টানা ২৫ বছরের বাম জমানার অবসান ঘটিয়ে ত্রিপুরায় গেরুয়া ঝান্ডা ওড়ানোর অন্যতম প্রধান কারিগর সুনীল দেওধরকে এ বার অন্ধ্রপ্রদেশ পাঠাচ্ছে বিজেপি। তাঁকে দলের জাতীয় সম্পাদক পদে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশিই অন্ধ্রের সহ-পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। খাতায়-কলমে দেওধরের সঙ্গে ত্রিপুরার সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে না ঠিকই। কিন্তু লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি নেতৃত্বের এমন সিদ্ধান্তের ফলে দলীয় সমীকরণে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের পাল্লাই ভারী হল।
বিপ্লব এবং সুনীলের জুটিই ত্রিপুরায় বিজেপিকে সাফল্য এনে দিয়েছিল। তার মধ্যে প্রায় শূন্য থেকে বিজেপির সংগঠনকে সাজানোর কৃতিত্ব ছিল কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দেওধরেরই। কিন্তু সরকার গড়ে বিপ্লব মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে তাঁর সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছিল পর্যবেক্ষকের। মুখ্যমন্ত্রীর আচার-আচরণে কয়েক বার দলীয় মহলে উষ্মাও প্রকাশ করেছেন দেওধর। শেষ পর্যন্ত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁকে অন্ধ্রের সহ-পর্যবেক্ষক করে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দক্ষিণী ওই রাজ্যের পর্যবেক্ষক করা হয়েছে সাংসদ ভি মুরলীধরনকে। নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পরে দেওধর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী হয়ে গেলেও বিপ্লব এখনও ত্রিপুরা বিজেপির রাজ্য সভাপতি। দলের একাংশের বক্তব্য, দেওধরের ছায়া সরে যাওয়ার পরে বিপ্লব এখন একা হাতে সরকার ও দল চালাতে পারবেন নিজের মতো করে। দেওধর নিজে যদিও ঘনিষ্ঠ মহলে ইঙ্গিত দিচ্ছেন, রাজ্য সভাপতি পদের জন্যও শীঘ্রই নতুন ঘোষণা হবে। আবার দলের অন্য একাংশের দাবি, সম্প্রতি ইম্ফলে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিকে নিয়ে বৈঠকে শাহ বুঝিয়ে দিয়ে গিয়েছেন, লোকসভা ভোটের আগে আর রাজ্য সভাপতি পরিবর্তন হবে না।
ত্রিপুরার সাফল্যের পরে বিজেপির অন্দরে জল্পনা ছিল, দেওধরকে এ বার বাংলায় পাঠানো হবে। কিন্তু তিনি যাচ্ছেন অন্ধ্র! দেওধর মঙ্গলবার বলেন, ‘‘দলীয় নেতৃত্ব যেমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তেমন দায়িত্ব পালন করতে হবে। এখন ত্রিপুরার চেয়ে অন্ধ্রেই বেশি সময় দেব। ত্রিপুরায় মাত্র দু’টো লোকসভা আসন, অন্ধ্রে অনেক বেশি। ওখানে আবার লোকসভার সঙ্গেই বিধানসভা নির্বাচন।’’ প্রসঙ্গত, উত্তর-পূর্বের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধবের নিজের রাজ্য অন্ধ্র। সেখানে ২৫টি লোকসভা ও ১৭৫টি বিধানসভা আসনে একত্রে ভোট হবে।