অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র।
তিন তরুণ নেতার সমর্থন নিয়ে রাহুল গাঁধী যে ভাবে গুজরাত দাপাচ্ছেন, তাতে রক্তচাপ বাড়ছে বিজেপির। পরিস্থিতি সামলাতে অমিত শাহ নিজে সেখানে ঘাঁটি গড়ে বসে আছেন। ভোট পিছনোর সুযোগ নিয়ে আরও অজস্র ঘোষণা করে চলেছেন নরেন্দ্র মোদী। আর বিতর্কের মোড় ঘোরাতে মেরুকরণের রাজনীতিতে নেমেছে বিজেপি।
হার্দিক পটেল, অল্পেশ ঠাকোর, জিগনেশ মেবানিদের সমর্থন নিয়ে ভোটের আগে রাহুলের দাপটও বাড়ছে গুজরাতে। এত দিন যে গুজরাতে মোদী-শাহের বিরুদ্ধে কোনও আওয়াজ উঠত না, এখন তা উঠছে। হার্দিকের সঙ্গে রাহুলের বৈঠকের হদিস পেতে গুজরাত পুলিশ এবং গোয়েন্দা হোটেলে তল্লাশি চালিয়েছে বলে অভিযোগ কংগ্রেসের। এমন পরিস্থিতিতে গুজরাতে ক্ষমতা ধরে রাখতে নতুন অঙ্ক কষতে হচ্ছে মোদী-শাহকে। যে কারণে নিজের রাজ্য থেকে আপাতত নড়ছেন না অমিত।
নয়া কৌশল বলতে কংগ্রেসকে ঠেকাতে বিজেপি সাম্প্রদায়িকতায় আশ্রয় নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী নিতিন পটেল এ দিন বলেন, ‘‘কংগ্রেস ভোটে জেতার জন্য যে কাউকে আমন্ত্রণ জানাতে পারে, এমনকী হাফিজ সইদকেও!’’ এর আগেও এ ভাবে মেরুকরণের রাজনীতি করেছে বিজেপি। কিন্তু এতে যে চিঁড়ে ভিজবে না, তা বুঝে আজ আরও একগুচ্ছ নতুন ঘোষণা করেছে গুজরাতের বিজেপি সরকার। সেচের জন্য কৃষকদের ১৮ শতাংশ জিএসটি আজ মাফ করার কথা ঘোষণা করেছে তারা। দিল্লিতে মোদী মন্ত্রিসভা যা ঘোষণা করছে, সেগুলিও অনেকটা গুজরাতের ভোটের দিকে তাকিয়েই।
বিজেপির এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় আজ এগিয়ে এসেছেন রাহুলকে সমর্থন করা তরুণ নেতারা। অল্পেশ ঠাকোর বলেন, ‘‘ভোটের আগে এ ভাবে বিচ্ছিন্ন মাপের রাজনীতি করে কোনও লাভ হবে না। গুজরাতের জনতা বিজেপিকে হারাতে মনস্থির করে ফেলেছে।’’ হার্দিক বলেন, ‘‘হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ বের করে দেখানো হচ্ছে, আমার সঙ্গে রাহুল গাঁধীর বৈঠক হচ্ছে কি না! আমার সঙ্গে কোনও বৈঠক তো হয়নি। যখন হবে, গোটা দুনিয়াকে জানিয়ে বলব। কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজ রাজ্য সরকার কোথা থেকে পেল? আর বিজেপি যদি রাজ্যে দেড়শো আসন জেতার ব্যাপারে এতই আত্মবিশ্বাসী হয়, তা হলে কেন ভোট পিছিয়ে দিচ্ছে?’’
এরই মধ্যে রাজধানীতে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে, আগামিকালই নির্বাচন কমিশন গুজরাতের ভোটের দিন ঘোষণা করে দিতে পারে। বিজেপির মতে, ভোট যখনই হোক, রাহুল গাঁধীর দল কোনও ভাবেই রাজ্যে ক্ষমতা দখল করতে পারবে না। কংগ্রেসের এক নেতার মতে, কে ক্ষমতা দখল করবে, তা সময় বলবে। তবে রাহুল যেভাবে মোদী-শাহকে দৌড় করাচ্ছেন, সেটিই কংগ্রেসকে চাঙ্গা করেছে।