বিহারে রোজগারই তাস অমিতের

বিহারকে যাতে পিছিয়ে থাকা রাজ্যের ‘মর্যাদা’ দেওয়া হয়, দীর্ঘদিন ধরে তার জন্যই লড়ে গিয়েছেন নীতীশ কুমার। তাঁর জোটসঙ্গী লালুপ্রসাদ এখনও জাতপাতেই। প্রশ্ন তুলছেন, দেশের গরিবরা কোন জাতির, জানাচ্ছে না কেন বিজেপি? ভোটের মুখে সেই রাজ্যকেই এ বার রোজগার বাড়িয়ে এগিয়ে চলার স্বপ্ন দেখাতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী অমিত শাহরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি ও পটনা শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৫ ০৩:৩৭
Share:

বিহারকে যাতে পিছিয়ে থাকা রাজ্যের ‘মর্যাদা’ দেওয়া হয়, দীর্ঘদিন ধরে তার জন্যই লড়ে গিয়েছেন নীতীশ কুমার। তাঁর জোটসঙ্গী লালুপ্রসাদ এখনও জাতপাতেই। প্রশ্ন তুলছেন, দেশের গরিবরা কোন জাতির, জানাচ্ছে না কেন বিজেপি? ভোটের মুখে সেই রাজ্যকেই এ বার রোজগার বাড়িয়ে এগিয়ে চলার স্বপ্ন দেখাতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী অমিত শাহরা।

Advertisement

২০১৩-র ২৩ অক্টোবর পটনার গাঁধী ময়দানে ‘হুঙ্কার সভা’ করে দেশে পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিলেন মোদী। সেখানে দাঁড়িয়েই কাল বিহারে ‘পরিবর্তন যাত্রা’র সূচনা ঘটাবেন বিজেপি সভাপতি অমিত। সদ্যই বিধান পরিষদের ভোটে ভাল ফল করার পরে এই সভাকে ঘিরে রীতিমতো অশ্বমেধ যজ্ঞের মেজাজ এখন উজ্জীবিত বিজেপি শিবিরে।

বিজেপির এই ‘পরিবর্তন যাত্রা’র মূল সুরটি প্রধানমন্ত্রী মোদীই আজ বেঁধে দিয়েছেন দিল্লি থেকে। বার্তাটি অবশ্য গোটা দেশের জন্যই। কাজে দক্ষতা বাড়লে তবেই খুলবে রোজগারের পথ— এই যুক্তিকে সামনে রেখে আজ দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে ‘দক্ষ ভারত’ প্রকল্পের সূচনা ঘটিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। লক্ষ্য আগামী ৭ বছরে ৪০ কোটি যুবককে হাতের কাজে দক্ষ করে তোলা। মোদীর কথায়, ‘‘বড়লোকের ছেলেমেয়েদের কোনও সমস্যা হয় না। তাঁদের কিছু না কিছু ব্যবস্থা হয়েই যায়। সমস্যায় পড়ে গরিব ঘরের ছেলেমেয়েরা। তাঁদের কথাই ভাবছে সরকার।’’ বিজেপি নেতৃত্ব এখন বিহারে প্রধানমন্ত্রীর এই বার্তাই পৌঁছে দিতে চাইছেন।

Advertisement

গাঁধী ময়দানের সভায় অমিতও কাল কাজের দক্ষতা বাড়ানো ও ব্যবসায় ঋণের মাধ্যমে রোজগার বাড়ানোর উপরেই জোর দেবেন। তাঁর পাশে থাকবেন বিজেপির হাফ ডজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।

বিহার বিজেপির পর্যবেক্ষক তথা দলের সাধারণ সম্পাদক ভূপেন্দ্র যাদব পটনায় জানান, কাল থেকে ১৬০টি ‘রথে’ চড়ে রাজ্যের ৩৮টি জেলায় দিনরাত প্রচার শুরু করবেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। তাতে লালুর জঙ্গলরাজ স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি, বিজেপির সঙ্গ ছাড়ার পরে নীতীশ-জমানার ‘অচলাবস্থা’ও তুলে ধরা হবে। ভূপেন্দ্র বলেন, ‘‘বিহারে প্রায় ৮০ লক্ষ সদস্য হয়েছেন। তাঁরা সকলেই পরিবর্তন যাত্রায় যোগ দেবেন।’’

তবে শুধু নেতিবাচক প্রচার নয়, মোদী সরকারের সাফল্য তুলে ধরে ইতিবাচক রাজনীতিতেই বেশি জোর দিতে চাইছে বিজেপি। এখনও কাউকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ করছে না দল। বিহার নির্বাচনে মোদীই বিজেপির মুখ। আর তাঁর প্রকল্পগুলি সামনে রেখেই লালু-নীতীশের ভোটব্যাঙ্ক ছিনিয়ে নিতে চাইছে বিজেপি। এ মাসের ২৫ তারিখ মোদী সভা করবেন মুজফ্ফরপুরে। পটনায় বিজেপি নেতারা জানাচ্ছেন, মোদীর ওই সভা ঘিরে যথেষ্ট উৎসাহ রয়েছে মানুষের। তার আগে আগামী কালের সভাতেই দশ লাখ মানুষ আসবেন, আশা করছে বিজেপি।

বিজেপির পরিবর্তন যাত্রা শেষ হলে এনডিএ-র তরফে শুরু হবে সম্পর্ক যাত্রা। ২৪৩টি বিধানসভা কেন্দ্রে একটি করে বড় সভা করবেন কেন্দ্রীয় স্তরের নেতারা। এর মধ্যেই মাঠে নামছেন লালুও। মুজফ্‌ফরপুরে মোদীর সভার পর দিনই অর্থাৎ ২৬ জুলাই পটনায় বাবাসাহেব অম্বেডকরের মূর্তির নীচে, এক দিনের অনশন-অবস্থান করবেন তিনি। পরের দিন বিহার বন্‌ধের ডাকও দিয়েছেন লালু। আজ তিনি বলেন, ‘‘গ্রামে থাকা ৭৫ শতাংশ মানুষের আয় পাঁচ হাজার টাকার কম। কেন্দ্রকে বলতে হবে, এই গরিব মানুষরা কোন জাতির। চক্রান্ত করে বিজেপি এই তথ্য চেপে যাচ্ছে।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন