ব্রিজ কোর্স পড়ে অ্যালোপ্যাথি! আপত্তি কমিটির

জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন বিলে বলা হয়েছিল, ব্রিজ বা মধ্যবর্তী পাঠ্যক্রম পড়ে অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ দিতে পারবেন হোমিওপ্যাথি বা আর্য়ুবেদ চিকিৎসকেরা। বিলের সেই ধারার কড়া সমালোচনা করে সরকারকে রিপোর্ট দিল সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৮ ০৪:৫৭
Share:

জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন বিলে বলা হয়েছিল, ব্রিজ বা মধ্যবর্তী পাঠ্যক্রম পড়ে অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ দিতে পারবেন হোমিওপ্যাথি বা আর্য়ুবেদ চিকিৎসকেরা। বিলের সেই ধারার কড়া সমালোচনা করে সরকারকে রিপোর্ট দিল সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। তাদের সুপারিশ, ওই ধারা যেন বাধ্যতামূলক করা না হয়।

Advertisement

মেডিক্যাল শিক্ষায় স্বচ্ছতা আনতে গত ডিসেম্বরে বিলটি সংসদে পেশ করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জে পি নড্ডা। বিলটি যায় স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে। সংসদে বুধবার কমিটির রিপোর্ট পেশ করা হয়। ওই ধারাটির সমালোচনা করে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব সুজাতা রাও বলেছেন, ‘‘এর ফলে ভারতীয় চিকিৎসকদের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হবে।’’ আর চিকিৎসক দেবী শেঠির কথায়, ‘‘এতে বেআইনি ভাবে চিকিৎসা বেড়ে যাবে।’’

বিল পেশ হওয়ার পরই অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসকদের তরফে বলা হয়েছিল, পাঁচ বছরের পাঠ্যক্রম শেষ করে যা শেখা যায়, ব্রিজ কোর্স করে কেউ তা কোনও দিনই শিখতে পারেন না। এতে হাতুড়ে চিকিৎসকেরই সংখ্যা বাড়বে। সেই উদ্বেগই ফুটে উঠেছে সংসদীয় কমিটির রিপোর্টে। যদিও সরকারের যুক্তি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী ১ জন চিকিৎসক পিছু হাজার ব্যক্তির পরিবর্তে ১৬৫৫ জন রয়েছেন। উপরন্তু শহরের চিকিৎসকেরা গ্রামে যেতে রাজি না হওয়ায় গ্রাম ও শহরের চিকিৎসকের অনুপাত ৩.৮:১। ছবিটি বদলাতে দেশের প্রায় ৭.৭১ লক্ষ আয়ুষ চিকিৎসককে ব্রিজ কোর্সের আওতায় আনার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। যাতে নতুন করে বাঁচিয়ে তোলা দেড় লক্ষ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে তাঁদের নিয়োগ করা যায়।

Advertisement

স্থায়ী কমিটিও মেনে নিচ্ছে যে, চিকিৎসা ক্ষেত্রে দক্ষ মানবসম্পদ প্রয়োজন। কিন্তু স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে প্রতিটি রাজ্যের নিজস্ব সমস্যা রয়েছে। তাই রাজ্যগুলি যদি আয়ুষ কর্মী, নার্সিং কর্মী, বি ফার্ম পাশ ব্যক্তিদের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলে উন্নত পরিষেবা দিতে চায়, তাহলে দক্ষতা বাড়াতে এ ধরনের পদক্ষেপ করা যেতে পারে বলে কমিটির মত। সেক্ষেত্রে ব্রিজ পাঠ্যক্রম পাশ চিকিৎসকদের জন্য আলাদা রেজিস্টার এবং তাদের চিকিৎসার ও ওষুধ দেওয়ার গণ্ডি নির্দিষ্ট করে দিতে হবে। ধারাতে সংশ্লিষ্ট পরিবর্তনের পরেই তা বিলে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে কমিটি।

বিলে মেডিক্যাল কলেজগুলির ৬০ শতাংশ আসনের ফি ঠিক করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে দেওয়ারও প্রতিবাদ জানিয়েছিল অধিকাংশ রাজ্যই। পশ্চিমবঙ্গের যুক্তি, এর ফলে যোগ্য পড়ুয়ারা জায়গা পাবেন না। সহমত কর্নাটক, মহারাষ্ট্রও। কমিটির রিপোর্টও বলছে, এই ধারার ফলে যোগ্যরা বঞ্চিত হবে। কম নম্বর পেয়েও শুধুমাত্র অর্থের জোরে ডাক্তারি পড়তে পারবেন ধনী পরিবারের সন্তানেরা। কেন্দ্র মেডিক্যাল পরীক্ষায় টাকার খেলা রুখতে ব্যর্থ হয়েছে বলেও কমিটি মনে করছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন