। মৌর্য উত্তরপ্রদেশের ফুলপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ। দলের অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, উত্তরপ্রদেশে পূর্বাঞ্চল, বুন্দেলখণ্ড এলাকার মধ্যে ভারসাম্য জরুরি। মুখ্যমন্ত্রী পদে আরও কয়েকটি নাম নিয়েও আলোচনা চলছে। আর এ সব নিয়ে চলছে বিতর্কও। যেমন, জাতিগত সমীকরণে মনোজ সিন্হা, শ্রীকান্ত শর্মাকে কেন সুযোগ দেওয়া হবে না— তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন বিধায়কেরা।

Advertisement

আরও পড়ুন: উপ-মুখ্যমন্ত্রীর পদ জুটল না সিধুর কপালে

বিজেপি সূত্র বলছে, মুখ্যমন্ত্রী ঠিক করা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছে করেই সময় নিতে চাইছেন। তবে আরএসএস রাজনাথ সম্পর্কে ইতিবাচক হলেও এখন মোদীর যা দাপট তাতে যাকেই মুখ্যমন্ত্রী করা হোক, সঙ্ঘের ক্ষোভ দেখানোর মতো পরিস্থিতি নেই। রাজনাথকে উত্তরপ্রদেশে পাঠানোর বিপক্ষে যুক্তি দিয়ে কেউ কেউ বলছেন, এই ঠাকুর নেতা ভবিষ্যতে যদি মোদীর চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠেন? রাজনাথের জনভিত্তিও রয়েছে। কিন্তু অনেকেরই পাল্টা যুক্তি, রাজনাথ কেন্দ্রে নম্বর-টু থেকেও মোদীর চ্যালেঞ্জ হতে পারেননি।

তবে হরিয়ানা মহারাষ্ট্রের পরীক্ষার কুফলটাও দেরিতে হলেও মোদী কিছুটা উপলব্ধি করছেন। তাই নবীন কোনও নেতাকে এমন সংবেদনশীল রাজ্যের দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে তিনিও ভাবছেন। রাজনাথ গেলে স্বরাষ্ট্র, বিদেশ, প্রতিরক্ষা, অর্থ, চার মন্ত্রক অর্থাৎ ‘বিগ ফোর’-এর রদবদল নিয়েও মোদীকে ভাবতে হবে।

এই পরিস্থিতিতে গুলাম নবি আজাদের কটাক্ষ, ‘‘যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই, সেখানে তাড়াহুড়ো করে সরকার গড়ছে বিজেপি। আর যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে, সেখানে সমস্যায়. মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করা যাচ্ছে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন