পাশ না হলেও নাগরিকত্ব বিল অস্ত্র বিজেপির

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে আপত্তি রয়েছে দলের মধ্যেই। গতকালই বিজেপি শাসিত মণিপুর ও অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রীরা দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের কাছে তাঁদের আপত্তি জানিয়ে যান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:১৭
Share:

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে আপত্তি রয়েছে দলের মধ্যেই। গতকালই বিজেপি শাসিত মণিপুর ও অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রীরা দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের কাছে তাঁদের আপত্তি জানিয়ে যান। তারপরেও আজ বিলটি পাশ করানোর জন্য রাজ্যসভার কার্যসূচিতে রেখেছিল মোদী সরকার। যদিও দফায় দফায় রাজ্যসভা মুলতুবি হয়ে যাওয়ায় বিলটি শেষ পর্যন্ত পেশ করা যায়নি।

Advertisement

দেশভাগের পরে যাঁরা পড়শি দেশে তাদের ধর্মবিশ্বাসের কারণে অত্যাচারিত হয়ে এ দেশে চলে আসতে বাধ্য হন, তাঁদের কথা মাথায় রেখে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি এনেছিল মোদী সরকার।

কিন্তু ‘বিদেশ’ থেকে আসা মানুষের কারণে উত্তর-পূর্বের মানুষের সংস্কৃতি, ভাষা সঙ্কটে পড়বে, এই আশঙ্কায় বিলটির প্রতিবাদে সরব অসম-সহ উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন রাজ্যের ভূমিপুত্ররা। তবে বিজেপি নেতৃত্ব শুরু থেকেই এ ব্যাপারে সক্রিয়। ইতিমধ্যেই লোকসভায় বিলটি পাশ করানো হয়েছে। আজ রাজ্যসভায় বিলটি পেশ করার কথা ছিল। সূত্রের খবর, আগামী কাল রাজ্যসভার কার্যসূচিতে ফের বিলটি আনার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

Advertisement

শুরু থেকেই বিলটির বিরোধিতা করে আসা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আজ জানিয়েছেন, ‘‘তৃণমূল শুরু থেকেই ওই বিলের বিপক্ষে।’’ দু’দিন আগে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদ জানিয়ে

ভূপেন হাজারিকার ভারতরত্ন সম্মান ফেরাতে চান তাঁর ছেলে তেজ হাজারিকা। আজ সেই সূত্র ধরে মমতা বলেন, ‘‘পরিবারের মনোভাবকে আমি সম্মান করি। মোদী সরকারেরও উচিত উত্তর-পূর্বের মানুষের ভাবাবেগকে সম্মান করা।’’ যদিও সরকারের পক্ষ থেকে পাল্টা যুক্তিতে বলা হয়েছে, বিলটি যখন যৌথ কমিটিতে যায় তখনই এ নিয়ে আলোচনার জন্য রাজ্যসভায় সময় নির্দিষ্ট

হয়ে গিয়েছিল।

প্রশ্ন হল, বিভিন্ন স্তরে এ নিয়ে বিরোধিতা সত্ত্বেও কেন বিলটি পাশ করাতে ‘মরিয়া’ সরকার। বিজেপির একাংশের মতে, আগামী কাল বিলটি তালিকাভুক্ত হলেও, বিরোধী শিবিরের বিরোধিতায় সেটি পাশ হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই।

কিন্তু বিজেপি সরকার যে বিলটি পাশ করাতে ‘আন্তরিক’, লোকসভা নির্বাচনের আগে সেই বার্তা দেওয়া সম্ভব হবে। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘ওই বিলের কারণে ইতিমধ্যেই উত্তর-পূর্বে যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গিয়েছে। এখন বিলটি পাশ করানোর জন্য সরকার যে আন্তরিক, সেই বার্তা দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে অন্তত ভাল ফল করাই লক্ষ্য বিজেপির।’’

শেষ পর্যন্ত বিলটি যদি পাশ

না হয়, তা হলে বিরোধী শিবিরের উদ্দেশে আঙুল তুলতে পারবে বিজেপি। ভোটের প্রচারে বলতে পারবে, কংগ্রেস-তৃণমূলের বিরোধিতার জন্যই সরকার বিলটি পাশ করাতে ব্যর্থ হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন